আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ তখনও শুরু হয়নি অস্ত্রোপচার। সবে প্রস্তুতি শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তার আগেই অপারেশন টেবিলে অঘটন। বাইপাস সার্জারি হওয়ার কথা ছিল উত্তর প্রদেশের সরস্বতী দেবীর। কিন্তু তা শুরুর আগেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট স্তব্ধ করে দিয়েছিল বছর পঞ্চাশের সরস্বতীদেবীর হৃদস্পন্দন। প্রায় ২০ মিনিট মনিটরে শুধুই সরলরেখা। কিন্তু এর পরেও চিকিৎসকদের চেষ্টায় বেঁচে ফিরে এলেন সোনভাদরা জেলার বাসিন্দা সরস্বতীদেবী। যেন একেবারে মৃত্যুর পর জীবন ফিরে পাওয়া।
ফর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা বলছেন, এ ঘটনা মিরাকল ছাড়া কিছুই নয়। বাইপাস সার্জারির জন্য সরস্বতী দেবী যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তখনই হার্টে ৯০ শতাংশ ব্লকেজ ছিল তাঁর। ডায়াবেটিসও ছিল। অস্ত্রোপচার শুরুর আগে অপারেশন টেবিলেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। রক্তচাপ শূন্যতে নেমে যায়। ফর্টিসের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর এস এন খন্না জানান, প্রায় ২০ মিনিট কোনও হৃদস্পন্দন ছিল না সরস্বতী দেবীর দেহে। অনেকটা সময় মনিটরে কোনও ওঠা-নামা দেখা যাচ্ছিল না। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু করা হয় কার্ডিয়াক মাসাজ এবং ব্লাড পাম্পিং। এ ভাবে ২০ মিনিট কাটানোর পর বাইপাস করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। আরও ১০ মিনিট পর শুরু হয় অস্ত্রোপচার।
তত ক্ষণে মনিটরে সামান্য ওঠানাম শুরু হয়েছে। এসএন খন্না জানান, মস্তিষ্কে মাত্র ৪ মিনিট অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ থাকলেই মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সরস্বতী দেবীর ক্ষেত্রে এই অবস্থা ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। কিন্তু এরপরেও কার্ডিও পালমোনারি বাইপাস সার্জারি হয়। চিকিৎ্সকদের অবাক করে সফলও হয় অস্ত্রোপচার। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকরা দেখেন সরস্বতী দেবীর মস্তিষ্কেও কোনওরকম সমস্যা হয়নি।
খন্নার মতে, এই ঘটনা বিরলের মধ্যেও বিরলতম। টিমের সমস্ত চিকিৎসকের প্রচেষ্টাতেই এমন অসম্ভব সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। মাস খানেক আগে হাসপাতাল থেকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে সরস্বতীদেবীকে। সুস্থ হয়ে সোনভদরায় ফিরে গিয়েছেন তিনি।