যুগ যুগ ধরে মানবতা নামক শব্দটি নিস্পেষিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এই মানবতা এবং মানবিকতা পৃথিবীতে রূপ লাভ করেছে একটি লোক দেখানো উপাখ্যানের চিত্রনাট্যে। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই সৃষ্টিকর্তা এই মানবতা ও মানবিকতাকে বাস্তবায়ন করার জন্য সকল ব্যবস্থাই করেছেন কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা এবং শয়তানের ইচ্ছার বহি:প্রকাশ আজও সেই সত্যের বাস্তবতাকে বাস্তবে রূপদান করতে পারেনি। হয়ত সেইজন্যই মানুষের প্রত্যাগমন করতে হবে হিসেব নিকেশের বিশাল বোঝা নিয়ে। সৃষ্টিকর্তা অধির আগ্রমে অপেক্ষা করছেন যেন, এই মানবতা জাগ্রত হয়, মানবিকতা বাস্তব রূপ লাভ করে এবং পৃথিবী হয়ে উঠে বেহেস্তের পূর্ব লক্ষণস্বরূপ দৃষ্টান্তের এক প্রস্ফুটিত বাগানরূপে। কিন্তু কি আমাদের সেই খায়েশ পূর্ণ হবে নাকি খোয়াবেই ভাসমান থাকবে? পৃথিবী এখন শেষ’র দ্বারপ্রান্তে যা পড়ন্ত বেলার সঙ্গেও তুলনাযোগ্য।
মানবতার জন্য হা হা কার পরে আছে বিশ্বময়। আমাদের দৃষ্টিসীমা বা মিডিয়ার কল্যাণে দৃশ্যমান মঞ্চায়নের শেষরেষটুকুতেও অনুপস্থিত এই মানবতা বা মানবিকতা। শুধুই পরিলক্ষিত হচ্ছে শক্তির মহড়া, অন্যায়ের যাঞ্জা, তোষামোদীর জয় জয়কার, সত্যের নিষ্পেষণ, অন্ধকারের আলোকময় জ্যোতি, মোটকথা শক্তের ভক্ত ও নরমের যম হয়ে আভির্ভাব এক লৌহ মুর্তি। আমাদের সমাজ সংসারেও তার ব্যতিক্রম নয়। সবই ঘটছে এবং ঘটবে স্বার্থের প্রয়োজনে কিন্তু মানবতা বা মানবিকতার বাস্তব প্রয়োজনে নয়। যদিও লোক দেখানো মায়া কান্নায় সাময়িক স্বস্তি মেলে কিন্তু পরক্ষণেই এর আসল রূপ উন্মোচিত হয় যা পরম্পরাই সেই রূড় অমানবিকতারই শামিল এক স্বার্থের দোলনচলে আটকা মরণ ফাঁদ মাত্র।
পৃথিবীর ইতিহাস তাই প্রমান করে; কিন্তু কিছু মানুষ ঐ স্বার্থের বেড়াজাল ভাংতে চেষ্টা করেছে এবং করেছিলেন কিন্তু ফলের কিছু হয়নি। দুর অতীতের কিছু ঘটনা তুলে ধরলে দেখা যাবে মানবতা/ মানবিকতা নামক বাতাসে ভাসমান শব্দমালা বা কথার কথাগুলোকে। যখন ইরাক যুদ্ধ চলছিল তখন কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছিল বিশ্ব বিবেক প্রসুত মানবতা/ মানবিকতা? ধর্মের মূল মন্ত্র মাজন/ পালন করা কি সম্ভব হয়েছিল? হায়রে বিবেক ও মানবিকতা…; শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিন, সুদান এর দারফুর, ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া আরো অনেক উদাহরণই আমাদের বিবেক ধংশন করে যন্ত্রনার আস্তাকুড়ে ফেলে কিন্তু কিই করার ছিল আমাদের। আর কিইবা করেছি আমরা। বরং আমারা ঐ নারকিয় নিশংসতা চালিয়ে নিজের আখের গুছিয়ে হয়েছি মহান, ধনীক এবং দানবীর ও শাসক আরো কতোকি। সদ্য শেষ হওয়া আফগানিস্তান যুদ্ধ থেকে কি শিক্ষা নেয়া যায় এবং পাকিস্তান ও কাশ্মির এর চলমান নৈরাজ্য কি আমাদেরকে বিবেকের আদালতে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাইনি। যদি করিয়ে থাকে তাহলে হয়ত নিজের শাস্তি নিজে কাঁধে নিয়ে বেড়াতে হবে আগামী প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত। সব বিচারকের বিচারেই মানবতা/ মানবিকতা এবং সত্য বিকশিত ও প্রকাশিত হয়নি। কারণ সবই হয় মানুষের স্বাধীনতা ভোগের চেতনা থেকে। তাই নিজের বিবেকের বিচারালয় হয় পবিত্র এবং সেখানে সেই স্বাধীনতার আমিত্ব নেই যার জন্য পরিচ্ছন্ন একটি দৃশ্যমান রায় পাওয়া যায়। যা হয়ত কখনো কখনো দেখা এবং উপলব্দি করা যায় আবার কখনো কখনো নিরবে নিভৃত্ত্বে ঘোমরে ঘোমরে কাদে।
এইতো ইতিহাসের চরম বিপর্যয়ে মুখে মায়ানমার। যা দৃশ্যমান তা খুবই ভয়ংকর এবং অবর্ননাত্মক। জীব হত্যা মহাপাপ অনুসরনকারী ঠান্ডা মাথার ঠান্ডা মেজাজী মানুষগুলোই কি না করে যাচ্ছে? আসলে এই রূঢ় বাস্তবতা পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই ছিল এবং আছে ও থাকবে। কারণ পৃথিবী থেকে নির্দোষভাবে কিয়ামত গঠানোর জন্যই এই অরাজকতার চরম বিপর্যয় এখন চলমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও ঠিক এমনটিই ছিল। কিন্তু সেদিনও মানবতা/ মানবিকতা দুরেই ছিল। আজও তা দুরেই রয়েছে। তবে স্বার্থের প্রয়োজনে কেউ কেউ লুফে নিয়েছে বিভিন্ন আবরণে। আর আবরণ নিয়ে নানাজনে নানা বক্তব্য এবং পাল্টা বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। এটাই নিয়ম। যাই হোক এই স্বার্থের জন্যে হলেও তো একটু আশ্রয়, একটু ঠায় এবং মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে রেহায় পাওয়া যাচ্ছে। যেমনটি পাওয়া গিয়েছিল আমাদের বাংলাদেশের ভুমিষ্ট হওয়ার প্রাক্কালে। ভুমিষ্ট হওয়ার যে যন্ত্রণা তা কিন্তু মা এবং দেশের মাটি ও মানুষ জেনেগেছে। কিন্তু মায়ানমার কি এখন নতুন কোন ফর্মুলা ভুমিষ্ট হওয়ার পথে নাকি কারো স্বার্থ হাছিলের পথে। যাই হউক শীকার কিন্তু এই মানুষ, জনপথ, রাড়ী ঘর ও সম্পদ। আর এই ধ্বংসযঙ্ঘ থেকে বের হয়ে আশার বা বাঁচার উপায়ও কিন্তু করতে হবে এই সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকেই। আর করতে হবে খোদার জ্ঞান ব্যবহার করে। শান্তির বানী এবং শান্তির দৃশ্যমান বাস্তবতা ও এর আলোকে শিক্ষার প্রয়োজনে ফিরে যেতে হবে ইঞ্জিল শরীফে। আর সেখানেই পাওয়া যাবে শান্তি স্থাপনের ফর্মূলা। হযরত ঈসা মসীহের আগমন এবং প্রস্থান। এর মধ্যেই নিহীত রয়েছে শান্তি। হিংসা, দলাদলি, বিদ্ধেশ, লোভ-লালসা, ঘৃণা মোট কথা সব নেতিবাচক এবং পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া ও ইতিবাচক এমনকি পুন্যের পথে চলার সব সহজলভ্য জ্ঞানভিত্তিক হাতিয়ার বা সরল রেখা। পড়ে দেখুন ইঞ্চিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এবং বের করুন খোদা তায়ালার অভিপ্রায়।
বাংলাদেশ সরকার এবং সরকার প্রধান দেখিয়েছেন শান্তির দৃষ্টান্ত এবং শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা। এই দেখানো রাস্তার সঙ্গে ইঞ্জিলের রাস্তা বা আল্লাহর দেখানো রাস্তার মিলবন্ধনও কিন্তু একই। আর এই আল্লাহর দেখানো শান্তির মিলবন্ধনের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় হবে আমাদের বিশ্ব বিবেকের চিন্তা, পরিকল্পনা ও কাজ এর সমন্বয় ঘটানো। আসুন আমরা চেষ্টা করি এবং খোদার সাহার্য্য কামনা করি।
মানবতার পথে দেখা যায় সততা এবং আন্তরিকতা। সততার দৃষ্টিতে এখন বাংলাদেশ এগিয়েছে। এশিয়ার দুর্নীতিতে ১ম হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের আশে-পাশের দেশগুলো সেই যোগ্যতাকে আকঁড়ে ধরে আরো দুর্নামের সাহিত এগিয়ে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশ দুর্নামের সক্ষমতা হারিয়ে সুনামের সক্ষমতা অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আশার কথা মানবতা / মানবিকতা বিকশিত হয়ে চেতনা ফিরে পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। উন্নয়নের সুচকে ৭ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। এটাও একটি স্বস্তিদায়ক অগ্রগতির জলন্ত প্রমান। জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থার প্রধান তার মৌখিক মন্তব্যে বাংলাদেশের মানুষে মানবতা/ মানবিকতা নিয়ে উচ্চসিত প্রশসংসা করেছেন। তিনি বলেছেন পৃথিবীর কোন দেশে এমন সৌহাদ্য ও মানবাতার বাস্তব ব্যবহার দেখেননি। তিনি মুগ্ধ এবং আপ্লুত।
বাংলাদেশ পারে এই বিকfশমান মানবতাকে বহিবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে এবং বাস্তব রূপ দেয়ার জলন্ত উদাহরণ হয়ে পাশে থেকে এগিয়ে নিতে। আশা করি আমাদের দেশের মানুষ এই ব্যাপারে আরো সচেতন হয়ে প্রতিটি বিষয়ে সুক্ষভাবে কাজ চালিয়ে যাবে। আশা, আকাঙ্খা, উদ্ধিপনা সবই প্রবাহমান ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে। মোট কথা আল্লাহর এই আয়াতে ভর করে “ তোমরা তোমাদের সমস্ত মন, সমস্ত, প্রাণ, সমন্ত অন্তর (দিল) দিয়ে তোমার মাবুদ আল্লাহ মহব্বত করবে। তার পরের দরকারী হুকুম হল তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে। এই দুইটি হুকুমের উপরই সমস্ত নবীদের কিতাব ভর করে আছে।”