ইদানিং সবকিছুই যেন অনুমান নির্ভরতায় চলেছে। কথা বলা থেকে শুরু করে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সিদ্ধান্তগুলো পর্যন্ত অনুমান নির্ভরতায় ছয়লাভ হয়ে গেছে। স্যোসাল মিডিয়া তার বস্তুনিষ্ঠ ও সত্যনির্ভরতা হারিয়ে এখন অনুমান নির্ভরতা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বলতে দিধা নেই নিউজ পড়লে কোন সময় অতি অনুমান নির্ভরতা আশা জাগায় আবার কোন কোন সময় নিরাশার জগতে হতাশায় হাবুডুবু খায়। কিযে করার বা বলার অথবা লিখার তা খুঁজে না পেয়ে অতি অনুমান নির্ভরতায় গ্যাঁ ভাসিয়েছে সমাজ, সংসার, রাজনীতি এবং বিশ্বনিতী।
প্রধান বিচারপতির ছুটি নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। সকলই অনুমান নির্ভর সংবাদ। কিন্তু বস্তু নিষ্ঠ সংবাদটি কি তা কিন্তু আমাদের এই অতি অনুমান নির্ভরতার জন্যই হারিয়ে যাচ্ছে সকল দৃষ্টির আড়ালে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও অনেক অনুমান নির্ভরতার প্রতিচ্ছবি জল ঘোলা করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। সকল দেশেরই স্বনাম ধন্য কোন ব্যক্তির অসুস্থতার খরব দেশবাসী বা জাতি জানতে পারে তার পরিবার বা রাজনৈতিক অথবা হাসপাতালের চিকিৎসকদের মাধ্যমে। কিন্তু আমরা হতভাগা জাতি একটি জায়গায় অক্ষম বা অপারগতার স্বীকার। সেটি হলো আমাদের দেশের সাবেক প্রধান মন্ত্রী এবং বর্তমান বি এন পির নেত্রী খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বা সুস্থতার খবরটি। তিনি কি করছেন, কেমন আছেন বা কেনই এই রহস্যাবৃত্ত জীবনে পা দিয়েছেন এর কোন বস্তুনিষ্ঠতাই এখনও অজানা। মিডিয়ার কল্যানে যা জানা গেছে তিনি কঠিন সময় পার করছেন তার ঔরষজাত সন্তান এর দু:শাসনে। অসুস্থতা জনিত কোন কারণে তিনি এখন আর অসুস্থ্য নন। তিনি অসুস্থ্য ক্ষমতা হারানোর অন্তদ্বন্ধে। তিনি বাকরুদ্ধ ছেলের এই অতি লোভী চক্রান্তের শিকারে। তিনি আরো অসুস্থ্য কোন চক্রান্তেই শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচুত্য না করার কারণে। সকল ষড়যন্ত্রই ভেস্তে যাওয়ার কারণে। তবে লন্ডন ষড়যন্ত্র একটি কঠিন ষড়যন্ত্র আর এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সরকারকে আরো সচেতন হতে হবে। তিনি এখনো দেশে ফিরার কোন পরিকল্পনা করেননি। শুতরাং ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে। একটি বিহিত ব্যবস্থা করেই ফিরবেন এবং নিশ্চিত ক্ষমতায় যাবেন এই আশা এখনও তিনি পোষণ করে ক্ষমতারোগে আক্রান্ত আছেন।
দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা এবং সাবেক স্বৈরশাসক হোসাইন মোঃ এরশাদ, সিটি মেয়র আনিছুল হক এমনকি সম্মানীত যে কোন ব্যক্তির শারিরীক অসুস্থতা এমনকি রাষ্ট্রিয় সফর সম্পর্কে জাতিকে জানানো হয় এবং হয়েছে। এইতো আমাদের প্রধান মন্ত্রীর গলব্লাডার অপারেশনের খবর জাতিকে জানানো এবং দোয়া চাওয়া হয়েছে। আরো অনেকেরই হয়েছে যা জাতি জানতে পেরেছে এবং দোয়াও করেছে। কিন্তু ম্যাডাম খালেদা জিয়ার কোন খবরই জানানো হয়নি এবং জানানোর প্রয়োজনীয়তাও নেই এমনকি জাতির কাছে দোয়া চাওয়ারও দরকার নেই। জাতিকে দোয়াশায় রেখে ঘৃন্য ষড়যন্ত্রের জাল বুনা শেষে ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে তিনি তার চক্রান্তের নৃশংস পরিনতির কথা জানাতে চান।
অনুমান নির্ভরতা আরেকটি জলন্ত প্রমান হলো নোবেল পুরস্কার এর ঘোষনা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঐ নোবেল পুরস্কার এর উর্দ্ধে কারন তিনি যা করেছেন এবং দেখিয়েছে তা এই সামান্য নোবেল স্বিকৃতি দিয়ে ছোট করা ছাড়া আর কি? আর নোবেল পুরস্কারটি এখন কলঙ্কিত। নোবেল পুরস্কারটি তার মুল লক্ষ্য ও উদ্যেশের স্বকিয়তার ভাবগাম্বির্য হারিয়েছে অনেক আগেই। তারপরও বলতে হয় শেখ হাসিনা মানবতার মা, মানবতার বাস্তবায়নকারী। শান্তির অগ্রদূত এবং প্রতিষ্ঠাকারী। এই নামরুপে নব সংস্করণে শান্তির পাতাকাবাহী শান্তিরাজ নোবেল এর নব সুচনা করা হউক। আর এটিই শুরুই হবে আমাদের বাংলাদেশ থেকে।
অনুমান নির্ভরতা থেকে যে খবর প্রধানমন্ত্রী এবং নোবেল কমিটিকে ঘিরে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছিল তার আধৌ কোন যোগসুত্র ছিল বলে মনে হয় না। আর এর থেকেই বলা যায় বস্তুনিষ্ঠতা এবং সত্যতা যাচাই বাছাই করার কোন প্রয়োজনীয়তা আজ আর সাংাদিক ও স্যোসাল মিডিয়ায় অনুপস্থিত এমনকি মনেও করে না। আসুন আমরা আমাদের পুরোনো মুলমন্ত্র ও ঐতিয্যকে ফিরিয়ে আনি এবং বস্তুনিষ্ঠতা ও সত্যতাই যাচাই বাছাই করে সকল কিছু করি। গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার কাজে এমনকি মানুষের মৌলিক অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার কাজে সহায়তা করি। সরকার পরিচালনায় সহায়তা করি। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির চর্চায় মনোনিবেশ করি। অনুমান নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসি। এই হউক আমাদের আগামীর অঙ্গিকার।