রাইসলাম॥ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে বার্মা সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চল তমরুতে ১০হাজার শরণার্থীদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেটজাতকরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
গত ০১/১০/২০১৭ইং তারিখ রোজ রবিবার সকাল ১০টায় ঢাকার মতিঝিলে মোহামেডান ক্লাব প্রাঙ্গনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী। এ সময় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজু, যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, সহ সভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপন, এনামুল হক আরমান, মোরসালিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সরোয়ার বাবু, মাসুদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ প্রমুখ।
এ সময় যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অসামান্য কূটনৈতিক সাফল্যের কারণে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আর্ন্তজাতিক রাষ্ট্রসমুহ ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্র। এবার সংকট তৈরির পর এর স্থায়ী সমাধানে বিশ্বব্যাপী বাস্তবমুখী ভূমিকা নিয়েছেন তিনি নিজেই। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাই রোহিঙ্গা ইস্যুতে কুটনৈতিক বিজয় আনলেন।
যিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি করতে পারেন, যিনি ছিটমহল সমস্যার সমাধান করতে পারেন, যিনি সহিংসতা ছাড়াই সমুদ্র সীমানা সমস্যার সমাধান করে নিজেদের সীমানা বৃদ্ধি করতে পারেন, যিনি বাংলাদেশের মানচিত্র সম্প্রসারিত করতে পারেন। জলে-স্থলে আগে ছিল ৫৬ হাজার বর্গমাইল এখন প্রায় ২ লক্ষ ৩৭ হাজার বর্গমাইল। যিনি বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানাকে দ্বিগুন করতে পারেন কেবলমাত্র রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দ্বারাই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান সম্ভব। আমরা তাই বিশ্ব মানবতার নেত্রী, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সরকার শান্তিপূর্ণ কুটনীতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করবেন। এটাই ডটার হিউম্যানিটি শেখ হাসিনার শিক্ষা।
তিনি আরো বলেন, সরকারের কঠোর জঙ্গীবাদবিরোধী অবস্থানের ফলে তাদের তৎপরতা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। আজ পবিত্র আশুরা। ত্যাগের মহিমা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার দিন আজ। গভীর শোকের দিন আজ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে চক্রান্তকারী ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে কারবালা প্রান্তরে মর্মান্তিকভাবে শাহাদাত বরণ করেন। একদিকে শোক, অন্যদিকে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অনড় অবস্থানের প্রতি এই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে অমর হয়ে আছে। ইসলামের ইতিহাসে মহররমের ১০ তারিখ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথীসহ হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) এর শাহাদাত বরণের মর্মান্তিক ঘটনার আগেও এই তারিখে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। আদি মানব হযরত আদম (আ.) এই দিনে পৃথিবীতে আগমন এবং তাঁর তওবা কবুল হয়। এইদিনে হযরত নুহ (আ.) এর নৌকা মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা পায়। দু’বছর আগে উগ্রপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠির সদস্যরা বিএনপি-জামাতের নির্দেশে ঢাকায় আশুরার আগের রাতে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে হামলা চালিয়ে বেশ কজনকে হত্যা করে। বগুড়া জেলায় এক শিয়া মসজিদে নামাজরত একজন মুসল্লীকে হত্যা করে। আজকের দিনে স্বস্তির বিষয় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সরকারের কঠোর অবস্থান ও জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ফলে তাদের তৎপরতা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। আশুরার মূল চেতনা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রাম। এটাই মহররমের শিক্ষা। কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হয়, ত্যাগ চাই-মার্সিয়া ক্রন্দন চাই না।
আজ সারা বিশ্বে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা বিশ্বে ইতিহাস হয়ে থাকবে। আজকে বিশ্বনেতারা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি ডটার অব পিস’ নামে ভূষিত করেছে। অপরদিকে সংযুক্ত আরব-আমিরাতের (ইউএই) বহুল প্রচারিত ইংরেজী দৈনিক ‘খালিজ টাইমস’ রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি মানবিক অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উচ্ছসিত প্রশংসা করে তাকে ‘প্রাচ্যের নতুন তারকা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু নিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক বুদ্ধিজীবীরা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, তার পক্ষে এতবড় সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করা সম্ভব নয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা পদ্মাসেতুকে দৃশ্যমান করে দেখিয়ে দিয়েছেন আমরাও পারি। তিনি বলেন, দৃশ্যমান-স্বপ্নের সেতু-স্বপ্ন হল বাস্তবতা-স্বপ্ন পূরণের দিন ৩০ সেপ্টেম্বর। স্বপ্ন নয়-বাস্তবের পদ্মাসেতু। স্বপ্ন থেকে দৃশ্যমান পদ্মাসেতু এখন সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে।
তিনি আরো বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে সহিংসতার মুখে জীবন বাঁচাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দিয়েছেন আশ্রয়। মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে নিয়েছেন চতুর্মুখী পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রীর এসব উদ্যোগ বিশ্ব গণমাধ্যমেও প্রশংসিত হচ্ছে। নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই রোহিঙ্গা ইস্যু তুলে ধরে বাংলাদেশের কাছ থেকে পাকিস্তানকে শিক্ষা নিতে বলেছেন।