সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ কেয়া চৌধুরীকে কাজ করতে বাধা দেওয়ায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বিবৃতিতে বলেছেন, নারী সাংসদদের এভাবে বাধা দেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ক্ষোভের ছবিযুক্ত করা হলো।
এমপি কেয়া চৌধুরী’ই বাহুবলে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন আজ। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে-ইউএনও। কেয়া চৌধুরী এমপিই বাহুবলে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করছেন। গত সোমবার বিকেল ৩টায় পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হচ্ছে। রোববার দিনভর সমঝোতার চেষ্টা শেষে প্রশাসন এ ব্যাপারে অনড় মনোভাব ব্যক্ত করেছে। এ অবস্থায় গত রোববার রাত ৮টার পর মাইকযোগে অনুষ্ঠানের প্রচারণা চালানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১ম পর্যায়ে ১৩১টি উপজেলা বাছাই করেছে সরকার। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী এমপি’র প্রস্তাবে উক্ত প্রকল্পে বাহুবল উপজেলার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ-এর গত ১৮ এপ্রিল ইস্যুকৃত পত্র সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে উক্ত প্রকল্পে অন্তর্ভূক্ত মিনি স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণের লক্ষ্যে ঠিকাদার নিযুক্ত হলে ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম, বাহুবল’-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের লক্ষ্যে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করে বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিন ও সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এম. রশীদ আহমেদ-এর নামে আমন্ত্রণপত্র বিতরণ শুরু হয়। এ আমন্ত্রণপত্রে শুধুমাত্র কেয়া চৌধুরী এমপিকে প্রধান অতিথি হিসেবে উল্লেখ করায় নবীগঞ্জ-বাহুবলের জাপা দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মুনিম চৌধুরী বাবু ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
এদিকে, শুক্রবার বাহুবল উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই তনয় রিফাত ইসলাম মুরাদ-এর বৌভাত অনুষ্ঠান ছিল। উক্ত অনুষ্ঠানে আব্দুল মুনিম চৌধুরী বাবু, জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন অংশগ্রহণ করেন। এ বৌভাত অনুষ্ঠানে আব্দুল মুনিম চৌধুরী এমপি, বাহুবল উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই-এর নেতৃত্বে সরকার দলীয় ও জাপা দলীয় নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিনকে ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান বাতিল করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান স্থগিত করেন।
বিষয়টি নিয়ে অনুষ্ঠিত জেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায়ও আলোচনা করা হয়। গত রোববার দিনভর স্থানীয় প্রশাসন সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দ ও জাপা এমপি’র সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে। শেষ পর্যন্ত কোন সমঝোতা না হওয়ায় রোববার রাতে প্রশাসন ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান যথাসময়ে সম্পন্ন করতে অনড় মনোভাব ব্যক্ত করে। যথা সময়ে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের প্রস্তুুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
এদিকে, আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি আজ সোমবার আলাদা ভাবে বৈঠকের ঘোষণা দিয়েছে। রোববার সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগ উপনির্বাচন উপলক্ষে দলীয় সভা আহ্বান করে মাইকযোগে প্রচারণা শুরু করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পূর্ব নির্ধারিত সময়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হবে। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে অতিরিক্ত আইন-শৃংখলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অবশেষে এমপি কেয়া চৌধুরীই ঐ ষ্টেডিয়ামের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেন। এতে করে প্রশাসনের দৃঢ়তা এবং সঠিক কাজ সঠিক সময়ে সঠিকভাবে সম্পন্ন করার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। কোন রকম অন্যায়ের কাছে মাথা নত করা হলো না বরং সত্য এবং সঠিক কাজ করার মনোবল ও মনোভাব বজায় রেখে উন্নয়ন কাজ এর গতি ও ধারাবাহিকতা অব্যাহত রইলো।