টিআইএন॥ স্বদেশের উপকারে নাই যার মন কে বলে মানব তারে পশু সেই জন এই উক্তিটি দিয়ে শুরু করতে হয়েছে আজকের বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারনা বিষয়ক লিখাটি। বাংলাদেশ এবং বর্তমান সরকার বিরোধী প্রচারণা এবং সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিএনপি এবং জামাত গত ৫ বছরে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করেছে। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে দিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায় ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি ডলার। আর বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির জন্য অন্তত তিনটি লবিস্ট ফার্মকে দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রো ট্রান্সপারেন্সি সংগঠন সানলাইট ফাউন্ডেশনের গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। সানলাইটের এই গবেষণায় কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে দ্য ওয়ার্ল্ড পোস্ট।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা। সংস্থাটি অনুদানের ভিত্তিতে চলে। কিন্তু অনুদান প্রদানের ব্যাপারে সংগঠনটির কোনো স্বচ্ছতা নেই। সানলাইটের গবেষণায় দেখা যায়, ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে এই সংগঠনটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ অনুদান নেয়। ২০১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সংগঠনটির এশীয় বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস একটি বাংলাদেশি গ্রুপের সেমিনারের অংশ নেয়। ওই সেমিনারে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার বন্ধের সুপারিশ করা হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই সেমিনারের আয়োজকরা ছিল মূলত: তারা, যারা ১৯৭১ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল, তাদের পরিবার এবং পাকিস্তানে বিশ্বাসী কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি। সানলাইট অনুসন্ধানে দেখা যায়, এরপর থেকেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সরাসরি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং বিভিন্ন রকম প্রচারণা শুরু করে।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংগঠন জামাতে ইসলামীর প্রভাবশালী নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ এর বৈঠক হয়। ব্যারিস্টার রাজ্জাক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের অন্যতম অনুদানকারী। এরপর সংগঠনটি তীব্রভাবে বাংলাদেশ সরকারের সমলোচনা শুরু করে। সানলাইটের অনুসন্ধানে জানা যায়, যুদ্ধাপরাধের বিচারে দন্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, গোলাম আযম এবং মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষ থেকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। অনুদানের বিনিময়ে ওয়াচ এই তিনজনের পক্ষে বিবৃতি দেয়। সানলাইট মনে করে, এটা অনৈতিক। একই গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে বর্তমান সরকার, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা, কুৎসা রটনা এবং চাপ প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন ব্যক্তি অন্তত তিনটি ফার্মকে অর্থ দেয়। যে লবিস্ট ফার্ম গুলোকে অর্থ দেওয়া হয় সেগুলো হলো কে অ্যান্ড এল গেটস, আলপাইন গ্রুপ এবং প্যাটন বগস। এই তিনটি লবিস্ট ফার্মের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক জিয়া লন্ডনে বৈঠক করেন। কর্মকর্তাদের লন্ডনে যাবার খরচ তারেক জিয়াই বহন করে। তাঁদের মূল অ্যাসাইনমেন্ট ছিল প্রচারণার মাধ্যমে সরকারের ইমেজ নষ্ট করা এবং অবিলম্বে নতুন নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা।