তাজুল ইসলাম নয়ন॥ বাংলাদেশের ইতিহাসে এই স্বর্ণজ্জোল অধ্যায় সুচিত হয়েছে আমাদের সম্মানীত এই ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল হয়াহাব মিয়ার দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে। কারন বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ এই আসনটি বোকার স্বর্গে বাসকারী বাতাসে দোলা নলখাগড়ার ঔর্দ্ধত্বে প্রশ্নবিদ্ধ, কলংকিত এবং সন্দেহমূলক নেতিবাচক কথা ও অসম¥ানে জর্জরিত করেছিল। আজ সেই স্বাভাবিক ভাবমুর্তি ও পুরোনো ঐতিহ্য ফিরে এসেছে এই মৃদুভাসী ভদ্র মানুষটির পদচারনায়। আর এই মানুষটিই একটি যথোপযোক্ত উক্তি করেছেন আমাদের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিশারীকে নিয়ে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়া ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
গত সোমবার দু’দেশের সুপ্রিমকোর্টের মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। চুক্তিতে ই-জুডিশিয়ারিসহ বিচার বিভাগের প্রশাসন ব্যবস্থাপনায় রাশিয়া সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয় রয়েছে বলে সূত্র জানায়।
সুপ্রিমকোর্টের জাজেস লাউঞ্জে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। চুক্তিতে সই করেন সফররত রাশিয়ান প্রধান বিচারপতি ভাইচেস্লাভ লেবেদভ ও বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মো. ইমান আলী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, বাংলাদেশে কর্মরত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত, রাশিয়ার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সফররত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। চুক্তি স্কাক্ষরের পর সুপ্রিমকোর্ট গার্ডেনে দু’টি বৃক্ষরোপণ করেন দুই প্রধান বিচারপতি। এরপর আপিল বিভাগের বিচারকাজ প্রত্যক্ষ করেন রাশিয়া প্রধান বিচারপতি।
গত রোববার তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন রাশিয়ান প্রধান বিচারপতি। সফরসঙ্গী রয়েছেন আরও তিনজন। সফর সূচি অনুযায়ী সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হয়। এরপর আপিল বিভাগের বিচার কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন তিনি।
দুপুরে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন রাশিয়ান প্রধান বিচারপতি। সন্ধ্যায় সবাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির সৌজন্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সফররত রাশিয়ান প্রধান বিচারপতি।
সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা বলেন, ১৯৭২ সালের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মস্কো সফর করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা রাশিয়া দিয়েছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। বঙ্গবন্ধু দু’দেশের সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের যে ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সে বন্ধুত্বকে আরো নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, দু’দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি সাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমাদের বিচার ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে। এ সহযোগিতা চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য দু’দেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় করা। বিচার ও মামলা ব্যবস্থাপনায় ই-সার্ভিস প্রতিষ্ঠায় রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তাপ্রাপ্তিও এ চুক্তির অন্যতম উদ্দেশ্য।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতায় আমরা আমাদের রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য বৃহত্তর পরিবর্তন ও কৌশল নির্ধারণ করতে পারি।