ইসরাত জাহান লাকী॥ বাংলাদেশের ডিজিটাল কার্যক্রমের গতিশিলতা এবং জনগনের উপকারভোগীতার লক্ষ্য এখন ট্রাফিক বিভাগেও। ট্রাফিকের জরিমানার ক্ষেত্রে দীর্ঘসুত্রীতা এবং জনদুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাগব হবে এই ট্রাফিক ষ্পট পেমেন্টের মাধ্যমে। ডিএমপি’র বিদ্যমান ডিজিটাল ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশনের মাধ্যমে জরিমানা প্রদানের প্রক্রিয়া আরো সহজতর করা হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে ব্যাংকের ভিসা/মাস্টার (ডেবিট/ক্রেডিট) কার্ডের মাধ্যমে ট্রাফিক মামলার জরিমানা প্রদানের প্রক্রিয়া। ইউসিবিএল ব্যাংক কর্তৃক ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগে ৫০০ টি পিওএস (পজ) মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এমনটি জানালেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
গত ১৯ অক্টোবর’১৭ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে (ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড) ইউসিবিএল ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগকে ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশনের জন্য ৫০০ টি নতুন পিওএস মেশিন ডিএমপি কমিশনার এর নিকট হস্তান্তর করে। এ সময় ইউসিবিএল ব্যাংকের ম্যানিজিং ডিরেক্টর এ, ই, আব্দুল মুহাইমেন ও আইটিসিএল এর কর্মকর্তাসহ ডিএমপি’র উধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন ।
ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের মামলা দেয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, ডিজিটালাইজেশন ও নাগরিকদের সময় বাঁচানোর জন্য ইউসিবিএল এর ৪০০টি ও আইটিসিএল ১০০টি পিওএস মেশিন নিয়ে ২৯ জানুয়ারী ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ডিএমপি’র ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিস্টেম। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগে পিওএস মেশিনের ব্যবহার শুরু হয়। ঐ বছরে ডিজিটাল ও ম্যানুয়ালভাবে মামলা দিলেও ১লা জানুয়ারী ২০১৫ সাল থেকে সম্পূর্ণভাবে পিওএস মেশিন দিয়ে মামলা দেয়া শুরু হয়। ট্রাফিক বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আজ আরো ৫০০ পিওএস মেশিন হস্তান্তর করল ইউসিবিএল।
বর্তমানে ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশনের মাধ্যমে ট্রাফিক মামলার জরিমানা তিনভাবে দেয়া হয়- মোবাইল এজেন্ট, মোবাইল ওয়ালেট (মোবাইল একাউন্ট) ও ইন্টারনেট/ব্রাঞ্চ ব্যাংকিং।
এছাড়া এই জরিমানা প্রদান প্রক্রিয়া আরো সহজতর করতে আগামী তিন মাসের মধ্যে ইউসিবিএল/ অন্যান্য ব্যাংকের ভিসা/ মাষ্টার (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) ব্যবহার করে জরিমানা প্রদানের প্রক্রিয়া চালু করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। যার ফলে যেকোন ব্যক্তি খুব সহজে দ্রুত, যথাযথ ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে জরিমানা পরিশোধ করতে পারবেন।
পিওএস মেশিন ব্যবহার করে এ পর্যন্ত ২৭ লক্ষাধিক মামলা রেকর্ড হয়েছে এবং ২৫ লক্ষাধিক কেসের পেমেন্ট হয়েছে। কেস পেমেন্টের ১১০ কোটিরও অধিক অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন- সমাজে এই ডিভাইসটি পুলিশের ইমেজকে বৃদ্ধি করেছে। পিওএস মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিক সেবার মান একধাপ উন্নতি করেছে। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এটি অন্যতম একটি উদ্যোগ। ম্যানুয়াল থেকে টেকনিক্যাল ব্যবহার করে দুর্নীতি কমানো যায়। পিওএস মেশিন ব্যবহারের ফলে নাগরিকদের সময় বাঁচবে এবং মামলার স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে।
তিনি ইউসিবিএল ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে আহবান জানিয়ে বলেন – কোন এজেন্ট যাতে করে সার্ভিস চার্জ কোন ভাবে অতিরিক্ত নিতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। মানুষ যাতে অযথা হয়রানির শিকার না হয়।
এছাড়া ডিএমপি’র ট্রাফিক মামলা দেয়া পদ্ধতি ডিজিটালাইজেশন করার ক্ষেত্রে সহায়তা দেয়ার জন্য ইউসিবিএল ও আইটিসিএল কে ধন্যবাদ জানান।