টিআইএন॥ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের বাইরে এমন প্রত্যক্ষ হুমকি দেয়ার মানুষ বেঁচে আছে আমার জানা ছিল না। তিনি সাহসী এবং তার কলিজাটা বের হয়ে আছে। তিনি খোদ আমাদের উন্নয়নের জোয়ারে আঘাত করতে চেয়েছেন এবং বাংলাদেশকে স্তব্দ করে দিয়ে পিছনে ফিরিয়ে নিতে চাইছেন। ১৯৭৫ এর মর্মান্তিক দু:খ জনক ঘটনার চেয়েও আরো সাহসীকতা প্রকাশ করেছেন। আর সেই দাম্বিকতানির্ভল হুশিয়ারীটি খুবখু তুলে ধরলাম।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সময় শেষ, আপনার দিন হয়ত ফুরালো, সময় হলো ইতিহাসের আস্তা কুড়ে নিক্ষিপ্ত হবার। কথায় আছে, পাপ বাপকেও ছাড়েনা। আপনার পাপের কলশি ভরে গেছে সেটা বোধহয় আপনি অনুধাবনও করতে পারছেন না!’ এভাবেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে গেলে হুমকী দিলেন ‘হিন্দু ষ্ট্রাগল কমিটি বাংলাদেশ’-এর সভাপতি শিপন কুমার বসু।
গত রোববার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এই হুমকী দেন।
এই শিপন কুমার বসু হচ্ছে সেই শিপন কুমার যিনি গত বছর ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির নেতা আসলাম চৌধুরীর আলোচিত বৈঠকটি করিয়ে দিয়েছিলেন বলে পত্রিকায় খবর বেরিয়েছিলো।
শিপন কুমার বসুর ফেসবুক স্ট্যাটাসটি আহরাম বিডির সৌজন্যে পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
“মাননীয় (মাননীয় বলতে অবশ্য কুন্ঠা বোধ হয়) প্রধানমন্ত্রী, আপনার দিন হয়ত ফুরালো। সময় হলো ইতিহাসের আস্তা কুড়ে নিক্ষিপ্ত হবার। কথায় আছে, পাপ বাপকেও ছাড়েনা। আপনার পাপের কলশি ভরে গেছে সেটা বোধহয় আপনি অনুধাবনও করতে পারছেন না! হিটলার-মুসোলিনীর মতো ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারীর তুলনায় আপনি তো চুনো-পুটী, তারাই টিকতে পারেনি! তাহলে আপনার পরিণাম কত ভয়াবহ হবে বুঝে নিন।
মুসলিমলীগ থেকে জন্ম আওয়ামীলীগ এর, কোথায় সেই মুসলিমলীগ? আওয়ামীলীগ এর পরিণতিও তার ব্যতিক্রম হবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ব সময় হতে আপনার পিতার নীতি অনুসরণ করেই এদেশের সংখ্যালঘূ সম্প্রদায় কে নিশ্চিহ্ন করণ প্রজেক্ট চালিয়ে যাচ্ছেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় আপনি ও আপনার লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী দেশের ইতিহাসের প্রথম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারি প্রধান বিচারপতিকে বলপূর্বক ছুটি প্রদানসহ দেশ ত্যাগে বাধ্য করেছেন। দেশের বিচার বিভাগকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়েছেন। পিলখানা হত্যা কান্ডের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছেন, শাপলা চত্তরে শত শত নিরীহ মুসলমানদের হত্যা করেছেন। আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশকে গুম-খুন-হামলা-মামলায় অভয়ারণ্যে পরিণতি করেছে। আপনার ও আপনার দলীয় নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে প্রতিদিন শত শত সংখ্যালঘু পরিবার প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বাচার চেষ্টা করছে। আপনি কি মনে করেন এর জন্য আপনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে না! অবশ্যই আপনার প্রতিটি অন্যায়ের শাস্তি পেতে হবে, কোন ক্ষমা নাই।
পরিশেষে বলতে চাই, আপনার সময় শেষ। খুব বেশীহলে নভেম্বর ২০১৭, গেম ওভার! এঊঞ জঊঅউণ ঞঙ এঊঞ চটঘওঝঐঊউ.
শিপন কুমার বসু
প্রেসিডেন্ট হিন্দু স্ট্রাগল কমিটি।”
উল্লেখ্য, ‘হিন্দু ষ্ট্রাগল কমিটি বাংলাদেশ’-এর সভাপতি এই শিপন কুমার বসু গত বছর ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বিএনপির নেতা আসলাম চৌধুরীর আলোচিত বৈঠকটি করিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তার স্বীকারোক্তিটি ১৯ মে ২০১৬ তারিখের প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়।
সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের প্রধান মেন্দি এন সাফাদি। নয়াদিল্লিতে তাঁর সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আসলাম চৌধুরীর বৈঠকের খবর ও ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর গত বছরের ১৬ মে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শিপন কুমারের ফেসবুকে গিয়ে দেখা গেছে, তিনি সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নির্যাতন নিয়ে নানা সময়ে নানা ধরনের লেখা শেয়ার দিয়েছেন। এ ছাড়া ‘জেরুজালেম ইন মাই নেম’, ‘ইসরায়েল ইন মাই হার্ট’ এসব গ্রুপের নানা পোস্ট শেয়ার দিয়েছেন। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে তিনি নিজেকে ‘ইন সার্চ অব রুটস’ নামের একটি সংগঠনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। এ সংগঠনটি সাফাদি সেন্টারের সঙ্গে কাজ করে।
কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শিপন বাংলাদেশে মোসাদের এজেন্ট। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রথম আলোকে শিপন বলেন, ‘আমি যদি কারও এজেন্ট হয়ে থাকি, সেটি আমার প্রিয় দেশ বাংলাদেশের ও আমার হিন্দু সম্প্রদায়ের। আমি হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন ও জমি দখলের বিরুদ্ধে কাজ করছি অনেক দিন ধরে। এর সূত্র ধরেই আমার সঙ্গে দুই বছর আগে মেন্দির যোগাযোগ হয়। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই।’
এই দেশ বিরোধী রাষ্ট্রবিরোধী লোকটি কেন ধরা হচ্ছে না। তাকে ধরা হউক এবং বাংলাদেশ ও এই দেশের সরকার প্রদানকে সুরক্ষা করা হউক। তার ফেসবুক আইডিটি ব্লক করে দেয়া হউক। এই ধরনের অনেক ফেসবুক এখনও চলমান সুতরাং অনলাইন নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় কর্মরত সকলকে বলছি। প্রতিনিয়ন চোখ রাখুন নেতিবাচক লিখা ও পোষ্টের উপর। রাষ্ট্রদ্রোহী এই সকল পোষ্ট ও লিখা এবং কর্মকান্ডের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া সময়ের দাবি। আমরা আশা করব সরকার এবং এর সকল উইংগুলো একসঙ্গে কাজ করে এই বিচ্ছিন্নবাদী হুমকী দাতাকে গ্রেফতার করা হউক।