খালেদা জিয়ার জামিনে তিনটি শর্ত

তাজুল ইসলাম॥ মুচলেকা দিয়ে জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ৫নং বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান এ জামিন আদেশ দেন। তবে আদালত জামিনের বিষয়ে খালেদা জিয়াকে তিনটি শর্ত বেধে দেন। এগুলো হলো- ২ লাখ টাকা বন্ড, দু’জনের জিম্মা এবং ভবিষ্যতে বিদেশ গেলে অবশ্যই আগে থেকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।    haleda bailed 3 conditions
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে হাজির হয়ে দুই মামলায় জামিন আবেদন করেন। তার পক্ষে জামিন আবেদন করেন ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন গুলশানের বাসভবন থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা হন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তিনি আদালতে পৌঁছান।
খালেদা জিয়ার হাজিরা ঘিরে আদালত এলাকায় বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সকাল থেকে ভিড় করেন। একই সঙ্গে আদালত ও এর আশ-পাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন ও তদন্তাধীন ৩৫টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে ছয়টিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১২ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আখতারুজ্জামান। এই দুই মামলাতেই হাজিরা দিয়ে জামিন পেলেন খালেদা জিয়া।
উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদ চার আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব এবং বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। এ মামলার আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল (ইকোনো কামাল), ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.