কামরুল হাসান॥ খালেদা জিয়ার প্রয়াত মাতা যাকে আমরা তৈয়বা মজুমদার নামে চিনি, তার প্রকৃত নাম ছিল লক্ষ্মীরাণী মারমা। তিনি ছিলেন পরমা সুন্দরী ও যৌবনবতী। দার্জিলিংয়ের খোয়া অঞ্চলের উপজাতি সম্প্রদায়ের সমাজপতি হরিকৃষাণ বাহাদুরের বাড়িতে রক্ষিতা থাকা অবস্থায় তিনি দুটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। যাহাদের একজন খালেদা জিয়ার বড় বোন প্রয়াত খুরশীদা জাহান হক ও মেজ বোন সেলিমা ইসলাম বিউটি নামে সকলের কাছে পরিচিত।
দুই কন্যা সন্তানের জননী হবার পর হরিকৃষাণ বাহাদুরের আনন্দভবন থেকে বিতাড়িত হয়ে তিনি দার্জিলিংয়ের ক্রিফটন চা বাগানের মালিক ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত ইহুদী ধর্মাবলম্বী মিঃ রবার্ট উইলসনের রেস্ট হাউসে চাকরাণীর কাজ নেন। মিঃ উইলসনের দারোয়ানই হচ্ছেন খালেদা জিয়ার কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার, যাহার প্রকৃত নাম মুরলী মোহন মারমা। মিঃ রবার্ট উইলসনের মদ ও নারীর প্রতি প্রচন্ড আসক্তি ছিল। তাঁর চাকরানী থাকাকালীন সময়েই খালেদা জিয়ার মাতা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এই বিষয়টি চা বাগানের কর্মকর্তা – কর্মচারীদের মধ্যে জানাজানি হয়ে গেলে মিঃ রবার্ট উইলসন নিজের ইজ্জত বাঁচানোর জন্য তাঁর দারোয়ান ছদ্মনামধারনকারী ইস্কান্দার মজুমদারকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে খালেদা জিয়ার মায়ের সাথে বিয়েতে রাজী করান। বিয়ের পরেও মিঃ রবার্ট উইলসনের সাথে খালেদা জিয়ার মায়ের নিয়মিত দৈহিক মিলন ঘটতো। চাকুরী হারানোর ভয়ে কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার এই বিষয়ে টু শব্দটিও করতেন না।
এমনি অবস্থার প্রেক্ষাপটে খালেদা জিয়া চা বাগানের দাই মরিসন সাংমার তত্ত্বাবধানে ১৯৪৫ সালের ১৩ই আগস্ট ও তাঁর ভাই সাঈদ ইস্কান্দার ১৯৪৭ সালের ১৫ই নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাদের জন্মের পর পরই চা বাগানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তাদের গায়ের রং ও চেহারা নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন ওঠে। প্রকৃতপক্ষে খালেদা জিয়া এবং সাঈদ ইস্কান্দারের বাবা হচ্ছেন মিঃ রবার্ট উইলসন। মিঃ রবার্ট উইলসনের চেহারা ও গায়ের রংয়ের সাথে তাদের প্রচুর মিল রয়েছে। লোকজনের বলাবলিতে খালেদা জিয়ার কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার বেশ কয়েকবার চাকুরীর মায়া ছেড়ে বরং এলাকা ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পালাতে গিয়ে বেচারা দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্যর্থ হন।
অবশেষে ১৯৫৭ সালে দার্জিলিংয়ের সীমান্ত পার হয়ে পঞ্চগড়ের বাংলাবন্দ সীমান্ত দিয়ে দিনাজপুর জেলার সেতাবগঞ্জের এক দরিদ্র কৃষকের বাড়িতে আশ্রয় নেন। খালেদা জিয়ার বয়স তখন মাত্র ১২ বছর। যৌবন ছুই ছুই করছে। কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদার তখন বেকার। সেই সময়ে উক্ত এলাকার জোতদারদের দৃষ্টি পড়ে তৈয়বা বেগমের উপর এবং অল্পদিনের মধ্যেই মা তৈয়বা বেগম তার তিন মেয়ে যথাক্রমে খালেদা, খুরশীদা ও সেলিমাকে নিয়ে পৃথিবীর আদিমতম পেশা বেশ্যাবৃত্তিতে পুরোদস্তুর নেমে পড়ে। বেশ কিছুদিন আয় উন্নতি তথা রমরমা ব্যবসা চলার পর এলাকার লোকজনের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়ে।
অতঃপর সেতাবগঞ্জ জামে মসজিদের তদানীন্তন ইমাম মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এক শালিস বৈঠক বসে। শালিসে কথিত বাবা ইস্কান্দার মজুমদারসহ মা তৈয়বা বেগম, মেয়ে খালেদা, খুরশীদা, সেলিমা ও ছেলে সাঈদ ইস্কান্দারকে জুতাপেটা করা হয় এবং তিন দিনের মধ্যে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। কোনও উপায় না দেখে, খালেদার কথিত বাবা দিনাজপুর শহরের মুন্সীপাড়ার এক বস্তিতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। দিনাজপুর শহর থেকে সেতাবগঞ্জের দূরত্ব মাত্র কয়েক কিলোমিটার। তাই সেতাবগঞ্জের ঘটনা যাতে জানাজানি না হতে পারে সেই ভয়ে কথিত বাবা ও মার নাম পাল্টানোর পাশাপাশি খালেদার নতুন নামকরন করা হয় পুতুল। কিন্তু কথায় আছে, “চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী।” অভাবের তাড়নায় মুন্সীপাড়ায় এসেও সেই পুরাতন ব্যবসা চালাতে থাকে। কিন্তু বিধি বাম! ছোট্ট শহর দিনাজপুর, তাই ঘটনা আর চাপা থাকেনা।
সীমান্তবর্তী শহর দিনাজপুরে তখন পাকিস্তানী খান সেনাদের সেক্টর হেডকোয়াটার ছিল। সন্ধ্যা হলেই বেলুচ, পাঠান, পাঞ্জাবী খান সেনাদের আগমন ঘটতো সেখানে। এই বস্তিতেই মা ও মেয়ে খালেদা, খুরশীদা, সেলিমা তাদের সঙ্গে ফষ্টিনস্টি করতো আর দু’হাতে টাকা কামাই করতো। আয় উপার্জন ভালো হওয়াতে কয়েক মাসের মধ্যেই দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ির একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে গিয়ে তারা উঠে। পরে সরকারী বন্দোবস্ত নিয়ে স্থায়ীভাবে এখানে বসবাস করতে থাকেন। বর্তমানে দিনাজপুরে যেটি খালেদা জিয়ার মায়ের বাড়ি নামে পরিচিত- এটিই সেই বাড়ি।
এই বাড়িতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৎকালীন ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমান ১৯৬০ সালে প্রথম এসেছিলেন দুই পাঠান সেনা অফিসার বন্ধুকে নিয়ে আমোদ ফুর্তি করতে। বেশ কয়েকবার আসা যাওয়ার পর মা ও মেয়ে খালেদার ছলনায় জিয়াউর রহমান আটকে যান। এক সন্ধায় জিয়া একা আমোদ ফুর্তির জন্য আসলে বালুবাড়ি মহল্লার ছেলেরা পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক কাজী ডেকে এনে খালেদার সাথে বিয়ে পড়িয়ে দেন।
১৯৬৪ সালের শেষদিকে জিয়াউর রহমান খালেদাকে নিয়ে পাকিস্তান চলে যান। সেখানে করাচীতে তাঁর ভালো পোস্টিং হয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়। জিয়া খেমকারীর রনাঙ্গনে বেদায়ান-এ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি ব্যাটিলিয়নের কমান্ডার হিসাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কিশোরী বয়স থেকেই যে খালেদার পুরুষ মানুষের সাথে শোয়া নিত্যদিনের অভ্যাস, সে কি করে একা থাকে? কয়েকদিন যেতে না যেতেই করাচি ক্যান্টনমেন্টের ৫৫ নং ফ্রন্টিয়ার ব্রিগেডিয়ার সুবেদার মেজর পাঞ্জাব শার্দূল মুশতাক খানের সাথে পালিয়ে গিয়ে খালেদা দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যুদ্ধ শেষে জিয়াউর রহমান স্ত্রী বিয়োগে ভেঙে পড়লে ঊর্ধ্বতন পাক সেনা কর্মকর্তারা মধ্যস্থতা করে খালেদাকে আবার জিয়ার কাছে ফেরত দেয়। (তথ্য সুত্রঃ ইড়ড়শ: ডধৎ রহ ১৯৬৫, চধশরংঃধহ ধহফ ওহফরধ. ইু ঝরফফরশ ঝধষবশ, চধমব ঘড়. ১৪৫)
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি এজেন্ট হিসাবে জিয়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। জিয়া খালেদার চরিত্র সম্পর্কে অবগত ছিলেন বলেই তাঁকে সঙ্গে নেবার আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই খালেদা জিয়া পাক সেনা কর্মকর্তাদের সাথে আনন্দ স্ফূর্তি ও ফষ্টিনষ্টি করে সময় কাটান। বর্তমান হোটেল শেরাটন তদানীন্তন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সুইমিং পুলে সুইমিং কস্টিউম পড়া পাকিস্তানী ব্রিগেডিয়ার জান জুয়ার সাথে আলিঙ্গনাবদ্ধ হাস্যউজ্জ্বল ছবিই তার সাক্ষ্য প্রমাণ বহন করে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে খালেদা জিয়া গর্ভবতী হয়ে পড়েন। যার কারণে স্বাধীনতা লাভের পর জিয়াউর রহমান তাঁকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করেন। তার কিছু দিন পর একটি সন্তান জন্ম নেয় , নাম রাখা হয় কোকো, তখন জিয়াউর রহমান খালেদাকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করেন, পরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে এসে খালেদা জিয়া হাজির হয় এবং জিয়াউর রহমানকে ডেকে নিয়ে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান কিন্তু শেখ মুজিবের ধমকে মেজর জিয়া খালেদাকে ঘরে নিতে বাধ্য হয়। পরে প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাঃ টি এইচ খান খালেদা জিয়াকে ১৯৭২ সালের গোঁড়ার দিকে এ্যবরশন করান। (এ্যবরশনের ঘটনা যদি কারো বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়, তাহলে ডাঃ টি এইচ খান এখনো জীবিত আছেন তাঁর সাথে যোগাযোগ করলেই বিস্তারিত জানতে পারবেন।)
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ডাঃ বদরুদ্দুজা চোঁধুরীকে বাদ দিয়ে কোন যোগ্যতার কারণে কে এম ওবায়দুর রহমানকে বিএনপির মহাসচিব বানানো হয়েছিল। যোগ্যতা একটাই- ওবায়দুর রহমান সেক্সি পুরুষ। এ নিয়ে ওবায়দুর রহমানের দাম্পত্য জীবন ভেঙ্গে যাবার উপক্রম হয়েছিল। আবার কি কারনে ওবায়দুর রহমানকে মহাসচিব পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল? এ নিয়ে বিদেশী দূতাবাসের এক পার্টিতে ব্যারিস্টার মওদুদ, ব্যারিস্টার হাসনাত ও ওবায়দুর রহমানের সাথে কথা হচ্ছিলো। ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত কথাটা অকপটে বলেই ফেললেন, ওবায়দুর ভাইয়ের যদি ডায়াবেটিস না হতো, তাহলে খালেদা জিয়া কি তাঁকে বাদ দিতো।
খালেদা জিয়ার জীবন থেকে ওবায়দুর রহমান চলে যাবার পর তার কাছে আসে জনৈক কর্নেল (অবঃ) আব্দুর রশীদ নামে এক পুরুষ। খালেদার পুত্র তারেকেরও এই ব্যাপারে কোনও আপত্তি ছিলনা। কারন কর্নেল (অবঃ) রশীদের ছিল সুন্দরী এক মেয়ে। তাঁর প্রতি নজর পড়ে তারেকের। মায়ের কাছে যায় শ্বশুর, আর শ্বশুরের মেয়ে আসে তারেকের কাছে। ক্যান্টনমেন্টের মইনুল হোসেন রোডের ৬ নং বাড়িটিতে একদিন মুখোমুখি দেখা হয়ে যায় মেয়ের সাথে কর্নেল (অবঃ) রশীদের। সঙ্গে সঙ্গে কর্নেল (অবঃ) রশীদ তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে। পেয়ারার ডাল দিয়ে শুরু করে ধুমধাম মারপিট। ঘটনাটি পত্রিকায় ফাঁস হয়ে যাবার পর খালেদা জিয়া পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বললেন, তাঁকে প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল জনৈক কর্নেল (অবঃ) রশীদ। মামলাও করেছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছিলেন কর্নেল (অবঃ) রশীদ। তারপরে খালেদা জিয়া দুইবার প্রধানমন্ত্রী হলেন কিন্তু প্রাণনাশের মামলাটির কি হল বাংলাদেশের মানুষ আজো জানতে পারেনি। মিথ্যার কি বেসাতি!
বেগম খালেদা জিয়া জীবনে বহু পুরুষকে তৃপ্ত করেছেন, মনোরঞ্জন করেছেন, নিজেও সুধা পান করেছেন। যাইহোক, জিয়াউর রহমানের পর যে ব্যক্তিটি দীর্ঘদিন যাবত খালেদা জিয়াকে ভোগ করে আসছেন, তাঁর নাম ফালু। মূর্খ ফালুকে খালেদা জিয়া তার পিএস পর্যন্ত বানিয়েছেন। নতুন নাম রেখেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। ফালুর সাথে খালেদার নষ্টামির কথা বাংলাদেশের অবুঝ শিশুও জানে। ফালু ছিলেন, ফালু আছেন এবং শেষ পর্যন্ত বোধহয় ফালুই থাকবেন তার জীবনে।