ইসরাত জাহান লাকী॥ সরকার ১০,৯০২.২১ কোটি টাকা ব্যয়ে নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকের জন্য উত্তরার সেক্টর-১৮ তে প্রতিটি ১২৫০ বর্গফুটের ১১,০০৪টি এবং প্রতিটি ১,০৫০ বর্গফুটের ৪,০৩২টি মোট ১৫,০৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে।
গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকদের জন্য এপার্টমেন্ট নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় সারাদেশে মোট ৫২০টি পল্লী বাজার স্থাপনে ১,৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশব্যাপী পল্লী বাজারের অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্পও অনুমোদন দেয়া হয়।
একনেকের চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের সাপ্তাহিক বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, সভায় ১৫,২২১.৭৫ কোটি টাকা ব্যয়সম্বলিত মোট আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৩,৭৬৭.৮৪ কোটি টাকা পাওয়া যাবে জাতীয় কোষাগার থেকে এবং বাকি টাকার মধ্যে ১০,৯২৪.৬২ কোটি টাকা পাওয়া যাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে ও বাকি টাকা পাওয়া যাবে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে। আটটি প্রকল্পের মধ্যে ছয়টি নতুন এবং দু’টি রিভাইজড প্রকল্প।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকদের জন্য প্রতিটি ৮৫০ বর্গফুটের আরো ১০০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজউক ফ্ল্যাট নির্মাণ ব্যয় বহন করবে। প্রতিটি ফ্ল্যাটের নির্মাণ ব্যয় হবে প্রতি বর্গফুট ৪,৮০০ টাকা। পল্লী বাজার নির্মাণ সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সরকারি অর্থায়নে ২০২০ সালের মধ্যে পল্লী বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
কামাল আরো বলেন, ‘গ্রামীণ এলাকায় ব্যবসার সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।’ তিনি বলেন, প্রকল্পটির আওতায় ৪৯১টি উপজেলার প্রত্যেকটিতে অন্তত তিন তলাবিশিষ্ট ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার বর্গফুটের পল্লী বাজার গড়ে তোলা হবে।
কামাল জানান, কৃষি পণ্যের এই সব বাজারে নারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকবে। বৈঠকে ৫শ’ ৮৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকার ‘বাংলাদেশ রিজিওনাল কমিউনিকেশন প্রজেক্ট-১ : ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো ইম্পিমেন্টেশন অ্যান্ড কাস্টমস মডার্নাইজেশন স্ট্রেংথেনিং’ প্রকল্পের অর্ন্তভূক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিশ্বব্যাংক প্রকল্প সহায়তা হিসেবে মোট খরচের ৫শ’ ২৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা দেবে। অবশিষ্ট ৫৬ কোটি ১০ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আসবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ২০২০ সালের জুন মাস নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ১৯১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন, ২শ’১৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুর-কালিবাড়ি-সারিশাবাড়ি সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতকরণ প্রকল্প, ১ হাজার ৩৩০ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেকেন্ডারি এডুকেশন স্টাইপেন্ড (২য় স্তর, ১ম নিরীক্ষা) এবং ১৪৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাকেরগঞ্জ-বরগুণা ১৩২ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন ও বরগুণা ১৩২/৩৩ কেভি পাওয়ার সাবস্টেশন নির্মাণ।