টিআইএই॥ এই লিখাটা শুরুই হয়েছে একটি রচনাসূলব মনোভাব নিয়ে। কিন্তু রচনা নয়। আর এই সঠিক ইতিহাস ও এর সত্যতা তুলে ধরাই এখন সময়ের দাবি। তাই লেখক সুচারুরূপে এই রুপ-রস, গন্ধ এবং বাস্তবতা ও যুগের চাহিদা পুরনের দৃষ্টান্তই তুলে ধরেছেন মাত্র।
সুচনা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন বাংলাদেশ নামে একটি শিশু রাষ্ট্রকে জন্মদিয়ে সারে তিন বছরের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রার পথে চুরান্ত প্রস্তুতি গ্রহন করেছিলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে ৭১ এর পরাজিত ঘাতকেরা সেই সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে ভিন্নখাতে প্রভাহিত করার জন্য এবং স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে ৭৫ এর ১৫ ই আগস্টে হত্যা করেছিল।
খুনি জিয়া অবৈধভাবে বন্দুকের নলের ক্ষমতা দিয়ে ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার চাওয়া থেকে এদেশে আইনের শাষনকে রুখে বাকরুদ্ধ করেছিল এবং আমাদের ছাত্র-যুব সমাজের হাতে হাতে অর্থ মাদক এবং অস্ত্র তুলে দিয়ে ছাত্র-যুব সম্প্রদায়কে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গিয়েছিল, ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল এবং ২১ বছর অগণতান্ত্রীক পথে যাত্রা শুরু করেছিল খুনি জিয়াউর রহমান। আমি শুধু একটি কথা বলতে চাই একটি পিতৃ মাতৃহীন একটি ছোট্ট সারে তিন বছরের শিশুকে যদি তার অভিবাবকরা শিক্ষা দেয় মিথ্যা এবং হত্যা করার জন্য উৎসাহিত করে তাহলে সেই শিশু ২১ বছরে যখন পরিনত যুবকে রুপান্তরিত হয় কিন্তু সেই সময় সেই পরিনত যুবককে সংশোধন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ হয়ে দাড়ায় কারন অভ্যাস মানুষের ভয়ানক দাস। সেই কঠিন কাজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা দির্ঘ ২১ বছর পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে ১৯৯৬- ২০০১ সাল পর্যন্ত এই বঙ্গকন্যার নেতৃ্ত্েব শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, খাদ্য,বস্ত্র, গঙ্গা পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি উন্নয়নের এক বিরাট সম্ভাবনার দিকে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ঠিক সেই সময় ঘসেটি বেগম নামে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া ষরযন্ত্র করে ক্ষমতায় আসার পর দেশকে একটা নরক রাজ্যে পরিনত করেছিলেন।
যেমন, সারা বাংলাদেশে সেই সময় আহসানুল্লাহ্ মাস্টার, শাহ্ কিবরিয়া এবং বৃটিশ হাই কমিশনারের উপর বোমা হামলা মোট ৬৪ জেলায় বোমা বিস্ফোরণ এবং ২১ হাজার আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের হত্যাকরা ও আওয়ামীলীগকে নিঃচিহ্ন করার জন্য স্টিম লোয়ার চালানো হয়েছিল সেকি বর্বরতা নিসৃংশ হত্যাকান্ড চোখে যারা দেখেছেন আজও তারা ভুলতে পারেনি এই অমানবিক নিঃসৃংশ হত্যাকান্ডের ইতিহাস। এখন একটু ভাবুন এরপর বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা তার সুযোগ্য নেতৃত্বে উন্নয়ন করে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে একটা মর্যাদাশীল রাষ্ট্র উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরেছেন যা বিশ্বের বুকে এক বিরল দৃষ্টান্ত এবং এই অর্জন শুধু বঙ্গকন্যার জন্যই সম্ভব হয়েছে তাই আমি জাতির কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই : আপনারা বাস্তব ও ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর সুন্দর সাবলীল সু-মসৃণ পথ অনুসরণ করে বাংলার বুকে বঙ্গকন্যার কোনো বিকল্প নেই তাই সুন্দর ও সত্যকে ভালবাসুন দেশ ও জাতির উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন!!!!
আবার, মওদুদীবাদী জামাত-শিবিরের ক্ষেত্রে সন্ত্রাস রীতিমতো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপার। ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে এই চক্র ১৯৭১ সালে মানুষকে হত্যা করেছে, ঘরে আগুন দিয়েছে, মা-বোনের ইজ্জত লুটেছে। এখনো হত্যা, রগ কাটা অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তারের জন্য তারা মেধাবী ছাত্র ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাদের হত্যার কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে এখনো। এসব ঘটনা ১৯৭১-এর বুদ্ধিজীবী নিধনেরই ধারাবাহিকতা। শিবিরের নৃশংসতার সঙ্গে অন্য কারো তুলনা হয় না। একটিবার ফিরে তাকানো যাক শিবিরের বর্বরতার দিকে।
২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ ঈসায়ী: বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাতপন্থী শিক্ষক মহিউদ্দিন এবং রাবি ছাত্রশিবির সভাপতি মাহবুব আলম সালেহীনসহ আরো দুইজন শিবির ক্যাডার মিলে একযোগে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে রাবি’র ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবু তাহেরকে হত্যা করে।
২১ আগস্ট, ২০০৬ ঈসায়ী: রাবিতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তব্য দেয়ার জন্য অধ্যাপক হাসান আজিজুল হককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিবির। প্রকাশ্য সমাবেশে তারা হাসান আজিজুল হকের গলা কেটে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়ার ঘোষণা দেয়।
১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ ঈসায়ী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে যোগদানকারী নতুন ১ শিক্ষককে শিবির ক্যাডাররা ক্যাম্পাস সংলগ্ন বিনোদপুর মার্কেট এলাকায় ছুরি চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ক্যাম্পাসে শিবিরের কর্মকান্ডে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করায় তার এই পরিণতি ঘটে।
৫ আগস্ট, ২০০৭ ঈসায়ী: শিবির ক্যাডাররা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের ৪ জন সাংবাদিকের উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। ২ জন সাংবাদিককে তারা রাবি’র গোপন ১টি কক্ষে প্রায় ৩ ঘণ্টা আটকে রাখে।
১৯ আগস্ট, ২০০৭ ঈসায়ী: বরিশাল বিএম কলেজের ছাত্রাবাসে শিবির ক্যাডাররা পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে ৮ শিক্ষার্থীকে মারাত্মকভাবে জখম করে। এ সময় তারা ছাত্রাবাসের ৪টি কক্ষ একেবারে তছনছ করে দেয়।
২ মে, ২০০৮ ঈসায়ী: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ জন সহকারী প্রক্টরের উপর শিবির ক্যাডাররা হামলা চালায়।
বিজয় দিবস, ২০০৮ ঈসায়ী: শিবির ক্যাডাররা পাবনার পীরপুর গ্রামে ছাত্রলীগ কর্মী মনিরুজ্জামান সজীবের উপর ধারালো অস্ত্র সহকারে হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতরভাবে জখম করে।
৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ ঈসায়ী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনকে হত্যা করে ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে রাখে শিবিরের ক্যাডাররা।
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ ঈসায়ী : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র এএএম মহিউদ্দিনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা। অবশ্য এটা তাদের কুকর্মের সামান্য নমুনা।
বিবরণ: ১৯৭৫ সালের পনেরো আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের পরাজিত শক্তির নীল-নকশায় এবং ক্ষমতালিপ্সু কুচক্রীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নৃশংসভাবে সপরিবারে নিহত হন। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে সামরিক শাসনের যাঁতাকলে বাঙালি জাতি নিষ্পেষিত হতে থাকে।
১৯৮১সালের ১৭ মে দলের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বজনহারা বাংলায় আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। এরপর একে একে কেটে গেল ৩৬ বছর। শেখ হাসিনা মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত মোকাবেলা করে আজ উঠে এসেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। বাঙালি জাতিকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের মহাসোাপানে। প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা আজ শুধু নিজ দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে।
দেশ ও মানুষের জন্য তার চ্যালেঞ্জের সাফল্য তাকে দেশের মধ্যেই নয়, আন্তর্জাতিক দুনিয়াতেও প্রবল আত্মবিশ্বাসের জায়গায় উঠিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সামরিক শাসনের কবল থেকে গণতন্ত্র মুক্তি। ১৯৮১ সালে খুনী জিয়া খুন হয়ে যান এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে। প্রতিষ্ঠিত হয় একেবারেই দুর্বল, ষড়যন্ত্রকারীদের ক্রীড়নক বিচারপতি ছাত্তারের পুতুল সরকার। সেই সরকারকে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে জেনারেল এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি হয়ে সামরিক শাসন জারি করেন। জাতির বুকে আবারও চেপে বসে সামরিক শাসনের জগদ্দল পাথর।
১৯৮২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ধারাবাহিক ছাত্র-গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতন হয়। এই আন্দোলন সংগ্রামে দেশরতœ শেখ হাসিনার দূরদর্শী অবিচল নেতৃত্ব জনগণকে গণতন্ত্র মুক্তির পথ দেখায়। ১৯৯১ সালে তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সূক্ষ কারচুপির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করা হয়। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিকে সাথে নিয়ে অন্যরা সরকার গঠন করে। নব্বইয়ের আন্দোলনের সকল অর্জন সেই সরকার জলাঞ্জলি দেয়।
কিন্তু আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত রাখেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত মেয়াদে সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্য হচ্ছে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু এবং জজ আদালতে এর বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা সহিংসতার অবসান ঘটিয়ে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদন করা। ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি ন্যায্যতার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা। এর বাইরেও অনেক উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে, যা এই স্বল্প পরিসরে লেখা সম্ভব নয়।
জাতির দুর্ভাগ্য এই যে, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর ২০০১ সালে নীল-নকশার নির্বাচনে পুনরায় বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতাসীন হয়। বেগম জিয়ার পুত্র তারেক রহমান হাওয়া ভবনখ্যাত বিকল্প ক্ষমতাকেন্দ্র গড়ে তুলে দেশের মানুষকে এক অবর্ণনীয় দুর্যোগের মধ্যে ফেলে দেয়। ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে সংবিধান সংশোধন করা হয়। এর বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, চোদ্দ দল, মহাজোট তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলনের মুখে ইয়াজউদ্দিন সরকারকে হটিয়ে সেনা সমর্থিত মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকার গঠিত হয়। শুরু হয় ছদ্মবেশী সামরিক শাসন।
২০০৬ সালে নির্বচান স্থগিত হয়ে যায়। সেনা সমর্থিত তত্তাবধায়ক সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে বাধা দেয়; কিন্তু সকল বাধা উপেক্ষা করে জনগণের টানে দেশে ফিরে আসেন। এরপর তাকে কারান্তরীণ করা হয়। জনগণের আন্দোলনের চাপে সেনা সমর্থিত সরকার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত বক্তব্য অনুযায়ী একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা এখনও অব্যাহত আছে। কোনো কোনো বিচারের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন এবং রায় কার্যকর হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা সর্বোচ্চ আদালত থেকে রায় হওয়ার পর হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
২০০৯সালে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শেখ হাসিনা সরকার পরিচালনা শুরু করেন। সরকার ও দল পরিচালনায় অভিজ্ঞ হাসিনার উতরোত্তর সাফল্যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মদদে জঙ্গিবাদের উত্থান এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের চক্রান্ত করা হয়। কিন্তু শেখ হাসিনার দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী সকল অপচেষ্টা রুখে দেয়। যদিও এখনো বিভিন্নভাবে সেই অপচেষ্টা বিদ্যামান আছে।
২০১৪ সালে সাংবিধানিকভাবে পরবর্তী নির্বাচন দেশের জন্য অপরিহার্য ছিল।কিন্তু সেই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশগ্রহণ না করে দেশকে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়। শত শত মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। তাদের জিঘা্সংা থেকে গরু বোঝাই ট্রাক, শিশু, কিশোর এমনকি চলন্ত বাসও রক্ষা পায়নি। তারা কেটে ফেলে হাজার হাজার বৃক্ষ, তারা ভেবেছিল দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করে পুনরায় অসাংবিধানিক শাসানের দিকে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু শেখ হাসিনার কঠোর মনোভাব এবং দক্ষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই অবস্থা থেকে জাতি পরিত্রাণ পায়।
সম্প্রতি আমাদের দেশের ওপর প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব পড়ে। চলতি বছরের এপ্রিলের প্রথম দিকেই হাওরাঞ্চলের সাতটি জেলায় অকাল বন্যায় প্লাবিত হয়। বন্যার ফলে হাওরের মানুষ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। শেখ হাসিনা মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে হাওর অঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়ান, তাদের অব্যাহত সাহায্য-সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।
এরপরই দেশের উত্তরাঞ্চল আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়। দেশের এক তৃতীয়াংশ ফসল বিনষ্ট হয়ে যায়। মানবতাবাদী নেত্রী শেখ হাসিনা উত্তরাঞ্চলের বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। উনি নিজেই ত্রাণ তৎপরতা তদারকি করছেন। এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় নতুন আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। মিয়ানমার থেকে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকতে থাকে। বাঙালি জাতি এবং আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা মানবতার খাতিরে সীমান্ত উন্মোচন করে দেন।
মিয়ানমারের এই গণহত্যায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয় এবং হাজার হাজার নারী ধর্ষণের শিকার হন। এমতাবস্থায় তাদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের আশ্রয় দেওয়া- মানবিক দৃষ্টিতে আমাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায়। নেত্রী শেখ হাসিনা মানবতার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে আক্রান্ত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেন।
জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব বিবেকের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে পাঁচটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কিভাবে করা যায়। এ ব্যাপারে ভারত, চীন ও রাশিয়া তাদের ভিন্নমত থাকলেও নেত্রী তাদেরকে সহমতে আনার চেষ্টা করছেন। জাতিসংঘ মহাসচিব দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ মিয়ানমার সরকারকেই নিতে হবে।
ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্ব বিভিন্ন দেশ থেকে সাহায্য পাঠানো শুরু হয়েছে।রোহিঙ্গা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং তা কার্যকরী করতে হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন তার কোনো বিকল্প নেই।
কেবল রাজনীতিবিদ বা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেই তিনি অনন্য নন, তাঁর রয়েছে অসাধারণ মানবিক গুণাবলি। লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি স্নেহময়ী ভগ্নী-জায়া-জননী। বিলাস-বাহুল্যবর্জিত সাধাসিধে জীবনযাত্রা এবং পোশাকেআশাকে তাঁর অতুলনীয় বাঙালিয়ানা তাঁকে মাটির মানুষের, দুঃখী মানুষের প্রিয় নেতা হিসেবে অসামান্য শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার আসনে বসিয়েছে।
বর্ণাঢ্য সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি তাঁর ধীশক্তি এবং সৃজনশীল লেখালেখি তাঁকে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও অনন্য আসনে বসিয়েছে। রাজনীতিবিদ শেখ হাসিনা যেমন, তেমনি লেখক-চিন্তক শেখ হাসিনাও বাংলাদেশের ইতিহাসে নিজের জন্য শিখরস্পর্শী অক্ষয় আসন সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিব্যাপ্ত হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের প্রতি অধ্যায়ে, প্রতি পাতায়।
শেষ কথা: এই আশাবাদ ব্যক্ত করতে চাই যে, জঙ্গি, রোহিঙ্গা সমস্যা, বন্যা, মহামারি, চালের দামের ঊর্ধ্বগতি, জামায়াত-বিএনপির চক্রান্ত, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত, তা সফলভাবে মোকাবিলা করে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে এবং আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। সংগ্রাম, সাফল্য আর বর্ণাঢ্য জীবনের জীবন্ত কিংবদন্তি জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন। বাঙালি জাতিকে আরও দীর্ঘদিন উন্নত, সমৃদ্ধ জীবন গড়ার কর্মযজ্ঞে নেতৃত্ব দিন, সুস্থ থাকুন -এটাই জাতির প্রত্যাশা।