আবদুল আখের॥ নাটকীয় মোড় নিয়েছে গুলশানের হোলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় গতবছর সংগঠিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা। তদন্তের শেষ পর্যায়ে বিশ্বের কয়েকটি খ্যাতিনামা সংস্থা যে তথ্য দিয়েছে তাতে এটা জঙ্গি হামলা না সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে জঙ্গিদের অর্থায়নের অভিযোগ উঠেছে। লন্ডন এবং দুবাই থেকে বেশ কিছু রহস্যজনক লেনদেনের খবর দিয়েছে বিদেশি গোয়েন্দারা। এতেই নড়েচড়ে বসেছেন, বাংলাদেশে তদন্দকারী সংস্থাগুলো। তারা বলছেন, ‘কিছু ক্লু আমরা পেয়েছি। এগুলো প্রমাণ হলে হোলি আর্টিজানের তদন্ত নাটকীয় মোড় নেবে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই, গুলশানের হোলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বিদেশিসহ ২২ জন সাধারণ মানুষ এবং ৫ জন হামলাকারী মারা যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা। হামলায় ৯ জন ইতালীয় নাগরিক, ৭ জন জাপানী, একজন মার্কিন, একজন ভারতীয় এবং ৬ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনার পর এক বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত চার্জশিট প্রদান হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, গত জুলাইয়ে এই বিয়োগান্তক ঘটনার বর্ষপূর্তিতে আশ্বাস দিয়েছেন চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে। বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে অন্তত তিনটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এই ঘটনার তদন্ত করছে।
সম্প্রতি এটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা এমন কিছু তথ্য পেয়েছে, যাতে এই ঘটনার সঙ্গে বিএনপি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সংশ্লিষ্টতা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জঙ্গি হামলা নয় বরং জঙ্গি হামলার আবয়বে একটি বড় নাশকতা সৃষ্টি করে সরকার পতনই ছিল এই সন্ত্রাসী আক্রমণের মূল উদ্দেশ্য-মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থাটি।
ওই সংস্থাটির কাছে এরকম কিছু তথ্য ও উপাত্ত হাতে এসেছে, যাতে দেখা যাচ্ছে, সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সরবরাহে তারেক জিয়ার আর্থিক বিনিয়োগ আছে। যারা এদের সংগঠিত করেছিল, তাদের সঙ্গে তারেক জিয়ার মনোনীত ব্যক্তি বৈঠক করেছিল।
দুবাইয়ে যে অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন হয়েছে, সেই একই অ্যাকাউন্ট থেকে লন্ডনে তারেক জিয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে।
ওই গোয়েন্দা সংস্থার মতে, তারেক জঙ্গিদের ব্যবহার করেছেন, তাঁদের অর্থ জুগিয়েছেন। জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল একরম আর তারেক জিয়ার লক্ষ্য ছিল অন্যরকম। দুই লক্ষ্য কাজ করলেও তার অভিন্ন কাজটি করেছেন। গোয়েন্দা সংস্থা, এ সম্পর্কে অনেকগুলো সূত্র দিয়েছে। এই সূত্র মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে হোলি আর্টিজান তদন্তের।