টিআইএন॥ রোহিঙ্গা সমস্যা দেখতে বিশাল বহর নিয়ে খালেদা জিয়ার কক্সবাজার যাত্রা ও কিছু মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমাদের গ্রামে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে, ”পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়”। যিনি (খালেদা জিয়া) দেখেও দেখেন না, তাকে দেখাবার কিছু নেই।” গত বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন তিনি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত সম্পূরক প্রশ্নটি উত্থাপন করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন, থাকতে পারেন নাই। দেড় মাসে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে বিতারিত করেছিল। ক্যান্টনমেন্টের দখলকৃত বাড়ি রক্ষায় আদালতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন। বাড়ি হারিয়ে অঝোর ধারায় কাঁদলেন, বাড়ি আর রাখতে পারলেন না। এমন বহু ব্যর্থতার ইতিহাস বিএনপি নেত্রীর আছে। আসলে মানবিক কোনও গুণাবলীই বিএনপি নেত্রীর মধ্যে নেই।”
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন তা নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যিনি (খালেদা জিয়া) সব কাজেই ব্যর্থ, তিনি তো অন্যর সব কাজে ব্যর্থতাই দেখবেন। বহু ব্যর্থতার ইতিহাস তার আছে। ব্যর্থতা ছাড়া সফলতা দেখার মতো মানসিকতা তো তার নেই। যার চক্ষু থাকতেও অন্ধ তাকে দেখাবে কে?” তিনি বলেন, “বিশ্বের সব দেশ বাংলাদেশের এমন মানবিক অবস্থানের প্রশংসা করেছে। সেইসঙ্গে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য বিশ্ববাসী জোরালোভাবে তৎপর রয়েছে। ”
দুর্গত রোহিঙ্গাদের দেখার নামে খালেদা জিয়ার বিশাল বহর নিয়ে কক্সবাজার সফরের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা মানবিক কারণে অসহায়-নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। এটা হচ্ছে একটা অনুভূতির ব্যাপার, এটা হচ্ছে একটা বোধের ব্যাপার। কিন্তু বিএনপির সেই বোধটা আছে কিনা, সেটাই প্রশ্ন। ” তিনি বলেন, “বিএনপি নেত্রী সেখানে গেলেন যেভাবে সাজসজ্জা নিয়ে ঢোল-বাদ্য, হাতি-ঘোড়া সবই নিয়ে উনি কক্সবাজার গেলেন। এটা দেখে সবার প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, বিএনপি নেত্রী কী কোনও দুর্গত মানুষকে দেখতে গিয়েছিলেন, নাকি সেখানে বরযাত্রী হিসেবে গেলেন?”
সংসদ নেতা বলেন, বিএনপি নেত্রীর দুর্গত মানুষকে দেখা নয়, মনে হয়েছে একটা শোডাউন করা এবং গাড়ি-টারি সব কিছু দেখানোর ওপরই বেশি দৃষ্টি ছিল তাদের। কারণ এটাতো বাস্তবতা যে, মানবিক কারণে এদের সহযোগিতা করা বা পদক্ষেপ নেওয়া- এই অভ্যাস তো তাদের (খালেদা জিয়া) নেই। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এটাই আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। বিএনপি নেত্রীর কক্সবাজার যাত্রা যতটা লোক দেখানো জন্য ছিল, সেখানে আন্তরিকতা ততটা ছিল না- এটা সবাই জানে, বোঝে। ”
রোহিঙ্গা সমস্যা জিয়াউর রহমানেরই সৃষ্টি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা তাদেরই সৃষ্টি, তার (খালেদা জিয়া) স্বামী এই সমস্যা সৃষ্টি করে গেছেন। সব কিছুতেই সমস্যা সৃষ্টি হোক সব সময় তারা চায়। বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। ঘোলা পানিতে কীভাবে মৎস্য শিকার করবে তাতেই ব্যস্ত। কাজেই বিএনপি নেত্রীর বক্তব্য আমি ধর্তব্যে নিই না। আমরা মানবিক দিক থেকে সবকিছু বিবেচনা করি।”