নূর-ই-আলম ফয়সল॥ কথা বলছি অডিট নিয়ে। “অডিট” শব্দটি শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি! আর যিনি অডিট করেন সেই অডিটর কে আমরা সবাই হয় বাঁকা চোখে দেখি না হয় তার ভয়ে ভীত থাকি যতক্ষণ না অডিট শেষ হয়। মজার ব্যাপার হল- এ সুযোগে অডিটের জুজুর ভয় দেখিয়ে অফিসের জুনিয়রদের দিয়ে অপ্রয়োজনীয় কাজ করিয়ে নেই আমার মত অনেকে।
অডিট আসলে কি: আমার মতে অডিট হল কোন প্রতিষ্ঠানের বা বিভাগের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে যেতে তার বিপরীতে থাকা সার্বজনীন স্ট্যান্ডার্ড এবং অত্র প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ পলিসি মোতাবেক তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে কিনা তা নিশ্চিত করা এবং যদি সে মোতাবেক না হয় তবে প্রকৃত / মূল কারন চিহ্নিত করে তার উন্নয়ন সাধনে সুপারিশ করা।
এবার আসি একজন অডিটরের অডিট চলাকালীন মানসিকতা ও ভূমিকা কেমন হওয়া উচিৎ :
১. তিনি অডিট করতে যাবেন শুধু সমস্যা / ভুল ধরতে নয় বরং সমস্যা বা ভুলের কারন ও প্রতিকার জানিয়ে সিস্টেম উন্নয়ন করতে সহযোগিতা করা।
২. নিজের মধ্যে পুলিশিং ভাব না এনে সেবার ভাব আনা।
৩. অডিটি কে যথাযথ কম্ফর্ট দেয়া। নিজের খুঁত খুঁত ভাব পরিহার করা।
৪. অডিট চলাকালীন আচার আচরনে শতভাগ বিনয়ী ভাব দেখানো।
৫. অন্তরিক ভাবে অডিট শেষ করা যাতে অডিটি বুঝতে পারে আপনি অডিট করেছেন তাদের সমগ্র ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের জন্য।
একজন অডিটির মানসিকতা ও ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত :
১. অডিটর কে বিধাতা ভেবে ভয় না পাওয়া। তা হলে আপনি সব গুলিয়ে ফেলবেন। মনে রাখবেন- তিনিও আপনার মতই একজন পেশাজীবী।
২. অডিটের ব্যাপ্তি / ক্ষেত্র সম্পর্কিত সম্যক ধারনা থাকা। এর ফলে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হবে।
৩. কোন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করার আগে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিকে একবার দেখিয়ে নিন আপনি সঠিক / আপডেটেড তথ্য উপস্থাপন করছেন কি না।
৪. অযথা তথ্য / বাড়তি কথা কিংবা অপ্রাসঙ্গিক কথা পরিহার করুন; পাছে কেঁচো খুঁড়তে আবার সাপ বেরিয়ে না আসে।
৫. নিজের মাঝে জানার ক্ষুধা আরো জাগ্রত করুন। অডিটরের কথায় বিরক্ত না হয়ে পজিটিভলি নিন। মনে রাখবেন তিনি একজন এক্সপার্ট এবং আপনার প্রতিষ্ঠানে এসেছেন পেশাদারিত্ব নিয়ে।
লেখকঃ ইসি ও ফেলো মেম্বার, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট।