রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবান

বাআ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার জন্য জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি তাঁর আহবান পুণর্ব্যক্ত করেছেন।                   world pretuered by mayanmar gv for ruhinga pm
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বিতাড়িত জনগণকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে।’ জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ফেকিতামোলয়া কাতোয়া ইউটোয়িকামানু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছে। তবে, তাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য আশ্রয় প্রদান কোনভাবেই সম্ভব নয়।’ বাংলাদেশে এ বছর মারাত্মক বন্যা হয়েছে। এসবের পরও রোহিঙ্গা সমস্যা দেশের জন্য অতিরিক্তি বোঝা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহিংসতার শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এদেশে চলে এসে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় গ্রহণ করায় জেলার স্থানীয় জনগণ এমনিতেই সমস্যায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তাঁর সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন এবং পল্লী উন্নয়নের বিষয়গুলো। কৃষির উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাঁর সরকার গবেষণা খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য অর্জনে পরিকল্পনা মোতাবেকই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ নির্ধারিত এমডিজি লক্ষ্যমাত্র অর্জনে তাঁর সরকারের সাফল্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এসডিজিতে বাংলাদেশ এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের প্রশংসা করে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার পথে এগুলেও বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশে প্রদত্ত তাদের সহযোগিতাসমূহ অব্যাহত রাখবে। এ বিষয়ে আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে একটি দেশের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ জাতিসংঘের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টারই ফসল।
তিনি বলেন, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে একটি দেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলেই সহযোগিতা বন্ধ হতে পারে না, কারণ জাতিসংঘের কোন পদক্ষেপই শাস্তিমূলক হবে না।
আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, এ বিষয়ে আইন-কানুন নিয়ে পুনর্বিবেচনা চলছে যে, একটি দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার পরও তাকে কিভাবে সহযোগিতা প্রদান করা যায়। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্যাকেজ আকারে সহযোগিতা প্রদান করতে পারে দেশটির চাহিদা এবং ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে।
প্রেস সচিব ব্যাখ্যা করে বলেন, এর আগে যে সব দেশ স্বল্প উন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে সেসব দেশকে জাতিসংঘ একটি নীতির আওতায় সহযোগিতা প্রদান করতো।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.