সম্মানিত মেডাম আপনাকেই বলছি

শাহীন রাকিব ॥ আবারো কি আপনি আরেকটা ভুল করলেন ? আপনি এই দেশের দুই বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী । সরকার বিরোধী দলের নেত্রী । সেই আপনি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত  নিতে গিয়ে বারবার ভুল করছেন ।                                                                                              kaleda wrong desition
একজন দুইজন নয় গুনে গুনে ৭৩ জন রাজনৈতিক উপদেস্টা আছেন আপনার রাজনৈতিক দলের উপদেস্টা কমিটিতে । জানিনা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে উনারা আপনাকে কি সিদ্ধান্ত  দিয়ে থাকেন ? তার পরেও বলবো দুস্টু গরুর চেয়ে শুন্য গোয়াল ঘর অনেক ভালো কৃষকের জন্য ।
কেন জানি আজ আমাদের কাছে মনে হচ্ছে রাজনৈতিক মেধা আর প্রজ্ঞা না থাকলে যা হয়ে থাকে একজন রাজনীতি বিদের ঠিক যেন তাই হচ্ছে আপনার বেলায় । আনিসুল হক কি শুধুই একজন আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন ? উনি কি আপনার এলাকার যেখানে আপনি বাস করেন, যেখানে আপনার রাজনৈতিক অফিস সেখানকার নির্বাচিত মেয়র ছিলেন না ? আপনি কি শুধুই নিজ দলের নেত্রী নাকি এই দেশের জনগণের নেত্রী ? কোন পরিচয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ?
আনিসুল হকের মরদেহ দেখতে গেলে আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এর কি ক্ষতি হত বলে আপনি আশঙ্কা বোধ করেছিলেন? দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে গেলে তার ভিতর রাজনৈতিক সহনশীলতা, সৌজন্যতা, অন্য দলের নেতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয় এই জ্ঞান টুকু আপনার ছিল বলেই আমাদের ধারনা ছিল । আপনি মেডাম আপনার আচরন দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন এই শিক্ষায় শিক্ষিত আপনি নন ।
এই আনিসুল হক কিন্তু শুধুই মেয়র ছিলেন না । উনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় টিভি ব্যাক্তিত্ব, দেশের একজন উচু মানের সফল ব্যবসায়ী এবং দেশের ব্যবসায়ী দের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর নির্বাচিত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান । এই শীর্ষ সংগঠনের নেতা থাকা কালীন এই আনিসুলের হকের সাথে কোথাও না কোথাও বসে সভা করেছেন একসাথে বসে চা পান করেছেন । এমন নয় যে এই আনিসুল হক আপনার পরিচিত ছিলেন না ? ঢাকার নগর পিতার মরদেহ দেখতে কে যায় নি বলুন ? দলমত নির্বিশেষে সবাই ছুটে গিয়েছে নগর পিতা আনিসুল হকের বনানীর বাসায় । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুর করে একজন সাধারণ রিক্সা চালক কে যায় নি বলুন ? জানাজার নামাজে দেখলাম আওামীলীগ এর তোফায়েল আহমেদ আর ওবায়দুল কাদেরের মাঝে দাঁড়িয়ে জানাজার নামাজ আদায় করলেন আপনার দলের ব্যারিস্টার নেতা মওদুদ আহমেদ !! আসলে মেডাম ভদ্রতা, সৌজন্যতা, অন্যকে সম্মান দেয়া শিখতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রীর দরকার পরে না সামান্য এইট পাশ হলেই চলে । আর সেই সাথে থাকা দরকার পারিবারিক শিক্ষা ।
সম্মানিত মেডাম অপ্রাসঙ্গিকভাবে আর একটা কথা না বলেই পারছিনা । আপনি আগামী নির্বাচনে সরাসরি সেনাবাহিনী চান আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সেই সাথে দাবী করেছেন সেনাবাহিনী কে বিচারিক ক্ষমতা দেবার জন্য । অথচ এই কিছুদিন আগেই সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আপনাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দাওয়াত পত্র দেবার পরেও আপনি সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি । সেই অনুষ্ঠানে দেশের সকল দলের প্রধানরা গিয়েছিলেন শুধু মাত্র আপনি ছাড়া । দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী তো সকল রাজনীতির উর্ধে । তাহলে কি চিন্তা ভাবনা থেকে আপনি নিজেকে বিরত করলেন তাদের কাছে যেতে ? আপনি সেনাবাহিনী কে অবজ্ঞা করবেন আবার তাদের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে চাইবেন এই চিন্তা চেতনা আপনাকে সামনে এগিয়ে না দিয়ে বেকফুটে ঠেলে দিয়েছে এটা মনে হয় সেই ৭৩ জন বুদ্ধিজীবী আপনাকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় নি ? আর একটি কথা না বললেই নয় সম্মানিত মেডাম তা হোল বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান কিন্তু সদ্যপ্রয়াত নগরপিতা আনিসুল হকের আপন ভাই ।
সম্মানিত মেডাম পরিশেষে আবারো বলছি জীবিত কিংবা মৃত কাউকে সম্মান দেখাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রীধারী হওয়া লাগে না । সামান্য এইট পাশ হলেও চলে যদি তার থেকে থাকে পারিবারিক শিক্ষা । আপনার সুস্থতা আর সুমতি কামনা করছি । ভালো থাকবেন সম্মানিত মেডাম ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.