ডিসেম্বর মানেই সুখের, উল্লাসের। এই ডিসেম্বরকে ঘিরেই আবর্তীত হয়েছে অনেক দু:খের পর ফিরে পাওয়া স্থিতির, শান্তির, আনন্দের। ৪৭এ পা দিয়েছে আমাদের এই বাংলাদেশ এবং এর বিজয়। কি পেয়েছি আর কি হারিয়েছি এই ৪৭ বছরে তার হিসেব নাই করলাম। পৃথিবীতে এসেছিলেন আল্লাহর আশ্চর্য পাক রূহের কুদরতীতে সৃষ্টি ঈসা আল মসীহ এই ডিসেম্বরেই। এই ডিসেম্বরেই নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জয়ী হয় বাংগালী এবং অর্জিত হয় বিজয় আর রূপ লাভ করে নতুন এক দেশ যার নাম বাংলাদেশ।
আজ আমরা ৪৭ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি সাম্যের ভিত্তিতে বিদ্যুতের গতিতে উন্নতির সুপানের সুউচ্চ এক প্রতিযোগীতায় রক্তহরণের মাধ্যমে ছিনিয়ে আনা স্বর্ণজ্জ্বোল অধ্যায়ের সিংহাসন। যা আজ অধিষ্ঠিত এবং এই সিংহাসনেরও আর উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার প্রতিনিয়ত সংগ্রামের রূপগাথা কাহিনীতে।
বিজয় আসলেই ধরা ও ছোয়ার বাইরে। কিন্তু বিজয়ের আনন্দ উপভোগের। ১৯৭১ সালে কি শুধু পাকিস্থান থেকে বাংলাদেশকে ছিনিয়ে এনে স্বাধীনতার স্বাধ উপভোগের ও নামকরণেরই বিজয় হয়েছিল নাকি আরো কিছু ছিল এই বিজয়ের তাৎপর্যে। হ্যা ছিল এক দৃষ্টান্ত: মহান এক নেতার আহবানে সারা দিয়ে দেশবাসী সামষ্টিগতভাবে একত্রিত হয়ে একটি উদ্যেশ্যে ঝাপিয়ে পড়ে, বিশ্বাস ও আস্থা রেখে মনোবলে উদ্ধিপ্ত হয়ে সকল ভেদাভেদ ভুলে, দলীয় সংকীর্ণ চিন্তার উর্ধে উঠে বংশ, গোত্র ও উঁচু-নীচু ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যের সুতিকাগারে নিমজ্জিত হয়ে জয় বাংলা মুলমন্ত্রে শেখ মুজিবের আহবান ও ত্যাগের শিক্ষার দিক্ষা নিয়েই নয়মাসে ছিনিয়ে এনেছিল সোনার হরিণ নামক বাংলাদেশ।
সেদিন দেখিয়ে দিয়েছিল ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ফল। তারপর যেন সে ঐক্যে ফাটল ধরতে শুরু করে এবং বিভাজনে বিভাজিত হয়ে বহু মত ও পথে রুপান্তরিত হয়ে ১৬ই ডিসেম্বরের চেতনায় ছেদ গটে এবং তাৎপর্যে ফাটল দেখা দেয়। আর এই ফাটলে ঘুর্ণায়মান হয়ে ৩০টি বছর চলে বা হারিয়ে যায় বাংলাদেশ নাম রাষ্ট্রের সদ্য পা দেয়া ৪৭ থেকে। যে গতিতে আমরা বিজয় এনেছিলাম এবং এর তৎপরবর্তী কার্যক্রম হাতে নিয়ে উন্নতি ও উন্নয়নের চাকা সচল করেছিলাম সেই চাকা ৩০টি বছরে সামনে না চলে পিছনের দিকে সমধিক গতিতে পিছনে ফিরে যেতে থাকল। যার ফলশ্রতিতেই আমরা তলাবিহীন ঝুঁড়িতে পরিণত হয়েছিলাম, পেয়েছিলাম গরীব বা মিছকিনের উপাধী। এই গরীব উপাধি কিন্তু বহিবিশ্বের কেউ দেয়নি আমরা নিজেরাই দিয়েছিলাম এবং স্বেচ্ছায় নিয়েছিলাম। সেদিন আমাদের সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজেই গরীব বলে দেশের মানুষকে মর্যাদায় ছোট করেছিল এবং তার পুর্বের সৈরশাসকগুলোও ঐ একই কাজ করে আমাদের বিজীত অগ্রসরমান জাতিকে দাফন এর ব্যবস্থা করেছিল।
আজকে আমাদের সৌভাগ্য বর্তমানের হাত ধরে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং ফিরে পেয়েছি সেই হারানো গতি এবং ১৬ই ডিসেম্বরের চেতনা এবং এর গতি ও তাৎপর্যের ধারাবাহিকতা। ৯মাসের নিরস্র বাঙালীর যুদ্ধের ফল বিজয় এবং ৯ বছরের শাসনের ফল আজকের মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর। উন্নয়নের জোয়ার ও বিদ্যুতের গতিতে এগিয়ে যাওয়া সবই আজ ধারাবাহিকতা। বঙ্গবন্ধুর পরে যিনি এই কান্ডারী এবং উদ্ধারকারী তিনি হলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মাদার অব হিউমিনিটি বলে এবং সততায়, কর্মনিষ্ঠতায় ও নেতৃত্বে বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়ে আমাদের হারানো মর্যাদাকে পুনস্থাপিত করে ক্রমন্নোতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। একটি কথা বলে রাখছি এই উন্নতির এবং এর ক্রমবিকাশ ও পরিকল্পনা এমনকি বাস্তবায়নে আরেকজন নি:স্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি হলেন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয়।
এই উন্নয়ন ধারাবাহিকতা এবং বিজয়ের তাৎপয্য ও গতি প্রবাহ ধরে রাখার জন্য জাতিকে সজাগ থাকতে হবে। ঐক্যে কোন ফাটল বা বিভাজন সৃষ্টি করা যাবে না। আর কোন বছর আমাদের বাংলাদেশের জীবন থেকে নষ্ট হউক আমরা তা চাইনা। তাই আজকের এই বিজয়ের দিনে যেমন দল মত নির্বিশেষে এক হয়েছি তেমনি করে আগামীর উন্নয়ন ধারাবাহিকতা এবং গতিময়তা ধরে রাখতে সোচ্ছার ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে দৃঢ় অঙ্গিকারাবদ্ধ হতে হবে। আমাদের বহু মত ও পথ এবং দল থাকবে কিন্তু দেশের প্রয়োজনে, উন্নয়নের প্রয়োজন বিজয়ের আনন্দের গতি রক্ষার প্রয়োজনে এমনকি বিজয়ের আনন্দ ও স্বাধীনতার সুফল ভোগের সাথে এর তাৎপর্যের দিকে খেয়াল রেখে অগ্রসর হতে হবে। শত্রুরা বা স্বাধীনতা বিরোধীরা এমনকি ব্যক্তিগত ফায়দা হাসিলকারীরা তাদের কুটচালের চক্রান্ত অব্যাহত রেখে যাচ্ছে যাতে করে আবারো বিপর্যয় সৃষ্টি করে দেশকে পুর্বের উল্টো গতিতে পরিচালিত করতে পারে। তাই আজকের শুভক্ষণে এবং তাৎপর্যমন্ডিত দিনে সকলের নিকট আবেদন গর্জে উঠুন আরেকটিবার বঙ্গবন্ধু তনয়া যোগ্য উত্তরসূরীর আহবানে এবং এগিয়ে নিয়ে যান নিজের সুবিশাল পরিধিকে।
এই বিজয়ের মাসেও দেখা যায় মিথ্যার ফুলঝুড়ি বা হুমকি ও ধমকি। সত্য কি তা কিন্তু মানুষ জানে এবং আগামিতেও জানবে। দেশ স্বাধীনের পুর্বেও আপনারা ছিলেন এবং বিরোধীতা করেছেন কিন্তু ফল কি তাতো দেখেছেন। তাই বলতে চাই আর ঐ বিরোধীতা না করে মিথ্যাকে পুুঁজি না করে বরং সত্যোর আহবানে ও এর ছায়াতলে নিজেদেরকে নিয়োজিত করুন। আর দেশ ও উন্নয়ন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত না হয়ে বরং সেই ১৬ই ডিসেম্বরের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হউন। ১৬ই ডিসেম্বরে ছিলনা কোন দলীয় ভেদাভেদ ছিল শুধু ঐক্যের নি:শর্ত বন্ধন। তাই ১৬ই ডিসেম্বরের পরে সৃষ্টি হওয়া দল ও মত এবং পথের সকল কাটা দুর করুন এই বিজয়ের আনন্দে এবং উন্নয়নের ঐক্যে নিজেদেরকে সামিল করুন। দলীয় সংকীর্ণতার শীকলবাহি জোয়াল ভেঙ্গে ফেলুন। বঙ্গবন্ধুর চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করুন। এই আমাদের বিজয়ের আকুতি এবং মহামিলনের কৃর্তী। যা ছড়িয়ে পড়ছে এবং আগামীতে পড়–ক এই কামনায় আমাদের ক্ষুদ্র কলমের ক্ষুদ্র ফোটার বিশাল এক চাওয়া মাত্র। এই চেতনাকে পুঁজি করে এগুলে অচিরেই বিশ্ব নেতৃত্ব বাংলাদেশের উপর বর্তাবে আর আমরা সেই নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিপূর্ণ করে এগিয়ে নিয়ে যাব। এই হউক আমাদের আজকের প্রত্যয়দিপ্ত অঙ্গিকার।