তাজুল ইসলাম হানিফ॥ গত ৫ই ডিসেম্বর, সাংবাদিক প্রতীক বর্ধন এর প্রথম আলোতে লেখাঃ “ক্যাডার-নন ক্যাডারে কী হবে যদি শিক্ষার মান না বাড়ে”? লেখাটি বেশ আলোচিত, তবে বেশ ইনফরমেটিভ মতামত দিয়েছেন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক আমীরুল আলম খান স্যার (সাবেক চেয়ারম্যান, যশোর শিক্ষা বোর্ড)। স্যারের মতামতটি তুলে ধরছিঃ-
বাংলাদেশে যে ২৮টি বিসিএস ক্যাডার আছে তা ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের লক্ষে বৃটিশদের সৃষ্টি; কিন্তু খোদ গ্রেট বৃটেনে এই ব্যবস্থা কোন কালে চালু করা হয় নি। ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস ১৯৪৭ পরবর্তীকালে পাকিস্তানে সিএসপি এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বিসিএস আখ্যায় অভিহিত হয়। এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় সবচেয়ে মেধাবীরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। পরের পছন্দ তত্ত্বীয় বা ফলিত বিজ্ঞান। তার চেয়ে কম মেধাবীরা মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় নাম লেখান। মজা এটা যে, সবচেয়ে মেধাবী যে শিক্ষার্থী এমবিবিএস পাস করে ডাক্তার হন তিনি বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে চাকুরি নিয়ে বড় জোর স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন ডাইরেক্টর হতে পারেন। অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী যারা বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারে নিয়োগ পান তারা দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের পায়ের তলে পিষে তরতর করে উপরে উঠে যেতে পারেন এবং সকলের ছুড়ি ঘুরাতে পারেন। পরিসংখ্যান নিলে দেখা যাবে যারা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেন তাদের ৯৮ ভাগের প্রথম পছন্দ প্রশাসন। এরপর কাস্টমস, পুলিশ, কর, ইত্যাদি নানা ক্যাডার। পছন্দের শেষ দিকে থাকে শিক্ষা। এমন ঘটনা নজিরবিহীন যে, প্রশাসন, পুলিশ, কর, কাস্টমস এমন পদে নির্বাচিত কেউ শিক্ষা ক্যাডারে ফিরে এসেছেন। কিন্তু এমন নজির হাজার হাজার যে, সুযোগ থাকলে শিক্ষা থেকে প্রশাসন, পুলিশ, কর বা কাস্টমসে যেতে দশ পায়ে খাঁড়া থাকেন সরকারি কর্মকর্তা হতে ইচ্ছুক বিসিএস ব্যক্তিরা। এর সরল অর্থ এই যে, বিসিএসে অন্তত শিক্ষা ক্যাডারে উতরে গেলেই নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন যারা অর্থাৎ তলানিরাই শিক্ষকতায় আসেন। ইতিহাসে এমন নজির সামান্য কয়েকটি আছে যেখানে সুভাস বসুর মত আইসিএস উত্তীর্ণ হয়েও সরকারের চাকর হন নি। বাংলাদেশে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বোধ করি একমাত্র বিসিএস যিনি প্রশাসন ক্যাডারের চাকরি ত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। হালে দেশে বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার, নন-ক্যাডার ইস্যুটি এমনভাবে আলোচিত হচ্ছে যেন কেবলমাত্র বিসিএস পাস করা ব্যক্তিই বিদ্যাদিগগজ পন্ডিত। এর বাইরে যারা শিক্ষকতা করেন তারা সকলেই অকাট মূর্খ! একটু ইতিহাসের পাতায় চোখ বুলালে আমরা কিন্তু ভিন্ন চিত্র পাব। ১৯৬৭ সালে এদেশে কিছু নামকরা কলেজকে পাকিস্তান সরকার প্রাদেশিকরণের (এখন যাকে জাতীয়করণ বলা হচ্ছে) প্রস্তাব করলে যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজের ছাত্র-শিক্ষকরা মিলে তার প্রতিবাদ করেছিলেন। তাদের যুক্তি ছিল, প্রাদেশিকরণের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষকদের চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ ও শিক্ষা সংকোচন। সেই ১৯৬৭সালে যে সকল শিক্ষক সহকারি অধ্যাপক হিসেবে আত্তীকৃত হয়েছিলেন তারা ততদিন পর্যন্ত আর পদোন্নতি পান নি যত দিন না বাংলদেশে প্রত্যেক জেলা শহরে একটি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়। কিন্তু সে পদোন্নতিও বাক্সবন্দি থাকল ততদিন যতদিন না প্রত্যেক জেলা শহরে একটি মহিলা কলেজ জাতীয়করণ করা হয়। এরশাদ আমলে অনেক উপজেলা পর্যায়ে কলেজ জাতীয়করণ হবার পর বিসিএস করা শিক্ষকদের পদোন্নতির কপাল খুলে যায়। দেখা যায় নতুন জাতীয়করণ করা ‘স্বেচ্ছা’ কলেজে পদ দখলে ‘ব্রাহ্মণ’ বিসিএসদের দৌড়ঝাঁপ। এ যাবত কালে কখনও একসাথে এত বেশি কলেজ জাতীয়করণের আওতায় আসে নি। একসাথে প্রায় ২৮৫টি কলেজ জাতীয়করণে সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করবেন এই বিসিএস পাস করা শিক্ষকগণই। বছরের পর বছর খেয়ে, না-খেয়ে সব শিক্ষক এই সব বে-সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা ও আজকের পর্যায়ে উন্নীত করেছেন বিসিএস পাস না করার জন্য তার চাকুরি জীবনের অর্ধেক বাদ যাবে। ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক এক প্রকার খালি হাতেই অবসরে যাবেন। তাদের ব্রত, শ্রম, নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগে যে কলেজটি গড়ে উঠেছে তার প্রতি কোন সম্মান দেখাতে ব্যর্থ হব কেন আমরা ??? শুধুই স্বার্থপরতায় কী আমরা এমন বিবেকবর্জিত হতে পারি, না হয়া উচিত ? এই সব কলেজ জাতীয়করণ করার ফলে সেখানে উচ্চতর পদে পদায়িত হবার এবং পরবর্তী উচ্চতর পদে পদোন্নতি পাবার এক সোনালী সুযোগ এসে হাজির বিসিএস পাস করা নবীন-প্রবীণ শিক্ষকদের দরজায়। কিন্তু যে জঘন্য ভাষায় বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে বিসিএস শিক্ষকগণ কথা বলছেন তা শালীনতার সকল সীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে বলে মনে করি। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক যে কথাগুলো বলছেন শিক্ষক হিসেবে যারা সম্মানিত। কোন শিক্ষিত শ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে জাতি এ ধরনের নিম্নরুচির বক্তব্য আশা করে না। ক্যাডার-নন-ক্যাডার ইস্যুটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। কাজেই এ বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন বোধ করি না। শুধু বিবদমান দুই পক্ষকেই অনুরোধ করব, শিক্ষক হিসেবে আমরা যেন একে অপরকে, সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করি। প্রতীক বর্ধন তাঁর লেখায় যে মত প্রকাশ করেছেন সেটা নিয়ে বিসিএস শিক্ষক ভাইয়েরা যে ভাষায় সমালোচনা করেছেন নিতান্তই গর্হিত। কারো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্বিত হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভেঙে পড়ে। শেষ কথাটি এই যে, আমরা কি শিক্ষক হতে চাই, না-কি ক্যাডার হতে চাই? আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস, একটি আধুনিক, ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত করা আশু প্রয়োজন।
এই প্রথম দেশের শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রস্তাব দেখলাম। শিক্ষাক্ষেত্রে গুণগত মানোন্নয়নে বিসিএস ক্যাডার বহির্ভূত বিশেষ নিয়োগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সেখানে তিনিই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন যার শিক্ষাবিজ্ঞানে কোন স্বীকৃত ডিগ্রি আছে। শিক্ষাবিজ্ঞানে স্বীকৃত ডিগ্রি ব্যতিরেকে যারা শিক্ষকতা করছেন তাদের পদোন্নতির জন্য এই ডিগ্রি অর্জন বাধ্যতামূলক করা আশু প্রয়োজন। তা না করে চার মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিয়ে আর একটা সেলেকশন গ্রেড পরীক্ষায় পাস করে যারা পদোন্নতি নিচ্ছেন তারা আর যা-ই হোক শিক্ষাক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে কোনই অবদান রাখছেন না। কে বিসিএস পাস করেছেন, কে বিসিএস পাস করেন নি শিক্ষা ক্ষেত্রে তা নিতান্তই অবান্তর প্রশ্ন। এমনকি পিএইচডি ডিগ্রিও গ্রাহ্য হওয়া অনুচিত যদি তার শিক্ষাবিজ্ঞানে মৌলিক জ্ঞান না থাকে। আমাদের শিক্ষা বিভাগে যে ব্যবস্থা চালু আছে তা কাউকেই শিক্ষক বানায় না, তৈরি করে অতি নিন্ম মানের কেরানি। আধুনিক বিশ্বে এ ধরনের শিক্ষক দিয়ে বিশ্বমানের শিক্ষা দেয়া অসম্ভব। দেশে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালুর পর এত বছরে তা কোন সুফল দিতে পারে নি তার মূল কারণ এখানেই। সৃজনশীল পদ্ধতিতে যারা পাঠদান করতে না জানেন, তারা কী করে সৃজনশীল শিক্ষক হবেন, পাঠদান করব্নে, সৃজনশীল প্রশ্ন করবেন বা শিক্ষার্থীর উত্তর সঠিকভাবে মূল্যায়ন করবেন? আবারো বলছি, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মূল সমস্যা বিসিএস ক্যাডার হওয়া, না- হওয়া নয়, সমস্যার মূলে রয়েছে শিক্ষাবিজ্ঞানে শিক্ষকদের অজ্ঞতা। শিক্ষার উন্নয়নে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়ের স্বার্থ ও কল্যাণ একই সঙ্গে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। অন্যথায় যা হবে তা হলো জাতীয় মেধার স্রেফ অপচয়।
বিভাজনের অপচয়ে বাংলাদেশ ক্রমশঃ নিঃশ্বেষ হতে চলেছে। এর শেষ কোথায় কেউ জানিনা। ক্যাডার নন-ক্যাডার ইস্যুর যে সমাধান আপাতত হতে যাচ্ছে তা কোথায় যেয়ে দাঁড়াবে সেটাও অজানা। একটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হল ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকগণ সরকারি কর্মচারী আইনের অধীন। এই আইনে একজন শিক্ষকের স্বাধীন মতামত প্রকাশ ও কোন নির্দিষ্ট ঘটনার স্বাধীন ব্যাখ্যা দেবার স্বাধীনতা অস্বীকৃত। কিন্তু শিক্ষক হচ্ছেন সমাজ, রাষ্ট্রের যৌক্তিক ব্যাখ্যাদানকারী ব্যক্তি হবেন এটাই প্রত্যাশিত। শিক্ষক যখন সরকারি ক্যাডারভুক্ত হন তখন তিনি স্বেচ্ছায় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাপ্য স্বাধীনতাকে বিসর্জন দেন। এ দেশে শিক্ষকের স্বাধীনতার উপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের বহু খবর আমরা জানি। যে সমাজে শিক্ষক নিজেকে দাসত্ব-বন্ধনে নিজেই আবদ্ধ হন বা হতে চান, সে সমাজ খুব বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারে না। বেসরকারি কলেজ সরকারের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর শিক্ষকের পদমর্যাদা, আর্থিক সুবিধা ইত্যাদির যে বৃদ্ধি ঘটে তার কত শতাংশ শিক্ষার্থী বা দেশবাসী পায় তার উপর কোন গবেষণা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এটা জানি এখানে ব্যক্তি শিক্ষক যতটুকু লাভবান হন শিক্ষার্থী তার সিকিভাগও পায় না। তার চেয়েও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে, ক্যাডার-শিক্ষকদের পদোন্নতির পদ্ধতি সর্বাংশে অগ্রহণযোগ্য। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে প্রত্যেকের আইন আনুযায়ী পদোন্নতির যেমন সুযোগ থাকা উচিত, তেমনি প্রত্যেক স্তরে পদোন্নতির জন্য তার পরীক্ষা নেয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য বলে মনে করি। কিন্তু ক্যাডার শিক্ষকগণ পদোন্নতি পান চাকুরির জ্যেষ্ঠতার পরিমাপে, যা একটি দেশের মেধা অপচয়ের নামান্তর। সাম্প্রতিক সময়ে তার সাথে যোগ হয়েছে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি দেবার আব্দার। দেশে শিক্ষার মানের ক্রমাবনতির যে চিত্র ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে তার গতি রোধ করার জন্য মেধা ও যোগ্যতা পরিমাপের নতুন মানদন্ড নির্ধারণ করা আশু প্রয়োজন। শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নে কী কী দরকার সে সম্পর্কে শিক্ষক সমিতির দাবিনামায় আমি কোন সদর্থক শর্ত খুঁজে পাইনি। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাডার-নন-ক্যাডার প্রশ্নটি নতুন ঝামেলাই শুধু তৈরি করবে এবং কোথায় গিয়ে তা শেষ তা অনুমান করা কঠিন।
পরিশেষে আমি জোর দিয়ে বলি, কলেজ জাতীয়করণ ইস্যুতে আত্তীকরণ শিক্ষকদের রক্তক্ষরণ বন্ধ হোক। শ্রদ্ধেয় আমীরুল আলম খান স্যারের উদ্বেকের জায়গাটির দিকে নজর দেওয়া উচিত নয় কি ? ক্যাডার-ননক্যাডার বিভাজন না করে অতি দ্রুত জি.ও জারি হোক। শিক্ষায় ক্যাডার নন-ক্যাডার বিভাজন কাম্য নয়। কারণ সরকারি কলেজে নন ক্যাডারের কোন পদ নেই। বিগত বছরে যেভাবে ক্যডার পদে আত্তীকরণ হয়েছে সে ভাবেই হওয়া উচিৎ। মহামান্য হাইকোর্ট সেভাবেই নির্দেশণা দিয়েছিল। ক্যাডার পদে আত্তীকরণ হলে সমগ্র বাংলাদেশে নতুন করে ১৫০০০ হাজার ক্যাডার পদ সৃস্টি হবে। ফলে আগামী দিনে অনেক শিক্ষক শিক্ষা ক্যাডারে আসার সু্যােগ পাবে। আর বর্তমানে ক্যাডারে থাকা শিক্ষকদের উচ্চ পদে পদায়নের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
অন্যথায়, নন ক্যাডার করা হলে একই সেক্টরে দুটি ভিন্ন ক্যাটাগরির শিক্ষক থাকবে ক্যাডার ও নন ক্যাডার। যা কোন মতেই সম্ভব না। বরং এতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহতি উদ্যোগ জাতীয়করণ প্রক্রিয়া ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ব্যাহত হতে পারে। এবং শিক্ষার মূল লক্ষ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। জাতিয়করণকৃত ২৮৩ কলেজে ইতোমধ্যেই শিক্ষক সংকট তৈরী হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপজেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ জাতিয়করণ করার উদ্দেশ্য ব্যহত হবে। অপরদিকে, ২৮৩ কলেজের শিক্ষকবৃন্দ ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের সাথে সাথেই ২৮৩ জন অধ্যক্ষ এবং ২৮৩জন উপাধ্যক্ষ প্রশাসনিক পদ সৃষ্টি হবে। এসব পদে সিনিয়র ক্যাডার শিক্ষকরাই যোগদানের সুযোগ পাবেন। ৫৬৬ প্রশাসনিক পদের বিপরীতে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক পদে অধস্তনেরা পদোন্নতি পাবেন। অপরদিকে ২০ থেকে ৩০ বছর চাকুরী করেও একজন শিক্ষক জুনিয়র ক্যাডার সদস্য হিসেবে নিয়োগ পাবেন। দ্বিতীয়ত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিমুল্লাহ খন্দকার প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী কখনোই বদলী হতে পারবে না একথা বলেননি। তিনি ৫ বছরের মধ্যে বদলী হতে পারবেন না বলেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন এবং শিক্ষক নিয়োগে ক্রমশ অভিন্ন পদ্ধতিতে আসুক বাংলাদেশ। শিক্ষকদের মাঝে কৌলিন্য দূরিভূত হওয়া জরুরি। এমপিওভূক্ত, ক্যাডারভুক্ত, ননএমপিও, জনবল কাঠামোর অন্তর্ভূক্ত, জনবল কাঠামোর বহির্ভূক্ত -এসব কী? সবগুলোই এনটিআরসিএ অথবা পিএসসির অধীন করা হোক। একীকরণ হোক। যাবতীয় বৈষম্য নিপাত যাক।
মোঃ তাজুল ইসলাম (হানিফ), শিক্ষক ও সাংবাদিক।