বাআ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব মেধা শক্তি এবং ক্ষমতার ওপর আস্থা রাখার জন্য দেশের নারী সমাজের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নারী ও পুরুষ উভয়ে মিলেই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশের সকল নারী-পুরুষ দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করবে। মেয়েদেরকেও সবসময় এটা ভাবতে হবে, যার যে মেধা যার যে শক্তি সে যেন সেটাকে বিকশিত করে।’
প্রধানমন্ত্রী গত শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে রোকেয়া দিবস ও রোকেয়া পদক-২০১৭ বিতরণ উপলক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়িয়েই চলতে হবে। সেটা নিজেদের উদ্যোগে নিতে হবে, কারো মুখাপেক্ষী হয়ে নয়’। তিনি আরো বলেন, চলার পথে নানা বাধা থাকে, বাধা আসবেই সেই বাধাকে অতিক্রম করে আমাদের নারীদের এগিয়ে যেতে হবে।
সকল মা-বোনদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন,‘সকলের উচিত আমাদের সমাজে যারা একেবারে অবহেলিত জনগোষ্ঠী তাঁদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি করা এবং তাদের সহযোগিতা করা।’ সরকার প্রধান বলেন,‘ সকলে মিলে কাজ করলে নিশ্চয়ই এই সমাজ গড়ে উঠবে ।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। এছাড়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন। এ বছর বেগম রোকেয়া পদক প্রাপ্তদের মধ্য থেকে নিজস্ব অনুভুতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন মাজেদা শওকত আলী। এবছর পাঁচ জনকে বেগম রোকেয়া পদক ২০১৭-তে ভুষিত করা হয়। তাঁরা হচ্ছেন-সংগঠক মাজেদা শওকত আলী, মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদ (মরনোত্তর) চিত্রশিল্পী সুরাইয়া রহমান, লেখক শোভা রানী ত্রিপূরা এবং সমাজকর্মী মাসুদা ফারুক রতœা।
প্রধানমন্ত্রী গত বছরই বেগম রোকেয়া পদক বিতরণের সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন, এ বছর থেকে দু’জনের পরিবর্তে আরো বেশি সংখ্যক নারীদের বিশেষ করে যারা নিভৃতে নারী উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের মাঝে এই পদক বিতরণ করা হবে। ১৯৯৫ সাল থেকে প্রদান করা এই পদকে ভুষিত করে এ পর্যন্ত ৪৬ জন নারীকে সন্মানিত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ট্রেডে নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দিচ্ছি যাতে করে দেশে বিদেশে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। কাজেই আমরা চাই যে, সবাই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই দেশকে উন্নত করার কাজ করবে ।
নারীর ক্ষমতায়ণ ও উন্নয়নে তাঁর সরকারের ব্যাপক কার্যক্রমের সাফল্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একের পর এক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে লিঙ্গ সমতায় বাংলাদেশ শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর এবং পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়ে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় সরকারে বর্তমানে ১২ হাজার ৮শ ২৮ জন নির্বাচিত মহিলা সদস্য দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত রয়েছে এবং স্থানীয় সরকারের অন্তত ৫টি কমিটিতে তারা চেয়ারপার্সনের দায়িত্বে রয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। মহিলা শিক্ষিকার সংখ্যা শতকরা ৬০ভাগে উন্নীত হয়েছে।
তাঁর সরকারের সময় দেশে নারী জাগরণে বিপ্লব ঘটেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার একজন নারী, তিনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সংসদ উপনেতা ও বিরোধী দলীয় নেত্রীও নারী। খেলাধূলাসহ সর্বক্ষেত্রে এই নারীরা এখন অগ্রগামী।
শেখ হাসিনা বলেন, নারী নীতিমালা প্রণয়ন, নারী উন্নয়ন, কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণ, দরিদ্র-অবহেলিত নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনয়ন এবং সর্বোপরি সমাজের প্রান্তিক, অবহেলিত, সুবিধা বঞ্চিত, দরিদ্র নারীদের উন্নয়নে সরকার বিশেষ নজর দিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে তাঁর সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন করেছে। মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ বেতনসহ ৪ মাস থেকে ৬ মাসে বর্ধিত করা হয়েছে। সন্তানের পরিচয়ের ক্ষেত্রে মায়ের নাম লেখা বাধ্যতামূলক এবং জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নারী উন্নয়নে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ এবং পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০১০- এ আইন আমরা প্রণয়ন করেছি। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে যুগব্যাপী জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০১৩-২০২৫) প্রণয়ন করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৪ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। যৌতুক নিরোধ আইন-১৯৮০ সংশোধন করে যৌতুক নিরোধ আইন-২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।
মহিলা উদ্যোক্তারা পুরুষদের থেকে ৫ থেকে ৬ শতাংশ কম সুদে ঋণ পাচ্ছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করেছে। ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল থেকে গার্মেন্টসে কর্মরত দুগ্ধদায়ী ও গর্ভবতী মা’কেও ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
মহিলা অধিদপ্তরের মাধ্যমে ১৭ হাজার ৬৩৯টি সমিতিতে সরকার অনুদান দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪টি জেলায় ৪৮৯টি উপজেলার ৪ হাজার ৫শ’৪৭টি ইউনিয়নে দুস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচি চালু রয়েছে।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ওয়ান স্টপ সেন্টারের ভুমিকা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) সেপ্টেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত ২৩ হাজার ৮শ’ ৮৮ জন নারীকে সেবা প্রদান করেছে। ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল জানুয়ারি ২০১৩ সাল হতে সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ১৬ হাজার ১শ’ ৭৯ জন নির্যাতনের শিকার নারীকে সহায়তা দিয়েছে। দেশের ৮টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে প্রাক্তন ভিকটিমদের নিয়মিত মাসিক ফলোআপ সভা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরীতে মোট ৩ হাজার ২শ’ টি মামলার ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে। ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার ১০ হাজার ৯শ’ ২১ যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও বাল্য বিবাহ বন্ধে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। জাতীয় মহিলা সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে “নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেল” এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ন্যাশনাল সেন্টার অন জেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিধবা ও নিগৃহিত মহিলা ভাতা প্রাপ্তদের সংখ্যা ১০ দশমিক ১২ লাখ থেকে ১১ দশমিক ১৩ লাখে উন্নীত করা হয়েছে। সন্তান সম্ভাবা ও ধাত্রী মায়ের ভাতা ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এতে করে তাদের পরিবারে একটা অবস্থান থাকছে।
প্রধানমন্ত্রী মধ্যযুগের অন্তপুরের বাসিন্দা নারীদের আলোক বর্তিকা হাতে পথ দেখানো নারী মুক্তির অগ্রদূত মহীয়সী নারী রেগম রোকেয়ার জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের এক নেপথ্য কারিগর তাঁর মাতা বেগম মুজিবের বিভিন্ন সাহসী ভুমিকার কথাও ভাষণে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমার মায়ের একটা দৃঢ়চেতা মনোভাব ছিল। সময়োচিত সিদ্ধান্ত দেয়ার অসাধারণ ক্ষমতা ছিল। আমার মা রাজনীতিতে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বাবার পাশেই সব সময় থেকেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর জীবনের পাতা থেকে তিনটি ঘটনা তুলে ধরে তাঁর মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের দৃঢ় চেতা এবং দূরদর্শী চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে আলোকপাত করেন। প্রথমত, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় ৬ মাস বাবার কোন খোঁজ পাইনি । তাঁকে জেলখানা থেকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তিনি বেঁচে আছেন কি মরে গেছেন জানিনা। সে সময় মামলার যেদিন শুনানি সেদিনই তাঁর দেখা পাই। সে সময় আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে আইয়ুব খানের সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণের কথা বলেছিলেন। কিন্তুু আমার মা বললেন না, প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বঙ্গবন্ধু আলোচনার জন্য যাবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় বেগম মুজিবের ম্যাসেজ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে পৌঁছে দেন যে, প্যাারোলে মুক্তি নেয়া যাবে না। কারণ তাঁর মা বলেছিলেন, এই মামলার আরো ৩৪ জন সদস্য রয়েছেন, বঙ্গবন্ধু যদি প্যারোলে মুক্তি নেন তাহলে অন্যদের কি হবে। সে সময় অনেক কষ্টে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করার পর বাসায় ফিরে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতাদের তোপের মুখে পড়ার কথা স্মরণ করে বলেন, সে সময় ক্ষুদ্ধ নেতারা বলছিলেন- তুমি কেমন মেয়ে হে বাবার মুক্তি চাওনা, তোমার মাতো বিধবা হবেন।
তিনি বলেন, ‘মা-ই তখন সেসব নেতাদেরকে বলেছেন এবং তাঁকে অভয় দিয়েছেন নিশ্চয়ই তোমার বাবা ফিরে আসবে, এতবড় অন্যায় কখনো হতে পারে না।’ তাঁর সেই সময়োচিত সিদ্ধান্তে বাংলার মুক্তির সংগ্রাম তখন নতুন করে গতি পায় বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
দ্বিতীয় ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে। যে ভাষণ আজ আড়াই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে পৃথিবীতে স্বীকৃতি পেয়েছে। ইউনেস্কো তাদের ওয়াল্ড মেমোরি রেজিষ্টারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে তাঁকে অর্ন্তভুক্ত করেছে। সেই ভাষণ প্রদানের দিনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকাল থেকেই নানাজনে নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন এটা বলতে হবে, ওটা না বললে হবে না, পরামর্শের কাগজের বস্তা জমা হচ্ছে। কিন্তুু তাঁর মা ভাষণ দেয়ার কিছু আগে বঙ্গবন্ধুকে একটু বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ করে দেন এবং একটি আলাদা ঘরে নিয়ে বলেন (যে ঘরে প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন),‘ তুমি জান কি বলতে হবে। এই বাংলার মানুষের জন্য তুমি আজীবন সংগ্রাম করেছো , তোমার সামনে লাঠি হাতে জনগণ, পেছনে পাকিস্তানীদের উদ্যত বন্দুক। তাই তুমি জান তোমাকে কি বলতে হবে। কারো পরামর্শ শোনার দরকার নেই।’ এরপর সমগ্র বিশ্ব দেখেছে কোন কাগজ ছাড়া বঙ্গবন্ধু উপস্থিতভাবে সেই ভাষণ দিয়ে সমগ্র দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
অপর ঘটনাটি বলতে গিয়ে আর অশ্রু সংবরণ করতে পারেন নি প্রধানমন্ত্রী। সেটি ’৭৫ এর ১৫ আগষ্টের সেই কাল রাতের ঘটনা। সিঁড়ির ওপর বঙ্গবন্ধুর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে যান এবং সৈনিকরা তখন তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাবার উদ্যোগ নিলে তিনি বলেন, তিনি জাতীর পিতাকে এখানে ফেলে রেখে কোথাও যাবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে বলেন, তাঁর মা বলেছিলেন-‘তোমরা তাঁকে (বঙ্গবন্ধু) গুলি করে মেরেছো আমাকেও গুলি করে মারো, আমি কোথাও যাব না।’
জাতির জনকের কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মা অন্য সবার মতো সেদিন কিন্তুু নিজেকে বাঁচাবার চেষ্টা করেননি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন থেকে শুরু করে তাঁর বাবার কারান্তরীন থাকার সময় গুলোতে তাঁর মায়ের বলিষ্ঠ ভ’মিকা তখন বিপন্ন জাতিকে পথ দেখিয়েছে । তিনি বলেন, দারিদ্র বিমোচনে আমাদের কর্মসূচি আমরা সফলভাবে বাস্তবায়ন করে দারিদ্রের হার ২২ ভাগে নামিয়ে এনেছি। প্রতিবন্ধীদের জন্য আমরা আলাদা ভাতারও ব্যবস্থা করেছি এবং অটিজম এবং প্রতিবন্ধীদের সব রকম সুযোগ-সুবিধা আমরা দিয়ে যাচ্ছি। কাজেই এই সমাজটাকে গড়ে তোলা, দেশকে উন্নত করা, বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলা – এটাই আমাদের লক্ষ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার সুফল যেন প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌছতে পারে এবং জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন-ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। সেই সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো, রোকেয়া দিবসে এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’