কথা নয় কাজ…ই এখন সময়ের দাবি

Vector-Smart-Objectবহুল প্রচলিত একটি কথা হলো বাঙ্গালীরা আওয়াজে পাকিস্তান। একসময় পাকিস্তানিরা আওয়াজ দিয়ে সবকিছু সামলাতে চেষ্টা করতো বা কাজের চেয়ে আওয়াজটাই বেশী করতো। সেই থেকেই এর প্রবর্তন আমাদের সমাজে। আরো একটি কথা আছে খালি কলসিতে আওয়াজ বেশী। আসলেই তাই। কিন্তু এখনও আমাদের মাঝে সেই আওয়াজের ধ্বনীই তুলনামুলক বেশী উচ্চারিত হয়। কাজের চেয়ে আওয়াজে বেশী সময় এবং শ্রম দিয়ে না জানি কি করে ফেলেছি বা ফেলব ভাব দেখানো হয়ে থাকে। সময় এসেছে কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ ও প্রমান করার। যুগের চাহিদাও এখন তাই। চিন্তা এবং কাজের সমন্বয়। কথায় নয় কাজে বড় হতে হবে আমাদের সবইকে। তাহলেই আমাদের দেশের সামগ্রীক উন্নয়ন সাধিত হবে।
এইতো গত সপ্তাহে কতকিছুইনা বাস্তবায়িত হলো যা কথায় নয় কাজে। সেই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একজন বিচক্ষণ মানুষের ভুমিকাই যতেষ্ট ছিল। দেখুন যদি আমাদের দেশের সকল মানুষ ঐ বিচক্ষনতার পরিচয়ক হতো তাহলো বাংলাদেশ হতো সুখী, সমৃদ্ধ এবং উন্নত ও স্বর্গের তুল্য একটি শান্তির দেশ। আমরা জানি সেই একজনটা কে- আর তিনি হলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব মানবতার মা বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। তাঁর উদারতায় নিশ্চয়তা পেল সেই কক্সবাজারের ইউসুফ; যতদিন বেচে থাকবেন ততদিন সুখে এবং শান্তিতেই থাকতে পারবেন এমনকি মৃত্যুর পরও একটা তৃপ্তির নি:শ্বাস ছাড়তে পারবেন। শিক্ষকদের আন্দোলনের পরিসমাপ্তিও ঘটলো সেই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই। যদিও তিনি কোন হস্তক্ষেপ করেননি বরং ভালবাসা প্রকাশ করেছেন মাত্র। এই ভালবাসা প্রকাশ করার অনেকেই ছিল এবং করেছেনও বটে, কিন্তু আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপিত না হওয়ায় আন্দোলন চলমান ছিল। কিন্তু দেশের মানুষ কার উপর আস্থা রাখতে পারে এবং চায় তা আরেকবার প্রমান হয়েছে এই শিক্ষক আন্দোলনের মাধ্যমে। এই ভরসা এবং আশার শেষ স্থলহিসেবে কিন্তু তিনি কথার মাধ্যমে পরিণত হননি বরং হয়েছেন কাজের মাধ্যমে। কথা + কাজ + সময়োচিত সুদুর প্রসারী চিন্তা ও পরিকল্পনার সমন্বয়ের ফলে। আজ যে শুধু বাংলাদেশের মানুষ তাঁর উপর আস্থা রাখে তা কিন্তু নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ সেই আস্থার বা বিশ্বাসের প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন। মায়ানমার থেকে নির্যাতিত মানুষজন এদেশে এসে প্রধানমন্ত্রীর ভালবাসায় জীবনের দৈনন্দিন প্রয়োজনের নিশ্চয়তা পেয়ে যে আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করেছেন তা কিন্তু একমাত্র শেখ হাসিনাই করে দেখিয়েছেন।
এর স্বীকৃতি স্বরূপ তিন পৃথিবীতে এখন মানবতায় মানদন্ডে ১ম হিসেবে বাংলাদেশকে গর্বীত করে যাচ্ছেন। এখান থেকেই আমার শিখতে হবে এবং পরবর্তী জীবনে পদক্ষেপ নিতে এগুতে হবে তাহলে আমাদের সামষ্টিক কর্মের ফলে দেশ এগুবে এবং জাতী স্বীয় সম্মানে সম্মানীত হবে। বিভিন্ন বাহিনীর নির্ধারিত দিবসেও সেই তিনিই নিজেকে সেবকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ করে অন্যদেরকে উৎসাহ যুগিয়েছেন। প্রত্যেকের প্রাপ্য দিয়েছেন এবং আগামী দিনের সেবার স্বচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এদেশের প্রতিটি মানুষের খোজ ও খবর রাখেন এবং প্রতিটি মানুষের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছেন এর নিদর্শন তিনি বহুবার দিয়েছেন এবং দিয়ে যাচ্ছেন। কিভাবে উন্নয়ন হয় আর তা কিভাবে অর্জন করে নিতে হয় তিনি জানেন এবং বিশ্বকে জানিয়ে এবং দেখিয়ে দিচ্ছেন। সত্য কথা এবং যুগের দাবীকে তিনি কখনোই অস্বীকার করেন না। অনেকের কাছে অপ্রীয় হলেও তিনি বাস্তব সত্যকে সত্য হিসেবেই তুলে ধরেন। যেমনী তিনি উক্তি এবং ইঙ্গিত ও প্রত্যক্ষ করেই উপযুক্ত উত্তর দিয়ে জনগণকে উৎসাহিত করেছেন ঐ পুরোনো দিনের সুন্দর কথাগুলোকে স্মরণে নিয়ে কাজ করতে। “পাগলে কি না বলে এবং ছাগলে কি না খায়”। এই কথাটি ১০০% সত্য এবং এই সত্যকে অস্বিকার করে যারা তারাও ঐ শ্রেণীভুক্ত বলে বিশ্ব জ্ঞান ও বিবেকের কাছে স্পষ্ট প্রমানিত।
মন্ত্রীসভায় যোগ হয়েছে কাঙ্খিত নতুন মুখ এবং পরিবর্তন হয়েছে কিছু দপ্তর। সবই সময়ের প্রয়োজনে কিন্তু এই মধ্যেই অতি কথণের জোয়ার প্লাবিত করেছে সমাজ ব্যবস্থাকে যা বণ্যায়ও পরিণত হতে পারত। কিন্তু লাগাম টেনে ধরে ঐ বন্যার হাত থেকে এ যাত্রায় রেখায় পেলাম মাত্র ঐ একজনের কল্যাণেই। মিডিয়ার কিছু নেতিবাচকতা পরিহার বাঞ্চনিয়। নতুব মিডিয়া কর্মীদের জীবনের অতি লিখন এবং পরিবেশনের দায়ে লাগাম টানার সময়ের মানদন্ডে শাষিত ও শোষিত এবং নির্যাতিত হওয়ার উপক্রম হবে। আমি মনে করি লিখার ক্ষেত্রে গভীরতা এবং সম্মান বজায় রেখে সঠিক অর্থ প্রকাশই হবে আমাদের মুল এবং মুখ্য বিষয়। যিনি বলেছেন তিনি কি বুঝাতে চেয়েছেন এবং কি তার উদ্দেশ্য সবই যেন প্রকাশ পায়; অপর দিকে যিনি বলেছেন তা অসম্মান এমনকি অন্য কারো অসম্মান অথবা ইগুতে লাগার বাইরে রেখেই প্রকাশ, প্রচার এবং উপস্থাপন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। কারন মিডিয়া এখন আগেকার দর্পনের ভুমিকার চেয়ে আরো গতিতে বেশী কাজ করে থাকে।
যারা কথা বলছেন মনে রাখবেন বলার সময় ভুলক্রমেও যেন আপনার সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুন্ন না হয় এমন প্রকাশ ও অর্থবোধক শব্দচয়ন করতে। অতিকথন বা নিন্দকদের সুযোগ না দিয়ে অতিরঞ্জিত মিডিয়ার মুখরোচকতা বাইরে থাকতে সচেষ্টা থাকা বাঞ্চনীয়। কথা নয় কাজে বড় হওয়ার লড়াইয়ে লেগে থাকার চর্চায় মনোনিবেক করে এগিয়ে যেতে হবে। একার পক্ষে কোন কিছুই সম্ভব না সুতরাং সবাই মিলেই উন্নয়ন গতি তরান্বিত করবো এবং এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাব। এই ভাবনায় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কথা যুগ শেষে এখন কাজের যুগে সবাইকে মনোনিবেশ করতে হবে।
পত্রিকা বা মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ বা কোন খবরের কারণে কেউ ঘোস্যা বা মন খারাপের কোন কারণ নেই। কারো সম্পর্কে কোন লিখা ছাপলে বা খবর প্রচারিত হলে ভাবতে হবে সেই আমার প্রীয় বা আপনজন। কারণ যে ভূলটি আমি বুঝতে বা ধরতে পারিনি সেটি ওনাদের মাধ্যমে জানতে ও বুঝতে পারলাম। তাই নিজেকে শুধরানোর সুযোগ এবং সামনের দিকে দেশকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ ওদের মাধ্যমেই হয়েছে এবং আগামী দিনেও হবে। এই ভেবে ইতিবাচক চিন্তা করে অগ্রসর হলে সমাজের পরিবর্তন এর গতি তরান্বিত হবে। ্ক্ষোভ বা রাগের বশবতি হওয়া মোটেও ঠিক নয়? তারপরও দেখা যাচ্ছে নেতিবাচক মনোভাবই বেশী পরিলক্ষিথ হয়…. সময় এখন ঐ নেতিবাচকতা পরিহারের এবং ইতিবাচক মনোভাব পোষণ এবং সেই অনুযায়ী কাজে মনোনিবেশ করার।
নিন্দুকের সমালোচন অনেক ক্ষেত্রে অনেক উপকারে আসে। আর ঐ নিন্দুককে ধন্যবাদ দিয়ে আগামী দিনের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে সহযোগীতা করার আহবান জানানোর চর্চা করা এখন আমাদের দায়িত্ব। আমরা যারা নিন্দুক; আমাদেরও ভাবতে হবে কি বিষয়ে নিন্দা করছি; ভাল কাজের নিন্দা না করে খারাপ কাজের নিন্দাচ্ছলে পরামর্শ দেয়াই হবে আমাদের প্রধান ও মুখ্য কাজ। যারে দেখতে নারি চলন বাকা এই নিতী বা মনোভাব পরিহার করা আমাদের উচিত। সরকার এবং সরকারের বাইরের এমনকি বিরোধী শিবির ও রাজনৈতিক সকল মননের ঐক্য ও সংহতি জরুরী। পাশাপাশী অতি কথন ও আওয়াজের রীতি থেকে বের হওয়া অতি জরুরী। ঐ আওয়াজ এবং নেতিবাচকতা দ্বারা কোন উপকার হবে না। যা নিজের এমনকি দেশের ও সমাজের কারোরই না। তাই ঐ বাতাসে দোলা নলখাগড়ার অবস্থা থেকে এখনই বের হয়ে আসা উচিত।
নির্বাচন সামনে তাই কথা নয় কাজই এখন মোক্ষম হিসেবে বিবেচিত করে এগুতে হবে। বেশী কথা বলার আর প্রয়োজন নেই কারণ মানুষ বেশী কথা পছন্দ করেন না এবং ঐ বেশী কথা বলা লোকদেরও সহ্য করতে চায় না। সময় এখন কাজ করার। সময় এখন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের এবং ফল নিয়ে ভোটারের দ্বারে উপস্থিত হওয়ার। এই সময় অতিকথন হিতে বিপরীত হওয়ারই মত। তাই কিতাবের ভাষায় তোমাদের মুখ থেকে সাবধান” কারন মুখ থেকে যা বের হয় তাই নাপাক বা খারাপ। তোমাদের মুখের কথার হ্যা যেন হ্যা হয় আর না যেন না হয়। গানের ভাষায় সময় থাকতে মনা হুসিয়ার। তবে এই মুখের মাধ্যমেই আমরা বিনির্মান করতে পারি এক নতুন শান্তির স্বর্গরাজ্য আর কাজের মাধ্যমে উপহার দিতে পারি উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতার চলমান তড়িৎ গতি।
আমরা জানি কার কি করার ক্ষমতা আছে; সুতরাং অতি লোভে তাতি নষ্ট বা লোভে পাপ পাপে মৃত্যুর মুখে যেন ঢলে না পড়ি সেই ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আন্দোলন এবং নির্বাচন প্রতিহত করার চিন্তা যেন দু:স্বপ্নেও এ দেশে আর না আসে। কারণ সেই যুগের অবসান হয়ে গেছে এবং এখন নতুন যুগ আর এই যুগের নাম ডিজিটাল যুগ। তাই এই যুগের নির্বাচন হবে মেধা ও মননের, চিন্তা ও কাজের সমন্বয়ের; আশা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃশ্যমান রূপ অগ্রসরতার। সম্মুখপানে এগিয়ে যাওয়ার। পিছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই এবং পিছনের রাস্তায় আর দেশকে ধ্বংস করার সুযোগও নেই। কিছু করতে হলে দেশে আসুন এবং দেশে থেকে পরিকল্পনামাফিক জাতিকে এগিয়ে নেয়ার নেতৃত্ব দিন। সকল অপবাদ ঘুছিয়ে এগিয়ে আসুন স্ব ও সুশিক্ষায় শিক্ষীত হয়ে জাতিকে এগিয়ে নিতে। নতুবা বাকি অবশিষ্টাংশটুকুও নিপাত যাচ্ছে এবং যাবে।
ধর্ম নিয়ে ব্যবসাতো হচ্ছে এবং হবে এর থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। তাই এই সবের মধ্যেও আল্লাহর আশির্বাদ নিহীত রয়েছে বলেই ধরে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ধর্মীয় দলে দলাদলী ও মারামারির সকল পথ ও মতকে বন্ধ করে দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ যে, তিনি ইজতিমায় আগমনকারী দুই গ্রুপের দ্বন্ধের অবসান ঘটিয়ে যার যার মনের আকাঙ্খা ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে আগামী ইজতিমা সফলকল্পে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তা যুগান্তকারী। মত ও পথের ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু সৃষ্টিকতা ও খোদা এবং আল্লাহতে কোন ভিন্নতা নেই কারো। তাই সকলকে একসঙ্গে নিয়েই সকল কল্যাণের যাত্রা সুচিত হউক। আগামী ইজতেমা হউক নির্বিঘেœ আর যাত্রাপথ ও যাবতীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হউক শান্তি ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে। এটাই হউক আমাদের মঙ্গলের এবং সরকারের সফলতার। গত ইজতেমায় বাধাদানকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে এই ইজতেমায় আল্লাহ শুভবুদ্ধি দিয়ে আগামীর শান্তি ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে নিজেদেরকে অংশীদারী মনোভাবে এগিয়ে যেতে সহায়তা করুক। শেষ কথা; কথা নয় কাজ, এই মনোবৃত্তি বৃদ্ধি করা এবং প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল উক্তি আগামীর জন্য প্রস্তুত বাস্তবায়ীত হউক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.