তাজুল ইসলাম নয়ন॥ জীবনে বন্ধুর সংখ্যা হয়েছে অনেক বেশী এবং এই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাই এখন দায়। সময় এবং বাস্তবতার নীরিখে সময় বের করা হয়েছে একটি জটিল বিষয়। তারপরও বলব যদিও যোগাযোগ বা দেখা-সাক্ষাৎ হয়না; তাই বলেতো বন্ধুত্বের বন্ধনে চীর ধরে না বরং আরো গাঢ় হয়। বন্ধুত্ব চীরদিনের আর এই বন্ধুত্ব হলো নি:শর্ত ভালবাসার। বিনি সুতোর মালার মতই আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন। বন্ধুত্ব নি:শর্ত এবং স্বার্থহীন। তাই সকল বন্ধুদের কাছে আমার ভালবাসা এবং সেই পুরোনো বন্ধন এখনও জীবিত আর সময়ের আবর্তে ঘূর্ণায়মান। সদ্য মন্ত্রীসভায় যোগ হওয়া ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি মন্ত্রী জনাব মোস্তফা জব্বার সাহেবের সঙ্গে আমাদের পরিচয় আনন্দ কম্পিউটার থেকে সেই ১৯৯৪ বা ৯৫ সালে কম্পিউটার কেনার মাধ্যমে। তার পর থেকে মাঝেমধ্যেই দেখা ও কথা কিন্তু দুজনের ভালবাসার বন্ধন ছিল অটুট। ক্ষনিক পরেই আবার আমার অফিসে দেখা হলো পুরোনো সেই বন্ধুর সঙ্গে বেসিস নির্বাচনী কর্মযজ্ঞে। সেই থেকে একসঙ্গে নির্বাচন এবং কাজ। প্রতিমাসেই অন্তত একবার দেখা হতো বেসিস প্রাঙ্গনে। তিনি প্রেডিডেন্ট আর আমি ষ্ট্যান্ডিং কমিটির মেম্বার। দুজনেই হাসি খুশি ও আনন্দে কাটিয়েছি ১৮টি মাস। কিন্তু আমাদের সম্পর্কে ছিলনা কোন ব্যক্তিস্বার্স্থ বা লোভ অথবা কোন আকাঙ্খা। ছিল নি:স্বার্থ ভালবাসার বন্ধন। সরকারের ডাক পেয়ে তিনি মন্ত্রী হলেন এবং দায়িত্ব নিলেন। যখন উনার নামটি টিভি স্কলে এসেছিল তখন মনে হয়েছিল যেন নিজেই আমি এখন মন্ত্রী হয়েছি। যদিও এই বিষয়টি আমি জানতাম তিনমাস আগে থেকে যে জব্বার ভাই মন্ত্রী হচ্ছেন। যখন মন্ত্রী হওয়ার আগে ও পরে ফোনে কথা হলো তখন মনে হলো তার সেই সরল ভালবাসা আরো বেড়ে গেছে আমার বা আমাদের জন্য। এই হলো বন্ধুত্বের বন্ধন। আমরা তাকে সম্বন্ধনা দিয়েছি, তাঁর পদযাত্রায় পাশে থাকার অঙ্গিকারও করেছি। সবই যেন একটি গোছালো কার্যক্রম পরিচালনার ফসল। ডিজিটাল ওয়াল্ড উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সামনে যে ভাষণটি দিয়েছিলেন তা যেন বঙ্গবন্ধুর ভাষণের আদলেই একটি রেকর্ড মাত্র। আমি কাছে থেকে প্রধানমন্ত্রীকেও পরখ করেছি ঐ ভাষনটি যতেষ্ঠ গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। ভাষণ শেষে সুফিয়ার সঙ্গে কথোপকথন এবং প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার পর আমি জব্বার ভাইকে বললাম এই ভাষণটি চমৎকার এক অর্জন আজকের দিনের জন্য। পরের দিন আবার মিনিষ্টারিয়েল মিটিংয়ে ও একই কথা বললাম এবং জয় ভাই ও উপস্থিত সকলের কথা শুণে মোস্তফা ভাইয়ের সঙ্গে কোলাকুলি করে বিদায় নিলাম। এভাবেই ছলছে জীবন এবং কাজ। তবে জব্বার ভাই এবং আমাদের সম্পর্ক রয়েছে আগেরই ন্যায় এবং কাজের ক্ষেত্র ভিন্ন হলেও সম্পর্কের ক্ষেত্র কিন্ত ঐ এক জায়গায়ই রয়েছে। তবে অইসিটি ইন্ডাষ্ট্রির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুবাদে হয়ত এই সম্পর্ক এখন আরো গুরুত্ব বহন করে এবং করবে।
তবে যে বন্ধুদের সঙ্গে কদাচিৎ দেখা ও কথা হয় এবং যাদের সঙ্গে কথা ও দেখা হয় না সেই ক্ষেত্রে সম্পর্কের কোন তারতম্য বা হেরফের হয়নি এবং হবেও না। সম্পর্ক সেই আগের মতোই আছে এবং থাকবে এই নিশ্চয়তা আমি দিতে পারি। আরেক বন্ধু ডা: ইকবাল বদলি হয়ে এখন কক্সবাজারে প্রশাসনিক দায়িত্ব নিয়ে মহা ব্যস্ত। মাঝে মধ্যে ফোন দিতেও সময় হয়না বা কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে ফোন দেয়া হয় না কিন্তু বন্ধুত্বের বন্ধন যে, অটুট রয়েছে তার নিশ্চয়তা ১০০%। নিয়তির ঘূর্ণায়মান নিয়মেই আমাদের দেখা হয় এবং কথা হয় এমনকি একের প্রয়োজনে অন্যের যোগান নিয়ে এগিয়ে যেতে হয় ও হবে। এই লিখা লিখতে গেলে হয়তো শেষ করা যাবে না কিন্তু ধাপে ধাপে লিখে মনের গহীনের কথা প্রকাশ করতে হবেই তা জেনে এই লিখা শুরু করলাম।
বেসিসের গত নির্বাচনের মাধ্যমে আরেক বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক এবং সম্পর্কের গভীরতা সৃষ্টি হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সেই সম্পর্ক এবং চলমান যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। বন্ধুটির নাম দেলোয়ার হুসেন ফারুক। বেসিস নির্বাচনে যখন পরাজিত হয়েছিল তখন আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম; তবে জনাব মোস্তফা জব্বার ভাইয়ের সেই ভালবাসার কাছে আমার কষ্ট এমনকি ফারুক ভাইয়ের কষ্ট লাঘব হয়েছিল। সময়ে সময়ে ফোনে এবং বেসিসে মিটিংয়ে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। সদ্য বেসিস কার্যকরী বোর্ড এ পরিচালক হিসেবে যুক্ত হওয়ায় আমার মনের সেই পুর্বানন্দ ফিরে আসে এবং নতুন একটি স্বপ্ন দেখতে শুরু করি যে, দেলোয়ার হোসেন ফারুক কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসন থেকে আগামী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশ সেবায় এগিয়ে যাবে। তবে আমার আকাঙ্খা ও বিশ্বাস নেত্রীর দুরদর্শীতার মাধ্যমে পুরণ হবেই। বন্ধুর সাফল্যেই বন্ধু আনন্দিত হবে এটাই বাস্তব সত্য। সদ্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছেন দেলোয়ার হুসেন ফারুক। এটাও একটি সাফল্য এবং খুশির সংবাদ। তবে বন্ধুর জন্য দোয়া করি যেন তার উপর অর্পিত দায়িত্ব প্রত্যাশানুযায়ী পালন করতে পারে এবং আমাদের আকাঙ্কা ও প্রত্যাশার ব্যপ্তি বৃদ্ধি পায়। আমার বন্ধুদের প্রতি আমার নিরন্তর ভালবাসা এবং সমর্থন অব্যাহত থাকবে; যে কোন প্রয়োজনে আমাকে পাশে পাওয়ার নিশ্চয়তা নিরন্তর বিরাজমান। আবার ২য় পর্বের লিখা নিয়ে ফিরে আসব আগামী সংখ্যায়।