মানুষের মনের অভিলাস যে কত রকমের হয় তা এখনো কেউ আবিস্কার করতে পারেন নি এবং পারবে বলেও মনে হয় না। কারণ মানুষের চাহিদার কোন শেষ নেই, কখনো ছিল না এমনকি ভবিষ্যতে থাকবেও না। তবে আমি একটি বিষয় জেনেছি এবং উপলব্দিও করতে পেরেছি যে, আমাদের অভাবের কাছে স্বভাবের পরাজয় ঘটেছে আবার কখনো কখনো দেখেছি এবং শুনতে পেয়েছি যে, স্বভাবের কাছে অভাব পরাজিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজ ও সংসারে এমনকি রাজনৈতিক অঙ্গনে এর ব্যতিক্রম বরাবরের মতই প্রত্যক্ষ করছি। তবে মাঝে মাঝে খোদায়ী মানুষের জীবনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বভাবের কাছে অভাবের পরাজয় দেখে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আগ্রহ এবং উৎসাহ পাচ্ছি।
আমাদের সমাজের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রয়োজন মানুষের স্বভাভের উন্নয়ন করা এবং স্বভাবের কাছে সকল আভাব পরাজিত করা। চিন্তায়ও স্বচ্ছতা এবং উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন। চিন্তার দুষণ রোধকল্পে এগিয়ে যেতে হবে। উন্নয়নের জন্য নেতা মনোনিত করার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে হবে। কোন অনৈতিক কর্মকান্ড দিয়ে নেতা নির্বাচন এবং এই নির্বাচিত নেতা দিয়ে সেবার কাজ পরিচালনা করা সম্পূর্ণ অসম্ভব। কারণ ঐ নেতার দ্বারা অনৈতিক কর্মকান্ডই পরিচালিত হবে এবং এর স্তরে স্তরে উন্নতির বিস্তার ঘটবে। যাতে নৈতিকতা বিলীন হয়ে বা মাটিচাপা পড়ে অনৈতিকতার দন্ডে সমাজ বিচরণ করবে। অতীতে অনেক দৃষ্টান্তসহ দেখেছি এবং আগামী নির্বাচনে দেখার সমুহ পরিবেশের লক্ষ্যণ এখন জনসম্মুখে মিডিয়ার কল্যাণে দৃশ্যমান।
যারা দেশ সেবার দায়িত্ব নেয়ার খায়েশ পোশন করে বসে আছেন এবং ঐ সেবার কাজে বিভিন্ন জনকে দায়িত্ব দেয়ার নিমিত্ত্বে বকশিষ স্বরূপ বা উপঢৌকনস্বরূপ টাকার পাহাড় তৈরীর কারিগর হিসেবে ইতিমধ্যে চিহ্নিত হয়েছেন এবং আগামীর জন্য ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে আছেন…. তাদের উদ্দেশ্যেই দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে চাই। এইতো সদ্য স্থগিত হওয়া ঢাকা উত্তরের মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে টাকা এবং সতাতার মানদন্ড স্থাপীত হলো। দেখা গেল সততার পাল্লা হাল্কা এবং টাকার পাল্লা ভারী রূপ ধারণ করে আছে। তবে আমেরিকার তৎকালীন এম্বাসেডর ড্যান ডব্লিউ মজিনা যাকে মি: পার্সেষ্ট্রিজ নামে ডাকতেন; তিনি জনাব তারেক রহমান; হ্যা করে বসে আসেন মনোনয়ন বানিজ্য করার জন্য। এই সিটি মেয়র এর মনোনয়ন দিতে কথিত আছে এক কোটি টাকা নিয়েছেন। আর তরুন ব্যবসায়ী এবং পানামা পেপারের তালিকাভুক্ত দুর্নীতিতে সম্মান অর্জনকারীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। পাশাপাশি ঘোষনা দিয়ে রেখেছেন আগামী নির্বাচনে এমপি ও মন্ত্রী নির্বাচনের টাকার পরিমানের হার সম্পর্কে। এই হার নিতান্তই কম তাদের জন্য। কারণ তারাতো দেশের বা জনগণের সেবার প্রয়োজনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে চাননা বরং আসতে চান ঐ টাকার পাহারের পরিধি বৃদ্ধির জন্য। যদি কেউ বিএনপি বা বিশ দলীয় জোটের মনোনয়ন নিতে চান তাহলে প্রয়োজন পড়বে ১০কোটি টাকা। আর যদি কেউ মন্ত্রি হওয়ার খোয়াব দেখেন তাহলে প্রয়োজন পড়বে ১০০কোটি টাকা। এই না হলে বাপকা বেটা সিপাই কা ঘোড়া। এই মানদন্ডে যারা উন্নীত হবেন তারাই হবেন আগামীর বিশ দলীয় জোটের এমপি বা মন্ত্রী। তবে মনোনয়ন দিতে পারে কিন্তু জেতানোর দায়িত্বতো এখন জনগণের হাতে। সুতরাং জনগণ কি চায় তা কি ঐ মনোনীত এবং মনোনয়ন কারীরা জানেন। আমার মনে হয় তারা এই কঠিন সত্য বিষয়টি জানেন না। তাই তাদের অজানা অজ্ঞাত স্বরেই টাকার পাহাড়ের চূড়া বড় হচ্ছে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তা প্রকাশ ও প্রচারিত হচ্ছে। যার লজ্জার ও সকল দিক থেকে দেশে-বিদেশে অসম্মানের। কিন্তও ঐ উঁচু চুড়ায় বসে থাকার কারনে এই কঠিন সত্যটিও জানতে অপারগতা প্রকাশ করছেন তারা।
আচ্ছা সেদিনের সেই আম জনতা যারা এখন যথেষ্ট সম্মান ও মর্যাদায় পরিপক্ক হয়ে ভবিষ্যত বিনির্মানে সিদ্ধান্ত নিতে যথেষ্ট প্রারঙ্গম। এই দেশদরদী জনগণ কি চাই তাদের সমস্ত অধিকার এবং অর্জন কেড়ে নিয়ে ঐ লগ্নীকরা নেতা নামক সেবকরা তাদের লগ্নীর টাকা ঘরে তুলোক বা আরো আরো বেশী সঞ্চয় করুক আগামী আরেক নির্বাচনের মনোনয়নের জন্য। আমার মনে হয় ঐ রকম বোকা মানুষ এখন আর সমাজে নেই। কারণ এই সমাজ ও এর ব্্যবস্থা বদলিয়েছে। নতুন রূপে নাম নিয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ডিজিটাল স্বপ্ন বিলাশী মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই ক্রয়কৃত মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বসে আছে কোন আগন্তুক বা হ্রদয়ের ধারন ও বাহন এবং পোড় খাওয়া মানুষগুলোর সেবা গ্রহণের জন্য। যাদের শুরুটাই হয় অন্যায় দিয়ে এবং অন্যায়ের উদ্দেশ্যে সেইসকল লোকদের কিভাবে জনগন সমর্থন দিবে আগামী দিনে জনগনের দায়িত্ব নেয়ার মহা ও মহান ব্রতীতে। হ্যাঁ সমাজে এখন ঐসকল মানুষদের সমর্থন করার মতো লোক রয়েছে কারণ ঐ লোকদের উদ্যেশ্যও একই। তাই তাদের খায়েশ পুরনের লক্ষ্যে সমর্থন ও সহযোগীতা অব্যাহত রাখে। কিন্তু সমাজ বদলিয়ে এখন নতুন সমাজ আর এই সমাজে লোভী, দুষ্কৃতিকারী এবং পরনিন্দায় রত মানুষের সংখ্যা ক্রমে ক্রমে কমে গিয়ে যৎসামান্যতেই ঠেকেছে। যা ভোটের রাজনীতিতে আর অগ্রসর হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাই নিয়তির নির্মম পরিহাস এখন বিশদলের কাছ থেকে পিছু টান নিয়ে ১৪ দলের পাল্লায় ভারী বর্ষণ করে যাচ্ছে। আরেকটি বিষয় স্পষ্ট লক্ষ্যনীয় যে, শেখ হাসিনা যে মানদন্ড সেট করেছেন তা কিন্তু বিরল এবং তা ভাংতে গেলে ঐ সততার কঠিন ও শেষ ধাপে গিয়ে ঠেকতে হবে।
শেখ হাসিনা বা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কি করেছেন তা দৃশ্যমান:Ñ ঢাকা উত্তরের মেয়র নির্বাচনের ক্ষেত্রে পুর্বেও তিনি দৃষ্টান্ত রেখেছেন যা ভোক্তভোগী বা উপকারভোগী মানুষজন জানে। সদ্য প্রয়াত আনিছুল হককে তিনি মনোনয়ন করেছিলেন এবং জনগণ তাকে বিজয়ী করে সেই মনোনয়কে সফল করে তুলতে সহায়তা করেছেন মাত্র। আর আনিছুল হক কি করেছেন তাতো সবাই জানে। এই তিনি একে একে দেখিয়েছেন বানিজ্য না করে বরং সৎ ও যোগ্য মানুষদের দায়িত্ব দিলে সততার সঙ্গে জনগণের কল্যাণেই দয়িত্ব পালিত হয়। আইন মন্ত্রী আনিছুল হক থেকে শুরু করে এবং সদ্য যোগ দেয়া মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ভাইকে মনোনয়ন দেয়া এমনকি দায়িত্ব দিয়ে স্বাধীনতা সহকারে কাজ করার সুযোগ দেয়াই আরেকবার প্রমান করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে কাদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে এবং সেই দায়িত্ব কিভাবে কাজে লাগাতে হবে; মেই প্রারঙ্গম ও সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার দুরদর্শী বাস্তবায়কারী বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। তাই দেশের জনগণ শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখতে ও নির্ভর করতে ইচ্ছুক এবং আকাঙ্খিত। এইতো সেদিন জনাব আতিকুল ইসলাম সাহেবকে ঢাকা উত্তর সিটিতে মনোনয়ন দিয়েছেন তার সততা এবং যোগ্যতা নির্ভর মাপকাঠি থেকেই। তিনি জানের কিভাবে জনগণের কল্যাণ সাধন করতে হবে আর কাদেরকে নিয়ে করতে হবে। তবে মনোনয়নের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম যে ঘটে তাতো বটে ; তবে এর লাগাম টেনে উন্নয়নের ট্রেনকে গতিতে পরিণত করে বোয়ীং এ রূপান্তর কিন্তু ঐ শেখ হাসিনই করতে পারেন এবং করে দেখিয়েছেন। আগামীতে আরো চমক দেখিয়ে উন্নয়ন এবং রাজনীতির আকাঙ্খা ও প্রত্যাশার ব্যপ্তি হিমালয়ের চুড়া থেকে আরো কোন সুউচ্চ স্থানে উঠাবেন বৈকী।
আমাদের সমাজ, সংসার, রাজনীতি ও সরকার এবং বিরোধী দল সকল ক্ষেত্রে এখন জীবন্ত শেখ হাসিনা থেকে শিক্ষা নেয়া প্রয়োজন এবং আগামীর জন্য নিজেদেরকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে যোগ্য থেকে আরো যোগ্যতর করে প্রতীয়মান করা প্রয়োজন। দূর্নীতিতে জড়াগ্রস্থ থেকে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে দুর্নাম ও নানাহ সম্মানহানীকর অবস্থানে বিরাজমান থেকে ষড়যন্ত্র এবং অন্ধকারের কুসংস্কার দিয়ে জনগনের মন পাওয়া যায় না। বরং সামনে থেকে সততা এবং ন্যায়পরায়নতা দিয়ে সেবার মনোভাবের প্রকাশ ঘটিয়ে কাজে পরিণত করার মাধ্যমেই জনগণের মন পাওয়া যায়। জনগণের মন পেতে আসলে রাজনীতি বা ক্ষমতার প্রয়োজন হয় না। বরং প্রয়োজন হয় মনোভাবের এবং সততা ও কঠোর পরিশ্রমের সংমিশ্রণের চর্চার বহিপ্রকাশের। আসুন আমরা আমাদের জীবনে অন্ধকার, কুসংস্কার, স্বজনপ্রীয়তা, দূর্ণীতি এবং লোভ, হিংসা, ঘৃণাসহ সকল পাপ-পঙ্কিলতা দুরীভূত করি। আগামী দিনের জন্য আমরা সবাই প্রস্তুত হই সমাজের, পরিবারের দেশের এবং সর্বোপরি বিশ্ব মানবতার কল্যাণের তরে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে। আমাদের অসাধু খায়েশ এবং অসাধু ক্ষমতার লোভকে স্বভাবের কাছে পরাজিত করি এবং মনের অভাবকে স্বভাব দ্বারা দুর করে আগামীর জন্য প্রস্তুত হই যেন সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদ ও জনগনের দেয়া দায়িত্ব পালনই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ও জীবনের ব্রতী হই।