নয়ন॥ জাগো স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে পড়ে তখন জসিম। লেখাপড়ায় বেশ আগ্রহ তার। একটু চুপচাপ, লাজুক স্বভাবের। ওর বাবা ভ্যানগাড়িচালক, মা ওর জন্মের সময় মারা যায়। সৎমায়ের ঘরে আরো দু’জন ভাইবোন আছে ওর।
এক শুক্রবারে ওর বাবা রহম আলী ওকে নিয়ে গেল বরিশালে তার গ্রামের বাড়িতে, উদ্দেশ্য ক’দিন থাকা। কিন্তু ফেরার কালে সে জসিমকে সাথে নিয়ে এল না। জাগো স্কুল থেকে যোগাযোগ করা হলে সে বললো, এখন থেকে ও নাকি গ্রামে ওর দাদীর সাথেই থাকবে। ঢাকা শহরে থাকা খাওয়ায় অনেক খরচ। স্কুলের টিচার, ওর বন্ধুরা – সবার মন অনেক খারাপ হল এই খবরে।
এদিকে, গ্রামে আমাদের জসিমের মন তো আরও খারাপ! তার স্কুল, স্কুলের বন্ধুরা, টিচার আপা, স্কুলের বই-এসব ছেড়ে সে কিছুতেই থাকতে চায় না। প্রতিদিনই কেঁদেকেটে দাদীর কান ঝালাপালা করে দিয়েও কোনই লাভ হল না, বরং যখন সে বললো যে একাই ঢাকা চলে যাবে, ওর দাদী শক্ত মোটা দড়ি নিয়ে ঘরের কড়িকাঠের সাথে বেঁধে দড়ির আরেক মাথা ওর কোমরের সাথে বেঁধে রাখলো। ছোট্ট জসিম কি আর পারবে এই শক্ত দড়ি ছিঁড়তে? নিশ্চয়ই একরাত পরেই মাথা ঠান্ডা হবে। এমনটাই ভাবলো ওর দাদী।
কিন্তু, জসিম ছোট হলে কি হবে, লেখাপড়ার প্রতি ওর অদম্য আগ্রহ- কিভাবে কিভাবে যেন ঠিকই খুলে ফেললো দড়ির বাঁধন, আর এরপর সে রাতেই লঞ্চে চেপে বরিশাল থেকে ঢাকা – এক্কেবারে একা! শুধু তাই না, সে কিন্তু ঢাকায় এসে সরাসরি জাগো স্কুলে এসে হাজির!! ওকে দেখে জাগো স্কুলের অফিসের আপা তো অবাক!! এই টুকুন ছেলে কাউকে না বলে সেই বরিশাল থেকে একা চলে এসেছে, শুধু লেখাপড়ার টানে!
ওর বাবাকে ডেকে ঠান্ডা মাথায় অনেক ভাল করে বোঝানো হল সেদিন। ওর বাবাও এক পর্যায়ে রাজী হল ওকে আবারো ক্লাস করতে দিতে। আমাদের জসিমের মুখের কোনে এতোক্ষণে এক চিলতে হাসি দেখা গেল!
আমরা যারা উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত সমাজের বাসিন্দা – হয়ত আমরা ধারণাও করতে পারিনা যে, সুবিধাবঞ্চিত সমাজের এই শিশুগুলোর জন্য শুধুমাত্র লেখাপড়া করতে চাওয়াটাও কত কঠিন, কত পাহাড়সম এক চাওয়া! কিন্তু ওদের সংখ্যা যেখানে অনেক, সেখানে ওদেরকে বাদ দিয়েই কি আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা আদৌ সম্ভব!? না, এক্কেবারেই না। শিক্ষা সবার জন্য। মানসম্মত শিক্ষায় শিক্ষিত হোক পুরো জাতি! এভাবেই আসুক পরিবর্তন!
ঠিক এই মুহুর্তে জসীমের মত আরও ৭০০ জাগো-শিশু অধীর অপেক্ষায় আছে আপনারই মত কোন সহৃদয় মানুষের, যিনি আমাদের চাইল্ড-স্পন্সরশীপ প্রোগ্র্যামের মাধ্যমে অন্তত একজন জাগো-শিশুর লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব নেবেন, মাসিক মাত্র ২,০০০ টাকায়! এই টাকা, একটি শিশুর মানসম্মত শিক্ষালাভের পাশাপাশি তার যাবতীয় বইখাতা, পেন্সিল-রাবার, স্কুল-ইউনিফর্ম, স্কুলব্যাগ আর নিয়মিত পুষ্টিকর ফলমূল আর ব্রাশ, টুথপেস্ট, সাবান ইত্যাদি পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। সেই সাথে ওর চিকিৎসা-সুবিধাদি তো থাকছেই।
আমাদের চাইল্ড স্পন্সরশীপ প্রোগ্র্যামের বিস্তারিত জানতে ভিসিট করুনঃ http://jaago.com.bd/sponsor-a-child/; চাইলে এখনই কল করতে পারেন আমাদের হটলাইনেঃ Contact – +৮৮০ ১৭৬৬ ৬৬৬ ৬৬২