স্বদেশ রায়ের লেখায় রিজভী পরিবার রাজাকার

টিআইএন॥ বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক রুহুল কবির রিজভীর বাবা যে রাজাকার ছিলেন তা আমরা নতুন প্রজন্মের কয়জনে জানতাম ? ধন্যবাদ সিনিয়র সাংবাদিক স্বদেশ রায়, নতুন প্রজন্মের কাছে তথাকথিত দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদ রিজভীর বাবার পরিচিতি তুলে ধরার জন্য। রিজভীর বাবা রাজাকার হিসেবে ১৯৭১ সালে জুলাই-আগস্ট মাসের দিকে পুলিশে চাকরি পান এবং বগুড়ার একটি থানায় তাহার পোস্টিং হয়। ওই থানার পুলিশ (যার ভেতর রিজভীর বাবাও ছিল) ও রাজাকাররা মিলে সেখানকার একটি গ্রামে হামলা চালিয়ে অধিকাংশ পুরুষকে razakar rizbi হত্যা করে, নারীদের শ্লীলতাহানি ঘটায় এবং তাদের সম্পদ লুট করে বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। ডিসেম্বরে ওই থানা মুক্ত হওয়ার পর, মুক্তিযোদ্ধারা ওই থানার সকল কোলাবরেটর পুলিশকে ধরে জীবিত অবস্থায় বস্তায় ভর্তি করে পাথর বেঁধে নদীতে ফেলে দেয়। প্রায় সব কোলাবরেটর পুলিশ বস্তাবন্দী অবস্থায় পানিতে ডুবে মারা যায়; কিন্তু রিজভীর বাবা যে কোন ভাবে হোক ওই বস্তা ছিঁড়ে বের হয়ে বেঁচে যেতে সক্ষম হন । এরপর সে পরিবার নিয়ে দিনাজপুরের দিকে কোথাও পালিয়ে যায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর রাজাকাররা আবার স্বস্থানে ফিরে আসে। কিন্তু জনরোষের কারণে বগুড়া এলাকায় আর ফিরতে পারেনি রিজভীর বাবা। রাজশাহীতে সেটেল করে। আজও বৃহত্তর বগুড়া জেলার সেই সব মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছেন, তাঁদের কাছে শুনলে বর্তমান প্রজন্মের বিএনপির ওইসব তরুণ কর্মীরা জানতে পারবেন। রাজাকারের সন্তান আজ বিএনপির মূল মুখপাত্র। একাত্তরের অবশিষ্ট রাজাকার, রাজাকারের সন্তান ও জামায়াত, বিএনপি ও এরশাদ মিলে পাকিস্তান সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় গত ৩৯ বছরের বেশি সময় ধরে গড়ে তোলা জঙ্গীরা এখন বেগম জিয়ার আঁচলে। এ দেশে যদি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট না হতো, দেশ যদি মুক্তিযুদ্ধের ধারায় প্রবাহিত হতো, তাহলে অধিকাংশ রাজাকারের সন্তান কিন্তু রাজাকারের চিন্তাধারায় বড় হতো না। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হলো রাজাকারের সন্তান রাজাকারই হয়েছে। তারা যাতে রাজাকারের চেতনায় বড় হয়, রাষ্ট্র তাদের সেই পরিবেশই দিয়েছে দীর্ঘকাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published.