কিশোরগঞ্জে রাতের আঁধারে শত বছরের পুকুর ভরাট

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কিশোরগঞ্জে রাতের আঁধারে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুকুরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন হলেও তা ভরাট বেআইনি বলে জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলা শহরের নগুয়া প্রথম মোড় সংলগ্ন বিন্নগাঁওয়ে অবস্থিত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পুকুরটিকে মাটি দিয়ে দুই পাড় ভরাট করে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন জানান, এক সময়ে এই পুকুরে মানুষ গোসল করতো এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রতিমা বিসর্জন দিত। কয়েক দিন ধরে দেখছি পুকুরটি ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। one night fillup pond
পুকুরটির মালিক দুলাল বসাকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটি এখন আর আমাদের মালিকানায় নয়। আমরা তা বিক্রি করে দিয়েছি। কিন্তু কে বা কারা তা কিনেছেন তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা মঞ্চ (পরম) এর সভাপতি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর জেলা শাখার সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শরীফ আহমেদ সাদী বলেন, এটি একটি শত বছরের ঐতিহ্যবাহী পুকুর। পুকুরটি মালিকানা হলেও তা ভরাট করা যায় না।
পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন বাপার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সাইফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, পুকুরটিকে ভরাট করে ফেলায় পরিবেশের জন্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাড়বে। তাই সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরগুলো রক্ষায় আশু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
সূত্রমতে, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক আদেশে বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, জনগণের আশ্রয়স্থল রক্ষা ও অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করতে কোনো অবস্থায় খাল, বিল, পুকুর-নালাসহ প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা যাবে না। জনস্বার্থে এর ব্যতিক্রম করতে হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া নিজের মালিকানাধীন পুকুরও ভরাট করা যাবে না।
কিশোরগঞ্জের সচেতন মহলের দাবি, পুকুরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন হলেও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে এটি রক্ষা করা জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.