আবদুল আখের॥ বিএনপি নেতা মেজর হাফিজ বলেছেন কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। খালেদা জিয়া যদি দুর্নীতি করে থাকেন তাহলে তিনি যথাযথ শাস্তি পাবেন, এ নিয়ে আন্দোলন করার কিছু নেই। ‘কিন্তু তিনি যদি দুর্নীতি না করে থাকেন, তাহলে তাকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে? রাষ্ট্রপক্ষ কি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছে?’, বলেন মেজর হাফিজ।
মেজর হাফিজ বরাবরই বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা এবং রাজনীতি থেকে খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার পক্ষে। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি বিএনপির সংস্কারপন্থী অংশের মহাসচিব ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বলেন সরকারের নির্দেশনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে ঠিকই, কিন্তু তাই বলে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামী ছিনতাই সমর্থনযোগ্য নয়। এতে অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হচ্ছে, দলের ক্ষতি হচ্ছে।
‘চ্যারিটেবল ট্রাস্টের মাধ্যমে টাকা ঠিকই এসেছিল, তাহলে এত বছর কেন এতিমখানা হলো না? এই দোষ কার? আমি আইনজীবীদের কাছে জানতে চেয়েছি, এ বিষয়ে তারাও জানেন না। তাহলে তারা মামলা লড়ছেন কীভাবে?’, বলেন বিএনপি আমলে একসঙ্গে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা এই নেতা।
তিনি বলেন, সন্তোষজনক জবাব না পেলে আদালত স্বাভাবিক নিয়মে সাজা দেবেন। এ নিয়ে আন্দোলনের কী আছে? সুস্থ মস্তিস্কের কেউ আন্দোলনে যাবে না। রাজনীতি মানে কারও কাছে বিবেক বন্ধক দেওয়া নয়।
২০১৮ সালের শুরু থেকেই আগামী জাতীয় নির্বাচনের শঙ্কা-সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে এবছর। তবে এখনো নির্বাচনকালীন সরকারের বিতর্ক দূর হয়নি বরং তুঙ্গে উঠতে শুরু করেছে। বুধবার সংসদ অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান অনুযায়ী সহায়ক সরকার বলে কোনো সরকার গঠনের বিধান নেই।
এর মধ্যে বাড়তি উত্তেজনা যোগ করেছে খালোদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসন্ন রায়। রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকায় হাইকোর্টের কদম ফোয়ারার মোড়ে বিএনপির মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও প্রিজন ভ্যানের তালা ভেঙে আটক দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। এরপর ওই রাতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করা হয়।
গত বুধবার আদালত পুলিশ ভ্যানে হামলা ও নাশকতার ৪ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে ৫৯ বিএনপি নেতা-কর্মীকে ২ থেকে ৩ দিন করে রিমান্ড এবং জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে তোলা হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষও তার রিমান্ড আবেদন জানায়নি। আদালত গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।