রাজুল ইসলাম॥ কমিউনিটি ক্লিনিকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরি প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ভুক্তভোগী মো: সহিদুল ইসলাম, কামাল সরকার, জাহিদুল ইসলামসহ ১০ জনের করা রিট আবেদনের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। গত ২২ মার্চ দেওয়া ওই রায়ের ১০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ কপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনকারী ১০ ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ রায় দিয়েছেন বলে জানান রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। এ রায়ে সারাদেশে ওই পদে কর্মরত সাড়ে ১৩ হাজার ব্যক্তির চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের পথ সুগম হলো বলে জানান তিনি।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার ১৯৯৬ সালে সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের প্রকল্প নেয়। এর আওতায় সারাদেশে ১০ হাজার ক্লিনিক স্থাপন করা হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের কারণে এ প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে রিভাইটালাইজেশন অব কমিউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ (আরসিএইচসিআইবি) নামে নতুন প্রকল্প নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় আগের ১০ হাজার ক্লিনিক সংস্কার করে এবং নতুন আরও সাড়ে তিন হাজার ক্লিনিক স্থাপন করা হয়।
২০১১ সালে এসব ক্লিনিকের প্রতিটিতে একজন করে সিএইচসিপি নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের জন্য প্রকল্পে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে তা আরও দুই বছর অর্থাৎ ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরইমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতর তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুপারিশ করে তা বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। ২০১৬ সালে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সাড়ে ১৩ হাজার সিএইচসিপিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি (এইচপিএনএসপি) প্রকল্পে স্থানান্তর করা হয়।
তাদের আগামী ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পে স্থানান্তর করে গত ১৫ মে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে তাদের নতুন প্রকল্পে স্থানান্তরের আগেই রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এরপর ২২ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায়ে রিট আবেদনকারীদের (১০ জন) চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।