ইসরাত জাহান লাকী॥ বিএনপি নেতারা এখন বলছেন এটা ‘মিশন ইম্পসিবল’। ‘সব চেষ্টা করা হয়েছে কোথাও কিছু পাওয়া যায়নি।’ গত রোববার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ক্ষুদ্ধ বেগম জিয়া বলেছিলেন ‘আপনারা শেখ হাসিনার দুর্নীতির একটা প্রমাণ আনতে পারলেন না?’ ২০১০ সাল থেকেই বিএনপি এই মিশন শুরু করেছিল। এর মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেড শফিক রেহমানকে। সঙ্গে ছিলেন আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। লন্ডন থেকে তারেক জিয়া ভাড়া করেছিলেন ড. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যানকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল একটাই শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের কথিত দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচারের তথ্য সংগ্রহ করা। কিন্তু সাত বছরে বেগম জিয়ার কাছে সাগর সেঁচে কেউ একটা মনিমুক্তা এনে দিতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের তথ্য যোগাড় করতে শফিক রেহমান টাকা পাঠিয়েছিলেন মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে এফবিআইয়ের কর্মচারীকে ঘুষ দিতে গিয়ে ধরা খেয়েছিলেন বিএনপির একজন নেতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্ব-প্রণোদিত হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়ের আর্থিক বিষয় খতিয়ে দেখে। এসব ঘাঁটাঘাটি করে এক কানাকড়িও অবৈধ অর্থ পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর মেয়েকে নিয়েও তদন্ত করেছে। পরে নিজেরাই বলেছেন, সায়মা এত সুযোগ থাকার পরও এত সাদামাটা জীবন যাপন করে। সবচেয়ে বেশি হন্যে হয়ে খুঁজেছে শেখ রেহানার ব্যাপারে। বিএনপির এক নেতার ভাষ্য, ‘লন্ডনে এতদিন থাকার পর, তাঁর মেয়ে এমপি তবুও তিনি (শেখ রেহানা) যে সাদামাটা জীবন যাপন করেন, তা এক অনুকরণীয় উদাহরণ।’ শেখ রেহানা এখনো লন্ডনে বাসে চলেন। থাকেন ছোট্ট এক বাসায়। অথচ তারেক জিয়া লন্ডনে মধ্যেপ্রাচ্যের শেখদের মতন জীবন যাপন করেন।
বিএনপির একজন নেতা বলেছিলেন, ‘ডেভিড বার্গম্যানকে একবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শেখ রেহানার একটি দুর্নীতি খুঁজে বের করার জন্য। কিন্তু শেষে বার্গম্যানই রণে ভঙ্গ দিয়েছে।’ বিশ্বের কোথাও বঙ্গবন্ধু পরিবারের এক টাকাও অবৈধ সম্পদ নেই। এটাই বেগম জিযার ক্ষোভের কারণ। বেগম জিয়া মনে করছেন, যাদের তিনি এসব খুঁজে বের করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁদের সরকার ম্যানেজ করেছে। কিন্তু শফিক রেহমান বেগম জিয়াকে এফবিআইয়ের রিপোর্ট দেখিয়ে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।’ কিন্তু তখন রিপোর্টটি তিনি বিশ্বাস করতে রাজি নন। তিনি গত রোববারের স্থায়ী কমিটির সভাতেও বলেছেন, ‘আমি শেখ হাসিনার দুর্নীতির তথ্য চাই।’ বৈঠকে নেতারা চুপচাপ ছিলেন। বেরিয়ে ফিসফিস করে বলেছেন, ‘দেখেন না, শেখ হাসিনার বুকের পাটা, ঠাস ঠাস করে কথা বলে। দুর্নীতি করলে কী গলার স্বর এত চড়া হতো?’ দুর্নীতির তথ্য অনুসন্ধান এখন তাই বিএনপির নেতাদের জন্য হয়ে গেছে ‘মিশন ইম্পসিবল’।
আর যাই হউক দুর্নীতিতো খুজে পেল না কিন্তু নিজের দুর্নীতির খতিয়ানতা এখন বিশ্ববাসীর চোখ দর্পনে। তাই বলতে হয় ঐ নুরুল ইসলাম চোরের কাহিনী। কারণ ঐ চোর মনে করে সবাই তার মত চোর। নুরুল ইসলাম থেকে নূরা চোরা। তারপর নিজে বাচার জন্য চিৎকার করে বলতেছিল ইসলাম গেল ইসলাম গেল। তখনই মানুষ তাকে রক্ষা করে এবং আলোতে এনে দেখে ঐ নোরা চোরা। তাই সাধু সাবধান। কেচু খুঁড়তে গিয়ে সাপ যেন আর বের হয়ে না আসে সেই চেষ্টায় লিপ্ত থেকে সংশোধনের মনোভাব নিয়ে ইতিবাচক রাজনীতি ও চিন্তা চেতনার চর্চায় মনোনিবেশ করুন।