তাজুল ইসলাম নয়ন॥ বিশ্ব ভালবাসা দিবস শুধুযে প্রেমের ক্ষেত্রেই সমুজ্জল তা কিন্তু নয় বরং পারস্পারিক সম্প্রতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও ধারাহিক সমুজ্জ্বল। সদ্য স্বাধীন হওয়ার বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঘটেছে এক দৃষ্টান্ত। ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশকে কানাডার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দিন। ১৯৭২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কানাডা সরকার স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামের সদস্যপদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়ই কানাডা সরকার এবং কানাডার জনগন বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয়। প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। স্বাধীনতার পর পরই যে কটি বন্ধুপ্রতিম দেশ নতুন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে এগিয়ে আসে কানাডা তাদের মধ্যে অন্যতম।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধবিধ্বস্থ বাংলাদেশ এবং দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের দুর্দশা সরেজমিন দেখতে কানাডা সরকার তিন সদস্যের সংসদীয় একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ ভারতের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ভারতের বিভিন্ন আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধিদলটি ১৯ জুলাই ১৯৭১ তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের উপর পৈশাচিক হামলার বিবরন তুলে ধরে তার প্রতিকারের দাবিও তোলা হয় সেই প্রতিদবেদনে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডোকে ‘মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ট্রিয়ল সফরকালে পিয়েরে ট্রুডোর ছেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর হাতে সেই সম্মাননা তুলে দেন।