এস কে কামাল॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য ৩১টি যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন বিশেষ আদালত। এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। গত সোমবার খালেদা জিয়ার কারাদন্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। এদের মধ্যে তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক। খালেদা জিয়ার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল গ্রহণের ওপর শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টের কার্যতালিকায় আনা হয়েছে। হাইকোর্টের কার্যতালিকায় দেখা যায়, শুনানির জন্য মামলাটি ৬ নম্বরে রাখা হয়েছে।
আইনজীবী জানান, যেসব যুক্তি তুলে ধরা হবে তার মধ্যে রয়েছে :
এ মামলায় খালেদা জিয়া নিম্ন আদালতেও জামিনে ছিলেন। তখন তিনি জামিনের নিয়ম ভঙ্গ করেননি। ফলে তিনি উচ্চ আদালতেও জামিন পেতে পারেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী একজন বয়স্ক নারী। তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। এই পরিপ্রেক্ষিতে দন্ডবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী তিনি জামিন পেতে পারেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে বিশ্বাসভঙ্গের দায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। এটি আইন অনুযায়ী সঠিক হয়নি। যে আইনে মামলা, সেই আইনে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মনে করেন, তিনি এই মামলায় চূড়ান্তভাবে খালাস পাবেন। তাই তিনি জামিন পেতে পারেন।
মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদের আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার নাম ছিল না। পরে মামলার বাদী হারুন অর রশিদ নিজে তদন্ত করেন এবং নিজেই আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে খালেদা জিয়ার নাম আনেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগির হোসেন লিওন বলেন, ‘এসব কারণ দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জামিন চাওয়া হবে। আমরা আশা করি, তিনি জামিন পাবেন এবং এই মামলা থেকে আদালত তাঁকে খালাস দেবেন।’
কথা হলো যে ৩১টি যুক্তি দ্বার করিয়েছেন বিএনপির মনোনীত বিজ্ঞ আইনজীবিগণ সেই ৩১টি যুক্তিই পুর্বে কোট থেকে প্রত্যাখ্যাত বা নেতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হয়ে। ঐ ৩১ যুক্তির কোনটিই তখন বিচারকের কাছে টিকেনি। যদি সেই যুক্তিগুলো যুক্তিসংগত হতো তাহলে খালেদা জিয়াকে আর সাজা ভোগ করতে হতো না এমনকি জেলের ঘানিও টানতে হতো না। এখন আবার সেই পুরোনো পরাজিত যক্তিগুলো কেন দাড় করালো তা বোধগম্য নয়। অপরদিকে সত্যিকারের অপরাধকে যদি রাজনৈতিক আবরণে পার পাওয়া যায় তাহলে হয়তো আগামী দিনে সকলেই রাজনৈতিক আবরণে সকল ঘোষিত বা অঘোষিত দুর্নিতী চালিয়ে যাবে। জাতী রাজনৈতিক অপচেষ্টা বা নেতিবাচক চর্চার মুখোপেক্ষি হবে।
সবই এখন বিচারক এবং জাতির বিবেকের কাছে রাখা আছে। আগামী দিনের বিবেক এবং বিচারক উভয়ই একসঙ্গে কাজ করবে; নতুবা নতুন সমান সৃষ্টি হবে না। দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে না এবং এই দেশকে নিয়ে গর্ব করার কিছুই আর অবশিষ্ট থাকবে না।