আলমাস হোসেন, সাভার প্রতিনিধি॥ আশুলিয়ার চলন্ত যাত্রীবাহি বাসে ডাকাতি ও চালকে খুনের ঘটনায় ১৩ জন পেশাদার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও আশুলিয়ার স্থানে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার বিকালে তাদের আশুলিয়া থানা আনা হয়। এসময় ডাকাতি ব্যবহৃত অস্ত্র ও নিহত চালকের মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলো-সজীব, ইমরান হোসেন, কাউসার, জামিরুল, আরিফ, লিটন, উজ্জ্বল, জিহাদ, ইমরান মিয়া ও নাইম হোসেন। বাকী ৩ জনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, যাত্রী বেশে ডাকাত চক্রটি চলন্ত বাসে ডাকাতি করে আসছে। বিশেষ করে টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের বাসগুলো তাদের মুল টার্গেট। যাত্রীর মতো ব্যাগ ও মালামাল নিয়ে তারা বাসে উঠে। পরে সুযোগ বুঝে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ও যাত্রীদের হাত পা বেঁধে মালামাল লুট করে নেয়। কেউ বাঁধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে। পরে নিরিবিলি জায়গা বাস ফেলে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। ১৩ ই ফেব্রুয়ারী রাতে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকাগামী বাসে যাত্রী বেশে ১৬ ও ১৭ জন ডাকাত উঠে। পরে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে চালক বাঁধা দেন। এসময় চালকে বুকে ছুরিঘাত করে বাসের পিছনে ফেলে রাখা হয়। ডাকাতি শেষে আশুলিয়ার বলিভদ্র এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায়। তবে ততক্ষণে বাসের চালক মারা যায়।
এ বিষযে আশুলিয়া থানার এস আই মাসুদ রানা জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারী চলন্ত বাসে ডাকাতি করে চালকে খুন আশুলিয়ার বলিভদ্র এলাকায় বাস ফেলে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পরে সেই ঘটনার সূত্র ধরে অভিযান চালানো হয়। এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী বেশে মহাসড়কের বাসগুলো ডাকাতি করে আসছিলো। তবে এই চক্রের মুল হোতা আসিফ ও রুবেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের কয়েকটি দল কাজ করছে বলে জানায় ঢাকা জেলা উত্তর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ। তিনি আরও জানান, আশুলিয়া থানা পুলিশ কয়েকজন গ্রেপ্তার করেছে ও ডিবি পুলিশ এ ঘটনায় কয়েজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। বাকী ডাকাতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অভ্যহত রয়েছে।
উল্লেখ্য গত ১৩ ফেব্রুয়ারী ভোরে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার বলিভদ্র এলাকা থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইলের ধলেশ্বরী পরিবহনের ইনসাফ ইন্টারপ্রাইজ নামক বাসের ভিতর থেকে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে নিহত চালক শাজাহান মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বাসের হেলাপার ও সুপারভাইজারও গুরুতর জখম হয়। পরে নিহতের ভাই মজিবর বাদী আশুলিয়ায় থানা অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করে খুনসহ ডাকাতির মামলা দায়ের করেন।