বাআ॥ সরকার চাইলে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ ছাড়া বাংলাদেশের যে কোনো বড় প্রকল্পেও অর্থায়ন করার আগ্রহ রয়েছে সংস্থাটির। প্রতিশ্রুত ঋণ সহায়তার বাইরে এডিবি এসব অর্থায়ন করবে। গত বুধবার সফররত এডিবির প্রেসিডেন্ট তাকাহিকো নাকাও ঢাকা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
দুই দিনের সফরে গত সোমবার রাতে ঢাকায় এসেছেন এডিবি প্রেসিডেন্ট। গত মঙ্গলবার কয়েকটি প্রকল্প পরিদর্শনসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় কাটান তিনি। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি, এডিবির অংশগ্রহণ নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন। তাতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। এর পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নে এডিবির আগ্রহ রয়েছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে অর্থায়ন বাড়াবে এডিবি।
বর্তমানে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। এ সেতু নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পদ্মার পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বড় প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে এডিবি। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপন, ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে এডিবি অর্থায়ন করছে। আগামীতেও বড় বড় প্রকল্পে অংশ নেবে। তবে বাংলাদেশে অতিরিক্ত অর্থায়ন করতে গিয়ে এডিবির সদস্য অন্য দেশগুলোতে যাতে ঘাটতি না হয় সে বিষয়ও বিবেচনায় রাখা হবে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার এক বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী দ্বিতীয় পদ্মা সেতুতে এডিবিকে অর্থায়ন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এডিবি সেখানে বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত। সরকার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিলে অবশ্যই তা বিবেচনা করা হবে। প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের (ফিজিবিলিটি স্টাডি) ক্ষেত্রেও এডিবি সহায়তা করতে পারে।
শুরুতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছিল- মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশে যে আর্থ-সামাজিক চাপে পড়েছে, তা সমাধানে এডিবি এগিয়ে আসবে কি-না? উত্তরে তাকাহিকো নাকাও বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যেভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসার। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে খুবই ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকার চাইলে সহায়তার জন্য এডিবি প্রস্তুত। ভাসানচরে সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য যে আবাসন উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানেও চাইলে সংস্থাটি সহায়তা করবে।