যোগ্যনেতৃত্ব নির্বাচন এবং দেশগঠনে নাগরিক দায়বদ্ধতা

a wakilআলহাজ্ব মোঃ ওয়াকিল উদ্দিন॥ ১৯৭১ এ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর দেশ গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধু কেবল তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এই অল্প সময়েই প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত এবং সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে উন্নয়নের বীজ বপন করে যাচ্ছিলেন তিনি। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে একটি স্বনির্ভর দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার সেই অগ্রযাত্রায় ছেদ পরে পঁচাত্তরের কালোরাতে। বিপথগামীদের গুলির নিশানায় অঙ্কুরেই স্তব্ধ হয়ে যায় স্বাধীন বাংলার উন্নয়নের রূপকথা।
তারপরের ২১ বছর কেটেছে পরনির্ভরতায়। জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে এরশাদ সরকার হয়ে খালেদা জিয়া পর্যন্ত আমরা হয়েছিলাম করুনাবন্দী! যোগ্য-বলিষ্ঠ নেতৃত্বগুণের অভাব একটা জাতিকে যে কতটা পিছিয়ে দিতে পারে, এসময় তার অন্যতম স্বাক্ষী হয়ে ছিলো বাংলাদেশ। ১৯৯৬ এ যখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় যাওয়ায় আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ ব্যাপক উন্নতির পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। অপার সম্ভাবনা দৃশ্যমান হতে থাকে। বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা, প্রতিবন্ধীদের সেবাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন জনজীবনে আস্থা সৃষ্টি করে। কিন্তু হায়! ২০০১ সালের নির্বাচনে গভীর চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হয়নি, শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ।
২০০৯ সালে সরকার গঠন করে আশু করণীয়, মধ্য-মেয়াদি ও দীর্ঘ-মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করে, দশ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহন করে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
প্রিয় সাথীরা, রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকবেই, কিন্তু একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ববোধ আমাদের যোগ্যনেতৃত্ব নির্বাচনের তাগিদ দেয়। অন্ধ সমর্থন নয়, জাতীয় উন্নয়নের গ্রাফ, রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতা, বহির্বিশ্বে দেশের অবস্থান তৈরি এবং সর্বাগ্রে জনগনের স্বার্থ এসব কিছু মিলিয়েই আমাদের বিচার বিবেচনা করতে হবে। যে সরকারের কাছে জাতীয় স্বার্থ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে, যে সরকারের কাছে দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজ বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না সেই সরকারের সাথেই থাকবে একজন দেশপ্রেমিক নাগরিকের সমর্থন।
প্রির বন্ধুরা, আসুন আমার আপনার মূল্যবান সমর্থনকে দেশ ও জাতির কল্যাণে ব্যাবহার করি। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের মধ্যে সাফল্য ও উন্নয়নের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করি এবং আমাদের সমর্থন যেন যোগ্যতম নেতৃত্বের সাথেই থাকে তা নিশ্চিত করি। মনে রাখতে হবে, আমার আপনার নেতৃত্ব নির্বাচনের ভুল, যোগ্যদলকে রাষ্ট্র পরিচালনার ভার সমর্পণ না করার ব্যর্থতা দেশকে আবার নিয়ে যেতে পারে সেই অন্ধকারে যেখানে থমকে যায় উন্নয়নের জয়গাঁথা, স্তিমিত হয়ে যায় রাষ্ট্রের জীবনীশক্তি! আমরা যেন সেই ভুলের পথে আর পা না বাড়াই, দেশের অগ্রযাত্রায় নিজ নিজ কর্তব্য পালন করি সংকল্পচিত্তে!
ধন্যবাদান্তে- আপনাদের অকৃত্রিম..বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ ওয়াকিল উদ্দিন; সদস্য, জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.