ইসরাত জাহান লাকী॥ মনটা খুব ফুরফুরে। নতুন ডিআইজি হয়েছি! সকাল সকাল অফিসে গেলাম। শুভানুধ্যায়ীদের ফুল আর মিষ্টি নিয়ে অভিনন্দন জানানো চলছেই। ‘কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ এর অতিরিক্ত কমিশনার বা প্রধান হিসেবে আদেশ জারী হলো। যোগদান করলাম। তারিখটা ১৬/০২/২০১৬। বাস্তবে এই ইউনিটের তখনও কোন অস্তিত্ব ছিল না, শুধু আমার বদলির আদেশ ছাড়া। গত ১৯/০৩/২০০৯ থ্রিঃ থেকে ‘ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চে’ কাজ করে আসছিলাম। “Detective Branch” আমার যোগদানের আগে থেকেই একটি প্রতিষ্ঠিত ইউনিট। আমি আসার পর সহকর্মীরা এটাকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেছে। এই অবস্থায় “Detective Branch” এর সমান্তরাল নতুন একটি ইউনিট কার্যকর করা সত্যিকার চ্যালেঞ্জের ব্যাপার। তারপর জনবল বলতে আমি একা, অফিস নাই, গাড়ি নাই, প্রশিক্ষন নাই, বলতে গেলে মনোবল আর আত্মবিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নাই। পুলিশ কমিশনার মহোদয়ের অকুন্ঠ সাপোর্ট আর তৎকালীন আইজিপি জনাব একেএম শহীদুল হকের অনুপ্রেরণা আমার এগিয়ে চলাকে অনেকটাই শক্তি যুগিয়েছে। শুরু হলো বন্ধুর পথ চলা। জনবল নির্বাচন ও সংগ্রহ, দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা, লজিস্টিক সংগ্রহসহ প্রতি ধাপে ধাপে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা।
মে মাসের শেষদিকে ICPVTR, Singapore এর সহায়তায় প্রায় ৩০০ সদস্যের ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং করলাম। দেখতে দেখতে নারকীয় Holey Artisan Attack হলো। আমরা ও প্রকৃত পক্ষে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করলাম। তারপরের দিনগুলো “Counter Terrorism and Transnational Crime” ইউনিটের সাফল্যের ইতিহাস। একের পর এক Intelligence-led Preemptive সফল অভিযান। শুধু দেশে নয়, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের Counterterrorism Community-র কাছে CTTC একটি Brand name. সেই অর্থে CTTC র আজ দু’বছর পূর্ণ হলো। সাফল্যের মূল কারন হলো CTTCর এক ঝাঁক নিবেদিত তরুন যারা তাদের আবেগ, দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা, সাহস দিয়ে নানারকম সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করেছে। আরো যা করা যেত কিন্তু করতে পারিনি তা শুধুই আমার দায়। CTTC-র দু’বছর পূর্তিতে সবাইকে সীমাহীন কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানাই!