তাইসলাম॥ যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছে সরকার। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই বলেই মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কয়েকজন কূটনীতিক।
জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়ার কারাদন্ড প্রাপ্তির পর ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণের সাথে বিএনপি নেতৃবৃন্দের দফায় দফায় বৈঠক হলেও বেগম জিয়ার কারাদন্ড নিয়ে কেউই মুখ না খুললেও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সে সময় ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিগণ এমনকি সর্বশেষ দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক শীর্ষস্থানীয় মার্কিন বিশেষজ্ঞ লিসা কার্টিসও বেগম জিয়ার কারাদন্ড নিয়ে কোনো কথা না বলে নির্বাচন নিয়েই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং বিবৃতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, সকল কূটনীতিকরাই বেগম জিয়ার কারাদন্ডের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেশ চমকিত হন যা তাদের কাছে ধারণাতীত ছিল। তাই এর কারণ জানতে কৌতুহলী হয়ে পড়েন। পরে তারা সরকার ও বিরোধী দলের অনেকের সাথে যোগাযোগ এবং তাদের নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারেন, বিএনপি যাই বলুক মূলত সম্ভাব্য অরাজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি ও কৌশলের কারণেই বিএনপি বা সুযোগসন্ধানী মহল কোনরূপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ পায়নি।
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার বানচালে জামায়াতের সহিংসতা ও ২০১৪-১৫ সালে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিএনপির সহিংসতার অভিজ্ঞতার আলোকে বিদেশি কূটনীতিকগণ বেগম জিয়ার কারাদন্ডের পর তেমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি সৃষ্টির আশঙ্কা করলেও কোনো দেশই তাদের নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা জারি করেনি সে সময়ের মতো। কেননা, ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিও সরকার দক্ষতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হওয়ায় সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা বৃদ্ধি পায়। ফলে বিদেশি বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত না হয়ে বরং আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বিদেশি কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক সরকারের পররাষ্ট্র-বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীর সাথে আলাপকালে ২০১৪-১৫ এবং বেগম জিয়ার কারাদন্ড প্রাপ্তির পরে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও উৎসাহিত করতে যেকোন পরিস্থিতি দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে পারে তারা এমন সরকারই চায় বলে মত প্রকাশ করেন। কেননা, তাদের কাছে তাদের দেশের নাগরিক নিরাপত্তা ও বিনিয়োগের পরিবেশই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া ২ মার্চ ঢাকায় আগত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক নিরাপত্তা উপদেষ্টা লিসা কার্টিসও বলেছিলেন, “বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক কোনো অভিলাষ নেই তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সবসময় একটি শক্তিশালী সরকার দেখতে চায় যারা যেকোন পরিস্থিতিতে দেশকে স্থিতিশীল ও জঙ্গিবাদমুক্ত রাখতে সক্ষম এবং আমার মনে হয়, বাংলাদেশের সরকার সঠিক পথেই চলছে।”