তাজুল ইসলাম নয়ন॥ এই একটি বিষয়ে নিশ্চয়তা এবং গ্যারান্টি ১০০ভাগ দেয়া যায় যে, আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ। পৃথিবীর ইতিহাসে যদি একটি নির্বাচন স্বচ্ছ বা নিরপেক্ষ- যাকে গ্রহণযোগ্য বলা যাবে; তা হবে ২০১৮ এর নির্বাচন। বাংলাদেশ এবং আগামী নির্বাচন ইতিহাস হয়ে থাকবে এবং আগামী দিনের জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে পৃথিবীর গণতন্ত্রকামী মানুষের গণতন্ত্রের এবং নির্বাচনের সামনে টনিক ও পথদর্শন হিসেবে কাজ করবে।
এই নির্বাচন নিয়ে নানা ধরণের কথার ফুলঝুঁড়িতো চলছেই। কিন্তু নির্বাচনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং তৎপরবর্তী চিন্তা এমনকি কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। দেশী বিদেশী দুতিয়ালীর যাতাকলে প্রায় পিষ্ঠ এখন অতিষ্ট জনগণ। জনগন চাই উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা ও কার্যকরী একটি জনবান্দব সরকার এবং এর কাঠামোগত দৃশ্যমান ব্যবস্থা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই যিনি বা যিনারা এগুচ্ছে তাদেরই মহা আনন্দ এবং জয়োল্লাসে সামিল হওয়ার সুযোগ থাকবে।
দেশের মানুষ এখন একটি বিষয় স্পষ্ট করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা কি চাই। তারা চায় চলমান উন্নয়ন ক্রম ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে। তারা চায় তাদের জন্য যারা কাজ করেছে এক করে যাচ্ছে ও আগামীতে করার নিশ্চয়তা দিয়ে স্বচ্ছতাসহ দৃশ্যমান বাস্তবে পরিলক্ষিত করেছে তাদেরকে আগামীতে আবারো দায়িত্ব দিতে। শুধুযে বাংলার জনগণই চায় তা কিন্তু নয়। বরং বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গিও এখন এই জনগণের চাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সকল সহযোগীতা অব্যাহত রেখে আগামী দিনের করণীয় এর প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করে কাধে কাঁধ মিলিয়ে আগামীর সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা প্রনয়ন এবং একসঙ্গে বাস্তবায়নের সকল ক্ষেত্র উন্মোচন করে অগ্রসর হচ্ছে।
বিগত ৪টি বছর সফলভাবে অতিক্রম করে ৫বছরের সফলতায় এখন এই বাঙ্গালী বিরের জাতি। যা পুর্বে কখনো অর্জন হয়নি এবং হওয়ার স্বপ্ন দেখাও ছিল অবাস্তবের দৃশ্যমান এক ছায়া। অবশ্য কেউ কল্পনায়ও এই অনুভূতি উপলব্দি করতে পারেনি। কিন্তু আজ তা বাস্তবে রূপদান লাভ করেছে এবং হাজারো স্বৃকৃতীর ভিরে এখন আগামী নব স্বৃকীতির লক্ষে এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে ক্ষমতার পালাবদল কল্পে কত কিই না হয়েছে। ফায়দা কি হয়েছে? হয়েছে একটি যা বর্তমান সরকার স্থায়ীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্তে একটি শক্ত ভিত্তিমূল রচিত হয়েছে। জনগণ এবং বহিবিশ্ব দেখতে পেয়েছে ব্যক্তিস্বাথ্য এবং ব্যক্তি লোভ কিভাবে একটি সমাজ, সংসার ও রাষ্ট্রকে অন্ধকার থেকে আরো অন্ধকারে তলিয়ে দিচ্ছে। মানুষ বুঝতে দেখতে ও জানতে পেরেছে এই ব্যক্তিলোভ থেকে গোষ্ঠি লোভ পর্যন্ত ছড়িয়ে দাউদ ও বিখাউজের ন্যায় অন্ধকারাচ্ছন্ন করেছে আমাদের সমস্ত অর্জনকে এবং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত মুল্যবান এক অদৃশ্য সম্পদ যা, দেখা, ছোয়া ও ধরা যায়না সেই হৃদয় এবং বিবেক নামক মানদন্ডকে।
এই বিখাউজ এবং দাউদরূপী রোগের ছোয়া এখনও যা অবশিষ্ট রয়েছে তা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে শেষ ও পড়ন্ত বেলার শেষ সম্বলটুকুকে। কিন্তু কি লাভ হবে; না কোন লাভ বা ফায়দা লোটার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু একটি সম্ভাবনা উকি দিয়ে এগিয়ে আসছে…. যেটিকে সুনামির সঙ্গে তুলনা করা যায়। সেটি হলো হঠাৎ আংগুল ফুলে কলাগাছ বনে রাষ্ট্র শাষন এখন হঠাৎ প্রদীপ নিভে গিয়ে কবরপ্রান্ত কঙ্কালসার হাড্ডিগুলির অদৃশ্য হওয়া মাত্র। এইতো শুরু হয়েছে এবং একে একে অদৃশ্য হয়ে ইতিহাস থেকেও নির্বাসিত হয়ে যাচ্ছে। ইতিহাসতো প্রতিশোধ নেয় আর এই প্রতিশোধ নেয়ার পালাও শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। যেমন গ্রামে কৃষকের মুখে প্রচলিত একটি কথা শোনা যায়– খেতের ইটা খেতেই ভাঙ্গা হয়। ঐ ইটা বা চাকা বাড়িতে এনে বা অনেক দিন, বছর এবং যুগ পার হওয়ার সময় দেয়া হয়না। সাথে সাথেই ভাঙ্গা হয়। কিন্তু প্রতিশোধ নেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সময় দেয়া হয় যাতে পরিবর্তন হয়ে সংশোধীত জীবন যাপন করা যায়। কিন্তু সেখানে ব্যর্থ হলে আর রেহাই নেই; তাই যা হওয়ার তাই হয়েছে এই বেলায়।
একজন নেত্রী আজ জেলে… ভাবুনতো এই করুন পরিণতি এবং লজ্জ্বার কথা। কি দরকার ছিল ঐসকল চুরি চামারী করার। কি দরকার ছিল সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢাকার। কি দরকার ছিল সম্পদের অট্টালিকা তৈরী করার। কি দরকার ছিল সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং নৈরাজ্য ও মরণ নেশার সঙ্গে আপস করার। কি দরকার ছিল মিথ্যাকে নিয়ে লাফালাফি করে সামনে অগ্রসর হওয়ার। কি দরকার ছিল যুগের চাহিদা এবং ¯্রােতের বিপক্ষে গিয়ে দাঁড়ানোর। কোন দরকারই ছিল না। বরং সুযোগ ছিল জনগনের কাতারে থেকে জনগনের দায়িত্ব নিয়ে আগামীর সেবক হিসেবে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার। না হলো সেই আশা পুরন; না হলো চিন্তার ফসল ঘরে তোলা। তবে একটি কথা আছে … গাঁধা পানি খায় ঘোলা করে। গ্রামে যা বলে থাকে গাধা পানি খাও আওড়িয়ে। যা হওয়ার তা হয়েছে এতে করে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সুযোগ হয়েছে আবার জনতাকে এক কাতারে এনে এক মন্ত্রে উজ্জ্বিবীত করে আগামীর চলমান উন্নয়ন ধারাবাহিকতাকে সচল রাখার।
এই অপকৌশল ও অপরাজনীতির মৃত্যুর কারণে দেশী ও বিদেশী মহল এখন একচ্ছত্র প্রচেষ্টা এবং সমর্থন দিয়ে আগামীর দায়িত্ব এর ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন এবং অব্যাহত রাখার প্রায়াসে লিপ্ত। সবাই এখন সম্মিলীতভাবে ইন্ডিয়ার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইন্ডিয়ার চাহিদার যোগান এবং বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক কল্যাণ ও মঙ্গল কামনায় ব্যস্ত। মিথ্যার কোন ফাঁদেই আর কেউ নিজেদেরকে জড়াচ্ছে না। হয়ত কেউ কেউ নাক গলানো বা গোপনে জড়ানোর চেষ্টায় লিপ্ত কিন্তু প্রকাশে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ইন্ডিয়া এবং বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি এখন চায় চলমান সরকারের ধারাবাহিকতা। এইতো সদ্য উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলো বাংলাদেশ। এই অর্জনে ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য আরো ছয়টি বছর আমাদেরকে অগ্রসরমান সমান্তরাল মানদন্ডে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী ছয় বছর যদি এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে তাহলেই আমরা স্থায়ীভাবে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অক্ষুন্ন রেখে পাকাপোক্ত করব। সেই জন্য জ্ঞাত বা অজ্ঞ্যাতস্বরে সকলেই সমস্বরে বলেই বেড়াচ্ছে আগামী সরকার বর্তমান সরকারেরই ধারাবাহিক রূপ মাত্র।
বিরোধী দল বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের কোন সম্ভাবনা নেই নির্বাচনে জিতে এসে সরকার গঠন করার। পাশাপাশি রাজনৈতিক কৌশলেও বর্তমান সরকার জোটগতভাবে ২০০ভাগ অগ্রগামী। গত দুইটি নির্বাচনে এর প্রতিফল দেশবাসি তথা বিশ্ববাসী দেখেছে। একক নির্বাচনেও কৌশলী এবং প্রারঙ্গম পুনরায় ক্ষমতাশীল হওয়ায়। জনগণ সেই সুযোগে সমানতালে সহযোগীতা এবং সমর্থন দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষেত্রে বলা যায় অনেক নির্বাচনের পর গত রংপুর সিটি নির্বাচন একটি দৃষ্টান্তও বটে। কিভাবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায় তাঁর স্বাক্ষরও বটে। সরকার দলীয় প্রার্থীর পরাজয় এবং বিরোধী দলীয় প্রার্থীর বিজয় একটি দৃষ্টান্ত এবং আগামীর শিক্ষাও বটে। যদি কেউ নির্বাচন বয়কট করে বা নির্বাচনে হারার ভয়ে অংশগ্রহণ না করে সেটা কোন প্রতিবন্ধকতা নয়। বরং সরকার এর ষ্ট্যাটেজি এবং পরিকল্পনা অনেক পরিপক্ক তা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শিখতে ও বুঝতে আরো ২০/২২ বছর প্রয়োজন। তাই নিরপেক্ষতার এমনকি স্বচ্ছতার কোনপ্রকার ঘাটতিই থাকবে না আগামী নির্বাচনে এটা নিশ্চিত।
সমগ্র পৃথিবীর পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচন মনিটরিং ও মিডিয়াগুলো শুকুনের মতো দৃষ্টি দিয়ে রয়েছে আগামী নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে সুন্দর গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ এমনকি বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য যা যা করার তাই করা হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে সরকার এর সাফল্য এবং কাজ ও পরিকল্পনা সবই যেন এক সুত্রে গাঁথা ভোটারের মনে দোলা দিয়ে ঢেউ খেলানো নবান্ন্রে এক উম্ফলন মাত্র। বিশেষ করে শেখ হাসিনার ক্যারেসমেটিক গুণ ও জনবান্দব নীতি এবং সাফল্য সব মিলিয়ে এখন জয়ের ব্যাপারে ১০০% নিশ্চিত। তাই তিনি তাঁর ওয়াদা এবং বিশ্ববাসীর চাওয়ার প্রতি সম্মান দেখাবেন। আর বাংলাদেশকে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আরো স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্য পূরণ করবেন।
সুতরাং সার্বিক পরিস্থিতি ও বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং জনগণের স্বতস্ফুর্ত সমর্থনই আগামীর সকল বিজয় নিশ্চীত করে দেশকে সম্মানের আরো একধাপ উপরে নিয়ে যাবে। তবে কে নির্বাচনে আসবে আর কে আসবে না ইহা কোন নির্বাচনের ইস্যু বা বাধা হিসেবে গণ্য হবে না। ইতিমধ্যে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়েছে যে শেখ হাসিনার অধিনেই নির্বাচন হবে এবং এই সাংবিধানিক আইনকে সকলেই সম্মান দেখিয়ে সম্মতি দিয়েছে। যারা এই বাইরে ঘেউ ঘেউ করছে তাদের কপালের ভাজ ও দুর্দশা উভয়ই এখন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নির্বাচনী ঘুর্নীঝর ও সাইক্লোন নিস্তেজ হয়ে শেখ হাসিনার পরিকল্পনা ও তীক্ষ্ণ বুদ্দির কাছে মাথানত করে পরাভুত হয়েছে। বিশ্বকে দেখানোর উপযুক্ত সময় এসেছে এবং সেই সময় খুবই সন্নিকটে। আর সেটি দেখার আশায় অপেক্ষারত আমরা বাঙ্গালী ও বিশ্ববাসী।