স্বাধীনতা শব্দটি খুবই শ্রুতিমধুর এবং সুন্দর মার্জিত ও ন¤্র কিন্তু এর পিছনের গল্পটি ভয়ঙ্কর। এই ভয়ঙ্কর গল্পের সমাপ্তিতে পাওয়া গেছে এই শব্দটিকে। আর তখন অভুক্ত ভুখা-নাঙ্গা মানুষ লালায়িত হয়ে আঁকড়ে ধরেছে এই স্বাধীনতাকে। যা আজও প্রাণপনে চেষ্টা করে যাচ্ছে ধরে রাখতে। এই স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে ত্রিশ লক্ষ এবং ইজ্জত হারিয়েছে দুই লক্ষ। কিন্তু কি শুধু তাই? এখানেই শেষ নয় এই সদ্যজাত ভুমিষ্ট হওয়া স্বাধীনতাকে পেতে আরো হারিয়েছে অর্থ সম্পদ, পশু-পাখী, গাছ-পালা, রাস্তা-ঘাটসহ অগনিত হিসেব বহির্ভূত অনেক কিছুই। তারপরও পেয়েছি স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতা পাওয়ার হতাশায় কাতরে মরে যাচ্ছে হাজারো বিরোধীতাকারী পাকি দোসর।
সেই থেকে শুরু হয় নতুন স্বরযন্ত্র। আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি স্বাধীনতা রক্ষায় আর ঐ দোসররা চেষ্টা করে যাচ্ছে স্বাধীনতা বিনষ্টকল্পে। এখানে দেশী বিদেশী শত্রুর বুদ্ধি ও নৈরাজ্যভিত্তিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে করতে পেরিয়ে গেছে অনেক বছর এবং হারিয়ে গেছে অনেক প্রাণ ও সম্পদ এবং আগামীর সম্ভাবনা। আজো বুকে রক্তক্ষরণ হয় সেই স্বাধীনতা নামক শব্দটিকে উচ্ছারণ করলেই। তবে এই পুরোনো রক্তক্ষরণে নতুন মাত্রা যোগ করে নতুনভাবে রক্তক্ষণের উদয় ঘটিয়েছে ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলোর কর্মকান্ডে। যেখান থেকে স্বাধীনতাকে রক্ষা করা খুবই দুরুহ হয়ে গিয়েছিল। স্বাধীনতার আবরণে নুতন দোলা লাগিয়ে বাংলা এবং বাঙ্গালীর সঙ্গাই পাল্টে দিয়েছিল এমনকি বিভেদ সৃষ্টি করে চৌকাণাকৃতি রেখায় চৌচির করার শেষ পেরেকটুকুও ঠুকেছিল। বাংলার জনগণ সেই আঘাতে জর্জরিত হয়ে নিষ্পেষিত হতে হতে ঐ যন্ত্রণার সঙ্গে একাকার হয়ে অনিচ্ছাস্বত্তেও স্বাধ গ্রহণ করে অন্ধকারের গহীনে দিকভ্রান্তের মত নিরবে নিভৃতে এগুচ্ছিল।
এই দিশাহীন জাতীকে আবার আপন মহিমায় সমুজ্জ্বল করে হারানো ঐত্যিহ্য ও আশার আলো জাগিয়েছিল বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। কিন্ত মানুষ যখন স্বস্তি ও দিশা ফিরে পেয়ে এগুতে ছিল তখন আবার মরণ ছোবল আনল সেই পরাজিত শক্তির দোসররা। আর চালিয়েছিল তান্ডব এবং শেষ কর্মযর্ঘ্য। কিন্তু আবারো তাদের সেই অশুভ চিন্তা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে জাগ্রত হয় নতুন এক উদিয়মান সুয্য আর সেই সুয্যের দ্যুতিতে স্থাপিত হয় নতুন দিশা, আশা এবং আকাঙ্খা ও স্বপ্ন। যা গত ৯বছর যাবত এই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে গন্তর্বের শেষ সিমায়। এখানেও স্বাধীনতাকে রক্ষায় দিতে হয়েছে দেশী বিদেশী বহু মানুষের প্রাণ ও সম্পদ এবং গাছ-গাছালিসহ রাস্তা-ঘাট। সবই এখন একটি পরিস্কার উদঘাটিত বিষয় মাত্র। তাহলো স্বাধীনতা অর্জন থেকে রক্ষা করায় বেশি কঠিন। আর এই কঠিনের সঙ্গে যাদের বসবাস তাদের আবার ভয় কিসের।
বিভ্িক্ততে চৌচির হওয়া জাতি আজ একত্রিত হয়েছে স্বাধীনতা রক্ষায় এবং অধিকার আদায় ও এর স্বীকৃতির লক্ষ্যে। এযাবত যে সকল স্বীকৃতি অর্জিত হয়েছে তা ধরে রেখে নতুন নতুন স্বীকৃতির জন্য হন্যে হয়ে পরিকল্পিতভাগে দ্রুতলয়ে উন্নয়নশীল বিশ্ব ও শক্তির সঙ্গে পাল্লাদিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর অনেক উন্নত ও ক্ষমতাধর দেশ যা করতে পারেনি তা বাংলাদেশ করে দেখিয়েছে। নতুন সম্ভাভনার সুযোগ তৈরী করে তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যে সম্ভাবনা জেগেছিল এবং হাতছানি দিয়েছিল তা আয়ত্বে এনে নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত করে বৈশ্বিক দরবারে হাজির করেছে। আর তার পিছনেই এখন বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি ছুটছে মরণপণ চেষ্টায়।
এই চরম ও পরম প্রাপ্তিতে আরো গতিসঞ্চার করে আরো কোন নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে হবে এবং সেই দিগন্তের পিছনেই পৃথিবীকে ঘোরাতে হবে। যাতে আমাদের অদম্য স্পৃহা এবং গতির আর ভাটা না পরে। জোয়ারের অগ্রজভাগে বাংলাদেশ এর অবস্থান পাকাপোক্ত করে আগামীর প্রজন্মকে সুনিশ্চিত শান্তি ও স্থিতিশিল ভবিষ্যতের গন্তর্বে পৌঁছে দিয়ে যেতে হবে। মার্চ মাসেই স্বাধীনতা ঘোষনা হয়েছিল এবং এই মার্চ মাসেই বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল। এই দুইয়ে কি চমৎকার মিল। এই মার্চ মাসেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যদার স্বীকৃতি পেয়েছি। মার্চ মাস দিয়ে আমাদের অঙ্গিকারের দৃষ্টিভঙ্গি মজবুত করি। চেতনায় উদ্ধিপ্ত হয় ও ভাল-মন্দ বোঝার জ্ঞানকে জাগ্রত করে সামনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুমিকা রাখি।
আমরা উন্নয়ন জোয়ারে বর্ণিল ও রঙ্গিন উৎসবে ভাসছি। কিন্তু এই উন্নয়ন আনন্দে যেন অতীতকে ভুলে না যাই। অতীতকে স্মরণে রেখেই সকল কাজ সম্পাদন করতে হবে। শত্রুর শক্তি নেই বা ছোট ভেবে কাজ করলে চলবে না এমনকি নিজ দলের নেতা ও কর্মীদের বা সমর্থকদের প্রতিও দৃষ্টি দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ এখন সবাই এক কাতারে এসেছে আর এই আসাকে স্বাগত জানিয়ে স্বজাগ থেকে চৌকস দৃষ্টি বিরাজমান রেখেই উন্নয়ন ও ধারাবাহিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ভুলে গেলে চলবেনা যে শয়তান তার শয়তানী বন্ধ করে ভাল হয়ে গিয়েছে। শয়তান প্রতিনিয়তই স্বাধীনতাকে বিঘিœত করতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই আমাদেরকে সজাগ থেকে এগুতে হবে আগামীর সুনিশ্চিত দিগন্তের প্রান্তে পৌঁছে নতুন কিছু করতে।
সদ্য শেষ হওয়া সুপ্রিম কোট আইনজীবি নির্বাচন এর ফলাফলকে নিয়ে ভাবতে হবে। দলীয় এত অর্জন এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইমেজ কেন কাজে লাগানো হলো না বা বর্তমান নেতাদের কি সমস্যা দলীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে। সবই হিসেব নিকেশ করে নতুন এক আশার বতি জালাতে হবে আগামীর নিশ্চিতের জন্য। একটি কথা মনে রাখতে হবে চোর কিন্তু দুর্বলতার মাধ্যমেই চুরি করে। ডাকাত কিন্তু ডাকাতি করে নির্জনতা এবং লোকচক্ষুর আড়ালে। বিপদের ভয় সবারই আছে । তাই সাধু সাবধান এখানে শুধু আনন্দে নিমঘœ থাকলেই হবে না বরং চোখ কান খোলা রেখে সামনে এগুতে হবে। এই চোরেরও পয়সা আছে যে, টাকা দিয়ে সবকিনে নিয়ে কিছু একটা করে ফেলার। টাকার পিছনে পৃথীবি ছুটছে তাই টাকা অবৈধ ব্যবহার হতে নিজেকে বিরত রাখার সময় এখনই। অন্যায়কারীর পক্ষ্যে নীতি ও বিবেক সম্পন্ন মানুষ টাকার বিনিময়ে খাটে। এখানেই আমাদের নৈতিকতার সমস্যা।
বিদেশী আইনজীবি নিয়োগ ও আগামীর ষড়যন্ত্রের জন্য অর্থ ব্যবহার সবই যেন গুরেবালিতে পরিণত হয় সেই লক্ষ্যে এখনই পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করতে হবে। নতুবা সময় ফুরোলে কপালে হাত দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। ত্যাগ তিতিক্ষা ও শ্রম একটি উপাদান যা একসঙ্গে কাজ করলে স্বাধীনতা পাওয়া যায় এমনকি ভোগও করা যায়। যার প্রমান বার বার আমাদের হাজির হয়েও বিমুখতায় পর্যবসিত হয়েছে।
সামনে নির্বাচন তাই আর কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে জনবিমুখ হওয়া যাবে না। সাবধানে কথা বলতে হবে এবং জনগণের প্রয়োজনেই কথা বলতে হবে। জনগণের চাহিদা ও যোগানেই সম্পৃক্ত থাকতে হবে। জনকল্যাণে জনবান্ধব কাজ সম্পাদনের নিমিত্ত্বে নিয়োজিত থাকতে হবে। এর বিকল্প কিছু নেই। নেতা + কর্মী + সমর্থক + সাধারন জনগণকে এক কাতারে আনতে হবে। এক কাতারে এনে কার্য সম্পাদন করতে পারলেই সাফল্য এবং অর্জীত স্বাধীনতা রক্ষা করা সম্ভব হবে। আমাদের হাত ফসকে যেন স্বাধীনতা বিঘিœত না হয় সেই জন্য সজাগ থাকতে হবে।
এখনও যারা পরাধিন তারা বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুলের সেই বিখ্যাত কবিতা “লাথি মেরে ভাংরে তালা যত আছিস বন্ধি শালা” ব্যবহার করে বের হয়ে আসুন। মনের বন্দিদশা থেকে বের হওয়া জরুরী এবং মুক্ত বিহঙ্গের মত পথ চলায় শরীক হউক। নিজেকে স্বাধীনতা রক্ষাকারী হিসেবে উপযুক্ত করে তুলোন। উন্নয়ন, সরকার ও স্বীকৃতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় এগিয়ে আসুন। জাতিসংঘের বেধে দেয়া ছয়টি বছর আমাদের ঐক্যকে সুদৃঢ় করে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি স্থায়ী হতে সহায়তা করুন।
বঙ্গবন্ধু কোন দলের ছিলেন না তিনি ছিলেন আপামর বাংলার সকল মানুষের। ঠিক তেমনি শেখ হাসিনা এখন শুধু আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের তা কিন্তু নয়। তিনি এখন সকলের, সমগ্র বিশ্বের জ্ঞানে, সম্পদে নেতৃত্বে এবং দৃষ্টান্তে ব্হমান। তাই দলীয় সংকীর্ণতায় আর নয় বরং বৈশ্বিক বিপ্লবে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করি। আমাদের যা যা প্রয়োজন তা সঞ্চয় করি শেখ হাসিনাকে ব্যবহার করে। তার সততা, মেধা, শ্রম, উদারতা ও মমতাকে আমাদের বাংলাদেশের প্রয়োজনে কাজে লাগায়; যাতে আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যের চেয়েও বেশি অর্জন করতে পারি। বিশ্ব যেখানে শেখ হাসিনাকে নিয়ে গভেষনা ও তাঁর প্রদর্শীত ও নির্দেশীত এবং দেখানো পথ অনুসরণে ব্যস্ত সেখানে আমরা কেন নয়? তিনিতো আমাদেরই কন্যা, বোন, মা এবং সর্বোপরী বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আসুন তাঁর ইমেজ এবং গতিময়তাকে কাজে লাগাই। তাঁর দেখানো পথেই এগিয়ে যায়। দল মত ও পথের ভিন্নকে দুরে ঠেলে সেই ৭১’র বীরদর্পে গর্জে উঠি এবং শেখ হাসিনার ধারাবাহিকতা রক্ষায় নিজে নিজের ভুমিকা রাখি।
আমাদের মত ও পথের ভিন্নতা রয়েছে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও মতভেদ রয়েছে এবং থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই নিয়েই রাজনীতি এবং এটাই রাজনীতির দর্শন ও আদর্শ। কিন্তু দেশ মাতার কল্যাণের তরে কখনে কখনো সকলের ঐক্যের ভিত্তি মজবুত করতে হয়। এখানেও পরিক্ষিত নেতার প্রয়োজন হয়। তাই আমরা বিগত দিনের সকল কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করলেই আগামীর দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবো। কার মাধ্যমে ঐক্য মজবুত হবে এবং কি লাভ এই ঐক্যের সমান্তরালে তা কিন্তু দেখা ও বোঝা খুবই সহজ। বর্তমান ডিজিটাল যুগে কোন কিছুই আর লোকানো থাকে না। বরং সবই প্রকাশিত ও উদ্ভাসিত। প্রজন্মের তরে যিনিই বেশী অগ্রজ তারই কাতারে এসে সাম্যের গীত ও ভীত রচিত হউক। ত্যাগের মাধ্যমেই অর্জিত স্বাধীনতা, ক্ষমতা, সেবা, উন্নয়ন, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়। আর এই ত্যাগই মানুষকে মহৎ থেকে আরো মহতে পরিণত করে। আসুন আমরা এই মার্চেই এক হয়ে গর্জে উঠি বিশ্বনেত,ৃ বিশ্ব মানবতার মা শেখ হাসিনার দেখানো পথের গতিময়তা ও উদিয়মান বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ধারাবাহিকতায়।