বাআ॥ বাংলাদেশের এখনকার ক্ষুদে ফুটবলাররাই আগামীতে দেশকে বিশ্বকাপে নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে এই আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে আমাদের যারা ক্ষুদে খেলোয়াড়, আগামী দিনে তারাই হয়ত একদিন বিশ্বকাপ খেলতে যাবে। সেই দিনের অপেক্ষায় আমরা থাকলাম।” বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেললেও ফুটবল বিশ্বকাপ খেলা এখনও অনেক দূরের পথ।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গত বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী এই দুই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন, রানার্স-আপ এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন। ২০১৭ সালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬১১ জন ছাত্রী এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯৬ জন ছাত্র অংশগ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী এই দুই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সব খেলোয়াড়কে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এত বিপুল সংখ্যক খেলোয়াড় আর কখনও যোগ দেয়নি। যতদিন যাচ্ছে, খেলাধূলায় উৎসাহ বাড়ছে।”
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়ার পূর্ব উজানটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানার্স-আপ হয়েছে পাবনার সাঁথিয়ার বুলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে বরগুনার আমতলীর কুকুয়া হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপার দোহারো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রানার্স-আপ হয়েছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর বাঁশজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
দুই চ্যাম্পিয়ন দল পেয়েছে একটি করে ট্রফি ও এক লাখ টাকা। চ্যাম্পিয়ন দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়রা পেয়েছেন সোনার পদক ও ১০ হাজার টাকা।
রানার্স-আপ দল দুটি পেয়েছে একটি করে ট্রফি ও ৭৫ হাজার টাকা। এই দু’দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়রা একটি রুপার পদক ও সাত হাজার ৫০০ টাকা পেয়েছে।
তৃতীয় স্থান অধিকারী দল দুটি পেয়েছে; একটি করে ট্রফি ও ৫০ হাজার টাকা। এই দু’দলের প্রত্যেক খেলোয়ারড়া একটি করে ব্রোঞ্জ পদক ও পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এই দুই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার হাতেও পুরস্কার তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, “পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজে অত্যন্ত আনন্দিত। খেলাও দেখলাম। আর, সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
খেলাধূলা আর সাংস্কৃতিক চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি গড়ে উঠবে, শৃঙ্খলাবোধ শেখা হবে, অধ্যবসায় আসবে এবং দায়িত্ববোধ গড়ে উঠবে।
২০১০ সালে ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ এবং ২০১১ সাল থেকে মেয়েদের জন্য প্রতিবছর বঙ্গমাতা ‘বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট’ আয়োজিত হচ্ছে।
অনূর্ধ্ব-১৪ বয়সভিত্তিক মেয়েদের দক্ষিণ এশিয়া ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন এবং ভারতে অনুষ্ঠিত নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় রানার্স-আপ হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই দলের খেলোয়াড়দের অধিকাংশ উঠে এসেছে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে। ইতোমধ্যে মেয়েরা কিন্তু অনেক যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছে।”
তিনি বলেন, “আশা করি, যারা ছোটবেলা থেকে ফুঠবল খেলে উঠে আসছে; তারা আগামীদিনে বাংলাদেশকে অনেকদূর নিয়ে যাবে।”
চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স-আপ দলগুলোকে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করি, এখান থেকেই একদিন এমন খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে-যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রখেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।