ফারুক আহমেদ ভুইয়া॥ ‘বোমা বিস্ফোরণের সময় আমি বাবার পাশেই ছিলাম। বিস্ফোরণে বাবার পুরো শরীর থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। আমার দুই পায়ে স্প্রিন্টার আঘাত করে। সেসময়ই বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম, বাবা তখন প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন। আমিও আহত হওয়ায় ধরে রাখতে পারছিলাম না তাকে। পরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সহায়তায় বাবা ও আমি বারডেম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বোমা হামলার শিকার হওয়ার এ দুঃসহ স্মৃতিচারণ করছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি স্মৃতিচারণ করছিলেন তার বাবা মোহাম্মদ হানিফের যন্ত্রণাভোগের কথাও, যিনি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র।
গত রোববার (১ এপ্রিল) দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনের ব্যাংক ফ্লোরে মোহাম্মদ হানিফের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে কথা বলছিলেন সাঈদ খোকন। ডিএসসিসি আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলররা। এর আগে সকালে আজিমপুর গোরস্থানে হানিফের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন মেয়র সাঈদ খোকনসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
সাঈদ খোকন বলছিলেন, ‘সেই দিনের স্মৃতি আজও নাড়া দেয়। নেত্রীর প্রতি আনুগত্য ও ভালবাসা সেদিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেখিয়েছিলেন। আমার বাবার আনুগত্য ও ভালবাসা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রাজনীতিতে বিরল।’
‘গ্রেনেড হামলায় আমাদের ২৪ নেতাকর্মী মারা গেলেন। আমি সেদিন সেখানে ছিলাম। আমি নেত্রীর এক হাত বাঁয়ের একটি ট্রাকে ছিলাম। আমার বাবা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন নেত্রীকে অনেকটাই কাভার (আগলে রাখা) করে। অনেকেরই আশঙ্ক ছিল কিছু একটা হতে পারে। সেসময়টা এমনই ছিল, কিছুদিন বেশ কিছু গুজব উঠেছিল, জননেত্রী শেখ হাসিনার ওপর আক্রমণ হতে পারে, যে কোনো সময় একটা ঘটনা ঘটতে পারে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীর মুখে মুখে ছিল। সবাই আশঙ্কা-আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে চলছিল।