তিস্তা ইস্যু সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশাবাদ

বাআ॥ ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যু সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেশব গোখলে সোমবার তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সমস্যারই সমাধান করেছি, এখন একটি সমস্যাই সমাধানের বাকি, সেটা হচ্ছে তিস্তা সমস্যা।’Tista issue solved soon
সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সৌজন্য সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তাঁর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গোখলে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের সঙ্গে করা সকল অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান সকল প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করছি।’
রোহিঙ্গা ইস্যুর বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশ থেকে তাদের সকল নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ভারত মিয়ানমারকে ক্রমাগত আহ্বান জানিয়ে আসছে। তিনি বলেন, প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সংকট সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত রয়েছি।
গোখলে বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং পুরো ভারত সরকার এ বিষয়ে বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করবে।’ তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের জন্য ফিল্ড হসপিটাল স্থাপনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বৌদ্ধ অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানকে কেন্দ্র করে গত ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ভারত মিয়ানমারের ওপর আরো চাপ প্রয়োগ করুক।’ বর্ষাকালে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলে ভূমিধ্বসের আশংকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এ কারণে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে অন্যত্র একটি চরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে।
১৯৯১ সাল থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আগমন শুরু হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সমস্যাটির সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে যে পাঁচটি দেশের সীমান্ত রয়েছে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছি।’
বাংলাদেশের সঙ্গে লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে। গোখলে বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক চমৎকার এবং আগামী সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হওয়ার প্রতীক্ষায় রয়েছেন।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তার দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত এবং তার জনগণের অবদানের কথাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
এ সময় নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এবং বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.