ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় গত শনিবার দুপুরে বিল্লাল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবকের লাশ নিখোজের ২৭দিন পর ধানি জমি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশটি পচন ধরে দেহ থেকে মাংশ খসে কংকাল হয়ে গেছে। শুধু মাত্র হাড় ও মাথার খুলি রয়েছে। নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার তাঁর স্বামীর ব্যবহৃত জামা-কাপড় দেখে লাশটি সনাক্ত করেছেন। পুলিশ বলছেন; প্রায় মাসখানে আগে যুবকটিকে হত্যা করে ধানের জমির মাটিতে পুতে রেখেছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত বিল্লাল হোসেন (৩৫) কসবা উপজেলার কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের বিলঘর গ্রামের দুবরাজ মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী রিনা আক্তারকে সাথে নিয়ে শশুড়বাড়ি কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি এক ছেলে ও দুই কন্যা সন্তানের জনক।
পুলিশ ও নিহতের স্ত্রী জানায়; বিল্লাল হোসেন গত ১৯ মার্চ রাতে উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের বাড়ি থেকে রাত ১০টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী রিনা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৪ মার্চ কসবা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন। গত শনিবার সকালে উপজেলার রঘুরামপুরে ধানের জমিতে স্থানীয় লোকজন একটি মরদেহের মাথা দেখে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন ভূইয়ার মাধ্যমে থানায় খবর দিলে দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেন। নিহতের স্ত্রী রিনা বেগম তার পরনের জামা কাপড় দেখে স্বামীকে সনাক্ত করেন।
নিহতের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন; তাঁর স্বামী এক সময় মাদক ব্যবসার লেবার হিসাবে কাজ করতেন। প্রায় ৫ বছর ধরে এ ব্যবসার ছেড়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করত। বর্তমানে অন্যের জমিতে কাজ করে এবং তিনি নিজেও অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। ২৭দিন আগে তাদের গ্রামের কালু মিয়া রাত ১০টার দিকে তাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। সেইদিন থেকে তাকে আর খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। গ্রামের সাহেব-সর্দারদের দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলেও (কালু মিয়া) কোন সদুত্তর দেয়নি। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন; লাশটির শরীরের মাংশ পচে মাটির সাথে মিশে গেছে। লাশটি কংকাল হয়ে গেছে। লাশটি পরিচয় বুঝা যায়নি। তবে স্থানীয়রা বলছেন এটি বিল্লাল হোসেনের মরদেহ। মাটি থেকে জামা-কাপড় পাওয়া গেছে। তার স্ত্রী রিনা আক্তার তার স্বামীর পড়নের কাপড় দেখে লাশ সনাক্ত করেছে। তারপরও লাশটি আরো অধিক তদন্তের জন্য ময়নাতদন্ত শেষে লাশটির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। তিনি আরো বলেন; বিল্লাল হোসেন নিখোঁজের দিন তাঁর স্ত্রী রিনা আক্তার বাদী হয়ে কসবা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ২৭দিন আগে তাকে হত্যা করে জমির মাটিতে পুতে রাখা হয়েছিল।