টিআইএন॥ তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী থেকে দেশের সকল মানুষই প্রত্যাশা করে। বিচারের আওতায় এনে আইনগত ফয়সালা হওয়াই জরুরী। আর সাজাপ্রাপ্ত আসামী দুরদেশে পলাতক থেকে প্রকাশ্যে রাজনীতি করবে এটাও শুভা পায় না। তাই এই বিষয়ে নানারকম মুখরোচক কথার ফুলঝুড়ি শোনা যায় এপার ওপার উভয় জায়গায়। এই রসাত্মক আলাপ আলোচনার অবসান ঘটানো জরুরী। আমাদের প্রতিনিধি আদতে কিভাবে এই আসামী বা সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আইনের হাতে সোপর্দ করা যায় সেই খবর নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ সাহেবের স্মরণাপন্ন হয়। তখন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী জনাব খুরশীদ আলম জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও তারেক রহমান আদালতের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন কূটনৈতিক তৎপরতা।
তিনি আরো বলেন, তারেক রহমানের প্যারোলে মুক্তির এখন আর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। যেহেতু তিনি বাংলাদেশের আইনে দন্ডিত সে কারণে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও তাকে ফিরিয়ে আনা অসম্ভব নয়। তার জাজমেন্ট যদি ওখানে দেখানো যায়। তাহলে ফিরে আনা সম্ভব হবে।’
তিনি আরো বলেন, বিচার চলাকালে তারেক রহমান অনুপস্থিত থাকলেও আদালতে আত্মসমর্পণ করলে কিংবা তাকে হাজির করা হলে যথাযথ কারণ দেখিয়ে আপিল করার সুযোগ পাবেন তিনি।
এদিকে বিএনপি বলছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। আর আওয়ামী লীগ বলছে, প্রতিহিংসা নয় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাই লক্ষ্য।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে তৎকালীন সরকার। এসময় তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় বেশকটি দুর্নীতির মামলা। তবে গ্রেফতারের এক বছরের মাথায় ২০০৮ সালের তেসরা সেপ্টেম্বর সবকটি মামলায় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান তিনি। এরপর থেকে সময় গড়িয়েছে প্রায় দশ বছর। এরই মধ্যে অর্থ-পাচারের একটি মামলায় ২০১৩ সালের ১৭ই নভেম্বর বিচারিক আদালত থেকে খালাস পেলেও ২০১৬ সালে আবার উচ্চ আদালত থেকে ৭ বছরের কারাদন্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা হয়।
এছাড়া চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের কারাদন্ড হয় তারেক রহমানের। এছাড়া একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ আরো বেশকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করলেও রাজনৈতিক বক্তৃতা বিবৃতি অব্যাহত রাখেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, তারেক রহমান ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একটি বন্দী চুক্তি এমন একটি পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে এটি এককভাবে বাংলাদেশের উপর নির্ভরশীল নয়, দু’টি দেশের ওপর নির্ভরশীল। তবে বিএনপি বলছে, তারেক রহমান ও তার দলকে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করতেই তারেক রহমানকে আদালতের সম্মুখীন করেছে সরকার।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি অবস্থান তৈরি করেছেন। তাকে দেশে এনে কীভাবে জুলুম নির্যাতন করা যায় সেই পরিকল্পনাই সরকার প্রধানের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিস্তারিত জানার জন্য এই লিঙ্কে ঘুরে আসুন: https://youtu.be/ZHaQbqlodDI