কুমিল্লার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় অনিশ্চয়তা আরো ঘণীভূত হলো

সোহেল, কুমিল্লা প্রতিনিধি॥ দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রোল বোমা মেরে আটজনকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে কুমিল্লার একটি আদালত। কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. মোস্তাইন বিল্লাল রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে রোববার এ আদেশ দেন।comilla case arrest in haleda
এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এদিন কুমিল্লার এ মামলায় তার জামিনের আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আবেদন করলে তা শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন রেখেছে আদালত।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর প্রায় দুইমাস ধরে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই মামলায় হাই কোর্ট তাকে জামিন দিলেও দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগ সেই জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে। এখন কুমিল্লার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় মুক্তি পেতে হলে খালেদা জিয়াকে এ মামলাতেও জামিন পেতে হবে।
নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির ডাকে টানা হরতাল-অবরোধের মধ্যে ২০১৫ এর ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুরে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা হামলা হলে দগ্ধ হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।
চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার পরদিন মামলা করেন। তদন্ত শেষে বিস্ফোরক আইনে ও হত্যার অভিযোগে আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুই মামলাতেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসামি করা হয়।
ওই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। এর মধ্যে খালেদা ঢাকার দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যাওয়ায় কুমিল্লার মামলাতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ওই আবেদন গ্রহণ করে ২৮ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সেদিন তাকে হাজির না করায় বিচারক গত ৩১ মার্চ কারা কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর আদেশ দেয়। সেই আদেশ অনুযায়ী রোববার কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানায়, বিএনপি নেত্রী কারাগারে রয়েছেন। অসুস্থতার কারণে তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি।
খালেদার আইনজীবী কাইয়ুমুল হক রিংকু জানান, আদালত এ মামলায় বিএনপিনেত্রীকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর তারা জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য ১০ এপ্রিল দিন ঠিক করে দেন। কিন্তু সেদিনও কোন ফয়সলা না হওয়া ঐ মামলাগুলি পুর্বের অবস্থানেই রয়েছে এমনকি খালেদার মুক্তি পাওয়ার অনিশ্চয়তা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। আইনজীবি হিসেবে আমরাও এখন হতাশ এবং দিকনির্দেশনাহীন। কারণ দলীয় বা পারিবারিক কোন পরামর্শই এখন আর কাজে লাগানো যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোথায় যেন আটকে যাচ্ছে বা পদচারনা থমকে যাচ্ছে। তাই অনিশ্চয়তার বেরাজাল ডিঙ্গানো আর সম্বব নয়। তবে ঐশ্বরিক কোন শক্তির বলয়ে হয়তো এই জটদ্বশা মুক্ত হতে পারে বা প্রধানমন্ত্রীর নি:শর্ত ভালবাসাই পারে তাকে মুক্ত করে স্বাধীন জীবনে ফিরিয়ে দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.