কসবায় কিস্তির টাকার নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্ধের জেরে গৃহবধূর মৃত্যু ॥ থানায় মামলা

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গত রোববার গভীর রাতে দুই সন্তানের জননী ইয়াছমিন আক্তার (২৯) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতলের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত ইয়াছমিন আক্তার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের লেশিয়ারা গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী এবং পাশ্ববর্তী আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রাম গ্রামের ইদ্রিছ মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইয়াছমিন আক্তারের বাবা গুরুতর অসুস্থ। গত সাত দিন ধরে বাবার বাড়িতে ছিলো সে। এদিকে ঋণের কিস্তির টাকা দেয়ার জন্য শাহিন মিয়া স্ত্রীর একটি স্বর্ণের আংটি বিক্রি করে দেন। সাতদিন পর গত রোববার ইয়াছমিন আক্তার স্বামীর বাড়িতে এসে বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে গত রোববার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দ্বন্ধের এক পর্যায়ে মারধোর করা হয় ইয়াছমিনকে। মারধোর করার পর শাহিন মিয়া খেলা দেখতে চলে যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে । এ ঘটনায় গত রোববার রাতে ইয়াছমিনের মৃত্যু হয়। রাত ১১টার দিকে বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার মাটিতে লুটে পড়ে আছে। পরে স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতায় শাহিন মিয়া তার স্ত্রী ইয়াছমিনকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. সাব্বির হোসাইন বলেন; হাসপাতালে আসার আগেই রোগী মারা গেছে। তবে তার গলায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। মনে হয়েছে এটি কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। বিষয়টি লিখিত ভাবে পুলিশকে অবগত করানো হয়েছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে গেছে।
নিহত ইয়াছমিনের ছোট বোন মাইশা বলেন, বাবা অসুস্থ বিধায় গত সাত দিন ধরে বাবার বাড়িতেই ছিল সে। গত রোববার বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে আংটি বিক্রি করে কিস্তি দিয়েছে। তাঁর বোন ্আংটি বিক্রির কথা জিজ্ঞাসা করলে শাহীন মারধোর করে। একপর্যায়ে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেছেন।
কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন; কিস্তির টাকা দেয়ার জন্য স্ত্রীর একটি স্বর্নের আংটি বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কসবা থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) গোলাম মোস্তফা বলেন; হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে নিহত ইয়াছমিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে।
নিহতের স্বামী শাহিন মিয়া মুঠোফোনে বলেন; স্বর্ণের আংটিটি বিক্রি করে ঋণের কিস্তি দিয়েছিলেন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে খেলা দেখতে অন্য বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে এসে স্ত্রীকে অসুস্থ দেখে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.