দিগন্ত ফেসবুক পেজ হতে॥ আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারে একটা নতুন মুখ আসা যেমন আনন্দের, দরিদ্র পরিবারও কিন্তু তার ব্যতিক্রম নয়। নতুন একটা মুখ নিয়ে আসে নতুন দিনের প্রত্যয়, নতুন সম্ভাবনা, নতুন উচ্ছাস!
প্রায় দেড় যুগ আগে সেইরকম এক আনন্দঘন মুহুর্তে ভেসেছিলেন চুয়াডাঙ্গার প্রবাল কুমার দাস, তার দরিদ্র সংসার আলো করে এসেছিল তার প্রথম সন্তান, প্রশান্ত কুমার দাস। নিজের আর্থিক কঠিন বাস্তবতার মধ্যেও উনার মনে হয়েছিল এই সন্তান বারবার উনার ঘরে আলো নিয়ে আসবে, নিয়ে আসবে খুশীর বন্যা।
বাবার আশা অথবা স্বপ্ন সত্যি প্রমানিত করে, এই পর্যন্ত তিনবার সংসার আলোকিত করেছে প্রশান্ত। নিজের নামের স্বার্থকতা বুঝিয়ে দিয়ে পিতামাতার মনে এনেছে প্রশান্তি, একবার …. দুইবার … তিনবার!
আর্থিক সচ্ছলতায় পিছিয়ে থাকলেও, মেধার দৌড়ে এগিয়ে আমাদের গল্পের এই প্রশান্ত। অনেক কষ্টের পর গোল্ডেন A+ SSC পরীক্ষায়, জন্মের পর প্রথম আলোকিত করলো প্রতিদিন দারিদ্রের কষাঘাতে নিপীড়িত এই ছোট পরিবারটিকে। বাবা বুঝলেন ছেলে অনেক দূর যাবে। দিতীয় বার প্রশান্তি আসল HSC পরীক্ষার ফলাফল দেবার পর, এইবার হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে A+.
কিন্তু, এখনো অনেক দূর যাওয়া বাকি। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সোজা কথা না, সারা দেশের সকল মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাথে প্রতিযোগিতা! পারবে কি আমাদের প্রশান্ত? সামন্য গৃহিনী মায়ের শেষ সম্বল অল্প কিছু গয়না বিক্রি করে আর মায়ের অনেক অনেক দোয়া আর আশির্বাদ নিয়ে ঢাকায় এসে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু, এক বিশাল প্রতিযোগিতার ক্ষুদ্র প্রতিযোগী আমাদের প্রশান্ত! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিট পরীক্ষায় ৬০,০০০ পরীক্ষার্থীর একজন সে। কঠিন, বন্ধুর এক যাত্রা …. পারবে কি প্রশান্ত?
এইবার তৃতীয় বারের মত আলো জ্বেলে নিজেকে প্রমানিত করলো সে, তার অবস্থান ৫৪৪! অবিশ্বাস্য! অসাধারণ! অতুলনীয়!
কিন্তু, এইটা উপন্যাস নয়, কোন গল্প অথবা কল্প কাহিনী নয়। এইখানেই শেষ নয়! সামনে আরো ৪-৫ টি বছর, কিভাবে আরেকবার আলো জ্বালবে প্রশান্ত? এই খরচ কিভাবে যুগাবেন তার হতদরিদ্র বাবা, যিনি পেশায় একজন সামান্য গ্রাম্য মুচি! সুবিশাল অন্ধকার প্রশান্তের সামনে, কিন্তু অন্ধকারের পরেই আসে ভোর, সেই ভোরের আলো জ্বেলে দেবার জন্য একটু সাহায্য দরকার প্রশান্তর!
আমি, আপনি, আমরা কেউ কি পারিনা চতুর্থ বারের মত প্রশান্তকে আলো জ্বালানোর সুযোগ করে দিতে? আসুন, গ্রামের সামান্য মুচির সন্তানের অসামান্য হয়ে উঠার গল্পের চরিত্র হয়ে উঠি আমরা!
সমাজে আমরা সবাই একে অন্যের পরিপূরক। একে অপরকে ছাড়া যেমন চলতে পারিনা তেমনি প্রশান্তরাও আমাদেরকে ছাড়া চলতে পারে না।
কোন হৃদয়বান বেক্তি যদি আগ্রহী হন প্রশান্তের অন্ধকার প্রান্তর পাড়ি দেবার সঙ্গী হতে, দয়া করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। https://youtu.be/sxVA953Xw2o