২২শে মে বেলা ১.৩০ অথবা ২ টার দিকে একদল পুলিশ বিসিএম অফিসে যায়। আমাকে খোঁজ করে, তারপর আমি কথা বলি এবং অফিসে বসতে বলি। কিন্তু তারা অফিসে না বসে আমাকে থানায় গিয়ে চা পান খেয়ে আসতে বলে নিয়ে আসে। আমি ও তাদের সঙ্গে আসি। তারপর একটু সামনে এসে দেখতে পারি; আমার জন্য বিশাল গাড়ি বহর অপেক্ষা করছে। পরে তারা আমাকে বিশাল গাড়ি বহরে করে গুলশান থানায় নিয়ে আসে। আমি বুঝতে পারি কোন বড় ঝামেলা হয়েছে। যখন থানায় আসি তখন আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি কি কারনে এত বহর অপেক্ষা করছে। জনাব দারোগা সাহেব আমাকে বলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আপনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করি কে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে… তখন বলে লোনা সামসোদ্দোহা। আমি তখন বিষন্ন। কারন লোনা আপা আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে এটা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। তারপরও বলি যে, লোনা আপার সাথে তো আমার ভাল সর্ম্পক এবং আমি তাকে ভোট দিয়েছি… তিনি আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে না।
যাক দুর্ভাগ্য আমার। কথায় আছে এমনকি প্রবাদেও আছে… উপকারীকে ভাঘে খায়। এই দশা আমার আর কি। পরক্ষনে আইন মন্ত্রী মহোদয় এবং উনার এপি এসকে ফোনদিয়ে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করি কিন্তু তাদেরকে পাওয়া যায়নি। তারপর আমার বন্ধু, এমপি, ভাই (সচিব) এবং স্ত্রী সহ অনেককে জানাই এই গেফতারের ঘটনা। কিন্তু কোন ফল হয়নি, থানা থেকে মুক্ত হওয়ার উপযুক্ত জায়গায় ফোন করতে ভুলেই গেছি। কেউ কেউ থানায় দেখা করতে আসে। বিভিন্ন সান্তনা দিয়ে যায়। এরই মধ্যে পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসা করে আপনি এই সাংবাদটি ছাপালেন কেন? আমি বলি, আসলে আমি একজন বেসিস মেম্বার তাই বেসিস ইলেকশন সংক্রান্ত সংবাদ ছাপানোর অনুমতি আমার দেয়া ছিল। শুধু বেসিস নয় বরং আমার এলাকার কসবা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল সংবাদই যেন ছাপে সেই অনুমতিও দেয়া ছিল।
যে দলই তাদের সংবাদ পাঠাবে সেই সংবাদই প্রচারের অনুমতি ছিল। কিন্তু কাউকে অনুমান বা লক্ষ করে কোন সংবাদ ছাপা হয়নি। তখন বলি লোনা আপা আমার দলের এবং তাকে আমি ভোটও দিয়েছি। তাই ওনার বিরুদ্ধে খারাপ কিছু লিখার কোন ইচ্ছা এবং মানসিকতা আমার নেই। তখন বলে (দারোগা) তাজুল ইসলাম নয়ন কে? আমি বলি আমি। আমি বলি ঐ নিউজটি আমি করিনী এমনকি আমি জানিওনা। তবে আমাকে তথ্য দিয়ে নিউজ করার জন্য ফোন দিয়েছিল বেসিস পরিচালক দেলোয়ার হোসেন ফারুক। আমি বলেছি শনিবার রাতে আমার পত্রিকা প্রকাশ হবে তাই আজ দেয়ার কোন সুযোগ নেই। আমি নিউজটি করে দিব শনিবারের সংখ্যায় তখন ছিল রাত আনুমানিক ১১টা আমি ঘুম থেকে ঐদিন অনেক ফোন রিসিব করি। কারন ৩১ তারিখ বেসিস ইলেকশন ছিল।
যাক সেই কথা আমার সরলতা ছিল এবং অপারেটরকে বলা ছিল বেসিস ইলেকশন সম্পর্কিত সকল সংবাদ প্রিন্ট এবং ওয়েব উভয় জায়গায় দিও। এই সরল অনুমতিটুকুই আমার ভুল। গত নির্বাচন নিয়েও অনেক নিউজ হয়েছিল যা নির্বাচনের পরই উভয় পক্ষ একত্রিত হয়ে এক পরিবারের ঐক্যনিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল।
যাক সেই কথা। আমি থানায় এসে জানলাম ইসরাত জাহান সাকী নামেও মামলা হয়েছে। আমাকে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর একটিই চিনি না এমন কি বলি ঐ নিউজটি ও জানি না। তবে আমার স্ত্রীর নাম ইসরাত জাহান লাকী এবং সে ১০০শত ভাগ গৃহিনী। সে পত্রিকা সর্ম্পকে কিছুই জানে না। সংসার ছেলে-মেয়ে এবং রান্না-বান্নাই তার কাজ। সে শুধু ঢাকার কচুক্ষেত বাজার ছাড়া আর কোন জায়গা একা চিনে যেতে পারে না এবং যায় ও না। দারোগা সাহেব বলে আপনার স্ত্রীর নামেও মামলা হয়েছে তাই তাকেও ধরতে হবে। সমাজের এই কি নিয়ম? বাংলাদেশে নির্বাচন নিয়ে কত কথা হয় এবং নির্বাচনের পরে আবার সবই ঠিক হয় এমনকি আমেরীকার নির্বচানেতো বাহারী বংয়ের মিথ্যা এবং একে অন্যাকে প্রকাশ্যে দোষারুপ এমনি অশ্লিষ ভাষায় গালি পর্যন্ত দিয়ে জেতার আশ্রয় খুজেছিল। কিন্তু নির্বাচন পরবর্তী ঘটনা আবার সেই ঐক্য এবং সু সম্পর্ক। আমাদের এখানে এই প্রথম কোন নির্বাচন পরবর্তী নির্বাচনী কথন মামলা তাও আবার নিজ দলের সমর্থকের বিরুদ্ধেই। চলমান…