সম্পাদক ও সাংবাদিকতা একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জিং কাজ। এই কাজে কাউকেই সন্তষ্ট করা যায় না। কেউ কেউ সন্তষ্ট হলেও অসন্তুষ্টির প্রকাশ বিরাজমান রাখে। মাঝে মাঝে কেউ কেউ সন্তুষ্টি বা আত্মতৃপ্তি পেয়ে থাকেন; তবে সংখ্যায় খুবই কম। যে কোন ভুল বা ত্রুটির জন্য দায়ী এমনকি কোর্টে পর্যন্ত যেতে বাধ্য। কোর্ট থেকে মুক্তি যদিও মেলে কিন্তু গোপন চোখ রাঙ্গানো বা জোর জবরদস্তির হাত থেকে রেহাই মেলে না। কখনো কখনো কোট থেকেও মুক্তি মিলে না। গন্তর্ব হয় জেলখানায়।
একজন সম্পাদক হতে হবে বিচক্ষণ ও তিক্ষ্ন বুদ্ধি এবং দুরদৃষ্টিসম্পন্ন। সরলতা এবং মানবিকতা, পরিচিতির বেড়াজাল সম্পাদকের থাকতে নেই। যদি এই সকল গুণসম্পন্ন সম্পাদক হন তাহলে প্রতি পদে পদে তাকে গুনতে হবে মাশুল। জীবন বিপন্ন এবং পরিবার উচ্ছেদসহ নানান জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে রুগ্ন জীবন যাপন করতে হবে। তবে সততা ও সরলতা এবং মানবিক গুণ সম্পন্ন সম্পাদকদের জন্য প্রয়োজন জেলাসন্ন জীবন যাপন। আর এই জীবন যাপনে অভ্যস্ত করতে প্রয়োজন বড় বোন লোপা আপার। আমার জীবনে বড় সফলতার পিছনেই যাকে প্রথমে রাখতে চাই তিনি হলেন আমার শ্রদ্ধেয় বড় বোন লোনা আপা (লোনা সামসুদ্দোহা)। যিনি মামলা না করলে আমি জ্ঞানী হতে পারতাম না, শিক্ষা নিতে পারতাম না, অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে পারতাম না। তাই বড় বোনকে ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি মামলা করে সম্পাদক হিসেবে জেলে পাঠানোর জন্য।
আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি কাকতালীয়ভাবে আমার পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য। কারন আমার মৃত্যুর পর কিভাবে সংসার পরিচালিত হবে তার একটা রুপরেখা আমার অবর্তমানে আমার স্ত্রী অর্জন করতে পেরেছে। তবে দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়ানোর কারণে সন্তানদের লেখাপড়া এবং সংসারের যে ক্ষতি হয়েছে তা পোষানোর কোন শিক্ষা বা দিক্ষা পায়নি বলে মনে হয়। নামের সঙ্গে নাম মিললে যে পালিয়ে বেড়াতে হয় এই প্রথম বাস্তবে উপভোগ করল আমার পরিবার। সবই বড় বোনের দয়ার বদৌলতে হয়েছে বলেই মনে করি। কারণ এর প্রয়োজন ছিল। নইলে হয়তো সারাজীবন ঐ সহজ সরলতা এবং সততার বেড়াজালে আবদ্ধ থেকে শুধু বিপদই জড়ো করে এগিয়ে যেতে হতো।
তবে যে শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা পেয়েছি তার সঙ্গে আমার সততা এবং সরলতা ও মানবিক গুণগুলিকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সামনের জীবনে এগিয়ে যাবো এই হউক আমার আগামীর প্রত্যয়। যেখানে আমার জীবনে কোন লাল কালির দাগ ছিল না বা হবেনা বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম সেখানে আমার বোনের বদৌলতে লাল কালির দাগ সাময়িক সময়ের জন্য পড়লো … তা হয়তো বোনের বদৌলতেই আবার মুছে যাবে। কিন্তু ভাবার বিষয় কেন আমি সম্পাদক ও প্রকাশক হতে গেলাম?
এখানে অনেক কারণ তবে প্রথম কারণটি হলো সততা, ন্যায়পরায়নতা, মানবিকতা এবং আমার সরকারের গুনগান জনসম্মুখ্যে প্রকাশ করার জন্য। নিজের রক্ত ও মেধা বিক্রির টাকায় ঐ সকল কাজ নিরলসভাবে করতে গিয়ে যে বিপদের সম্মুখিন হয়েছি তা কিন্তু নিজের কোন অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে নয় বরং অর্থনৈতিক ক্ষতির লক্ষ্যে। প্রতি সপ্তায় পকেটের টাকায় পত্রিকা প্রকাশ এবং ডাকযোগে বাহকের কাছে পৌঁছানো সবই ছিল আনন্দের কিন্তু এখন মনে হয় বিষাদের। গতানুগতিক কোন লাভ বা লোভ-লালসার জন্য এই প্রশান্তি পত্রিকাটির জন্ম হয়নি বরং “যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।” এই হল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য আর এই জন্য কোন বিজ্ঞাপন এবং গ্রাহক চাঁদা ব্যতিরেখে নিজের কষ্টার্জিত অর্থের বিনিয়োগে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের প্রচার এবং ন্যায়-পরায়নতার ভারসাম্য বজায় রেখে তৃণমূল পর্যায়ের সংবাদ মানষপটে তুলে আনা এমনকি ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উন্মোচন করাই এই প্রশান্তির কাজ।
সম্পাদক হিসেবে দায় এড়ানোর কোন ইচ্ছা আমার নেই। কারণ জন্মের পর থেকে মিথ্যা বলিনি এবং এর সঙ্গে আপসও করিনি। সত্যের সঙ্গে বসবাস করে জীবন সংগ্রামে জয়ী একজন অতি সাধারণ মানুষ হিসেবে নিজেকে মানব কল্যাণে নিয়োজিত রাখতে পেরেছি বলে আমার আত্মার উপলব্দি। তবে মাঝে মাঝে যে পত্রিকার ওয়েব পোর্টাল হ্যাকও হয় এবং তার দায়ও সম্পাদককেই নিতে হয় তাও শিখলাম এবং জানলাম। তবে সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাই আমার লক্ষ্য। আমি গর্ব করে বলতে পারি আমার কোন শত্রু নেই এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। আমার দ্বারা কারো কোন ক্ষতি হবে না। যদি কেউ উপলব্দি করে থাকেন আমার দ্বারা ক্ষতি হয়েছে তাহলে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমি বলতে পারি এখন থেকে সম্পাদক হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করবো এবং সাপের মত সতর্ক ও কবুতরের মত সরল হয়ে এগুবো।