বিবেকের তাড়নাই মানুষের কৃতকর্ম

তাজুল ইসলাম হানিফ॥ ইরাকের বাগদাদিয়া টেলিভিশনের সাংবাদিক মুনতাজের আল জাইদি ২০০৮ সালে ডিসেম্বর মাসে আমেরিকার সে সময়ের প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশকে প্রকাশ্যে জুতা মেরে বিচারিক আদালতে তিন বছরের জন্য দন্ডিত হয়েছিলেন। জাইদির মস্তিষ্ক বিকৃত ছিল না। তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক, অশিক্ষিত ব্যক্তি নন। জেনে-শুনে কেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষমতাধর ব্যক্তি বুশকে জুতা নিক্ষেপ করলেন? কোন চেতনা থেকে তিনি উদ্বুদ্ধ হলেন সেটাও গভীরভাবে চিন্তার দাবি রাখে। কারো বিবেকের যদি স্বাধীনতা থাকে বা স্বাধীনভাবে নিজ বিবেককে খাটাতে বা প্রয়োগ করতে পারেন, তখন নিজ জীবনের মায়ার চেয়ে বিবেকই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। বিবেকের তাড়নায় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের আহ্বানে ১৯৭১ সালে অস্ত্রহীন বাঙালি সামরিক সুসজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অনুরূপ, দেশাত্ববোধ এবং বিবেককে স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে পারার কারণেই একজন সাংবাদিক আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে জুতা মারতে সাহস দেখিয়েছিলেন। বিবেক অনেক শক্তিশালী বিষয় যা মানুষের মেরুদন্ডকে সোজা রাখে, সত্য কথা বলতে ও ন্যায়বিচার করতে তাড়না দেয়।
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই স্বাধীন, তার চিন্তা-চেতনার দিক থেকে। কিন্তু পরাধীন হয়ে যায় দুর্বল মানসিকতার কারণে এবং সে দুর্বলতা সৃষ্টি হয় লোভ ও স্বার্থপরতা থেকে। কোনো ব্যক্তি তার কর্তব্য পালনে যদি নিজেকে নিজে স্বাধীন মনে না করে কিংবা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ না হয়ে কাজ না করে তবে আইন করে দায়িত্ব পালনের স্বাধীনতা দেয়া একটি বাতুলতামাত্র। তাই দেখতে হবে- দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-বিচারক-ব্যক্তি নিজ দায়িত্ব পালনে নিজেকে স্বাধীন ও দায়িত্ববান মনে করে কি-না???

Leave a Reply

Your email address will not be published.